গত ১ জুলাই থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত ৩ হাজার ৮০৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় অর্থনৈতিক ক্ষতির সীমা অতিতের সকল মাসকে ছাড়িয়ে। এ মাসে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় ৬৫৩ কোটি ২৩ লাখ ৮১ হাজার ৫০ টাকায়। দুর্ঘটনাগুলোতে আহত হয়েছেন ৩ হাজার ৪৭২ জন এবং নিহত হয়েছেন ৮৭১ জন। নিহতদের মধ্যে ১৮ থেকে ৪০ বছর বয়সী ২৩১, ১৯০ জন শিক্ষার্থী, ২৫৫ জন নারী, শিশু ৪৫ এবং ১৫০ জন পঞ্চাষ বছরের বেশি। শিক্ষার্থী এবং তরুণদের অধিকাংশের মৃত্যু হয়েছে বাইক লেন না থাকার কারণে একই পথে চলাচলরত অন্য পরিবহনের ধাক্কায় সড়ক থেকে ছিটকে পড়ে। অন্যান্য বাহনগুলোতেও নির্ধারিত গতির চেয়েও অনেক বেশি গতিতে চলার কারণে প্রাইভেটকার, বাস ও ট্রাক দুর্ঘটনাগুলো ঘটেছে। এই সব বাহনের অধিকাংশ চালকের বয়সই ১৮ থেকে ৪০-এর মধ্যে। সেভ দ্য রোড-এর প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, দ্রুত গতিতে মোটরসাইকেল চালানোর পাশাপাশি নিয়ম না মানা এবং হেলমেট ব্যবহারে অনীহার কারণে ১ হাজার ১০৪ টি দুর্ঘটনায় আহত ৮৬৩ এবং নিহত হয়েছে ২০৩ জন। অসাবধানতা ও ঘুমন্ত চোখে-ক্লান্তিসহ দ্রুত চালানোর কারণে ৭৩৩টি ট্রাক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ৭১৪ এবং নিহত হয়েছে ১৬৫ জন। খানা খন্দক, অচল রাস্তা-ঘাট আর সড়কপথ নৈরাজ্যের কারণে ১ হাজার ৫ টি বাস দুর্ঘটনায় আহত হয়েছে ১ হাজার ১৩২ জন এবং নিহত হয়েছেন ৩২০ জন। পাড়া-মহল্লা-মহাসড়কে অসাবধানতার সাথে চলাচলের কারণে লড়ি-পিকআপ-নসিমন-করিমন-ব্যাটারি চালিত রিকশা-সাইকেল ও সিএনজি দুর্ঘটনা ঘটেছে ৯৬২টি আহত হয়েছে ৭৬৩ জন এবং ১৮০ জন নিহত হয়েছে। এছাড়াও ১ থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত নৌপথ দুর্ঘটনা ঘটেছে ১১৮টি। আহত ৩২১ জন, নিহত হয়েছে ১৯ জন। রেলপথ দুর্ঘটনা ঘটেছে ১৪২টি, ঈদুল আজহার ঈদযাত্রাসহ বিভিন্ন ঘটনায় আহত হয়েছে ২৩২ জন এবং নিহত হয়েছে ২৪ জন। আকাশপথে কোন দুর্ঘটনা না ঘটলেও বিমানবন্দরে দুটি বিমান মুখোমুখি সংঘর্ষ হওয়ায় আর্থিক ক্ষতি হয়েছে প্রায় ২০০ কোটি টাকার।
সেভ দ্য রোড-এর চেয়ারম্যান ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জেড এম কামরুল আনাম, প্রতিষ্ঠাতা মোমিন মেহেদী, মহাসচিব শান্তা ফারজানা, ভাইস চেয়ারম্যান বিকাশ রায়, জিয়াউর রহমান জিয়া, আইয়ুব রানাসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ৩১ জুলাই পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য নিয়ে জুলাই মাসের এই প্রতিবেদনে সবচেয়ে বেশি যে বিষয়টি আলোচ্য তা হলো- বাইক লেন না থাকায় সারাদেশে সড়ক দুর্ঘটনা যেমন বেড়েছে, বেড়েছে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও। সেই সাথে সরকারি ও স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের পরিবহনগুলোও পথদুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা বাড়িয়ে তুলছে। সেভ দ্য রোড নেতৃবৃন্দ পদ্মা সেতুসহ সারাদেশে সকল সড়ক-মহাসড়ক- সেতুতে বাইক লেন, গতিসীমা নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন, সিসিটি ক্যামেরা স্থাপন-পর্যবেক্ষণ এবং ৫ কিলোমিটার অন্তর পুলিশ বুথ স্থাপনের জন্য সুপারিশ করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন