বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে টালমাটাল বিশ্ব অর্থনীতি। যার প্রভাব পড়েছে দেশের অর্থনীতিতে। তবে গত কয়েকদিনে আমদানি ব্যয় হ্রাস, রেমিট্যান্স এবং রফতানি আয় বৃদ্ধির প্রভাবে ক্রমহ্রাসমান রিজার্ভের ইউটার্নের মধ্যে অর্থনীতিতে আরও একটি স্বস্তির খবর দিয়েছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো-বিবিএস। যদিও জুলাই মাসে গত জুন মাস থেকে রফতানি আয় কমেছে ২৩ শতাংশ। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে মূল্যস্ফীতির পারদ কিছুটা নিম্নমুখী হয়েছে, যেটি ক্রমেই বেড়ে চলেছিল। জুনে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে (মাসওয়ারি বা মাসভিত্তিক) দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ৯ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ উচ্চতায় ওঠার পরের মাসে কিছুটা কমেছে। জুনে মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ। জুলাইয়ে তা শূণ্য দশমিক ০৮ শতাংশ পয়েন্ট কমে ৭ দশমিক ৪৮ শতাংশে নেমে এসেছে। এর অর্থ হলো গত বছরের জুলাই মাসে দেশের মানুষ যে পণ্য বা সেবা ১০০ টাকায় পেয়েছিলেন, এ বছর জুলাই মাসে তা কিনতে ১০৭ টাকা ৪৮ পয়সা খরচ করতে হয়েছে। জুনে একই পরিমাণ পণ্য কিনতে তাদের লেগেছে ১০৭ টাকা ৫৬ পয়সা।
এর মধ্যে আবার খাদ্যের মূল্যস্ফীতি তুলনামূলক বেশি কমেছে। জুনে এই মূল্যস্ফীতি হয় ৮ দশমিক ৩৭ শতাংশ। সেটি জুলাইয়ে হয়েছে ৮ দশমিক ১৯ শতাংশ। তবে খাদ্য বহির্ভূত মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৩৩ শতাংশ থেকে কিছুটা বেড়ে ৬ দশমিক ৩৯ শতাংশ হয়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কায় ওলটপালট হয়ে যাওয়া অর্থনীতিতে আমদানি ব্যয় হ্রাস, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স এবং রফতানি আয় বাড়ার খবরের পাশাপাশি মূল্যস্ফীতির নিম্নমুখী হওয়ার খবর দেশের মানুষকে স্বস্তি দেবে বলে মনে করছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলসহ সব ধরনের পণ্যের দাম কমতে শুরু করেছে। আমাদের প্রবাসী ভাইবোনেরা বেশি বেশি রেমিট্যান্স পাঠাতে শুরু করেছেন। রফতানি আয় বাড়ছে। রিজার্ভও বেড়েছে। যেটা সবচেয়ে বেশি উদ্বেগের ছিল, সেই আমদানি কমতে শুরু করেছে। সব মিলিয়ে মূল্যস্ফীতিও কমে আসবে বলে মনে হচ্ছে। অর্থনীতিতেও স্বস্তি ফিরে আসবে। অবশ্য গতকাল অর্থমন্ত্রীও একই ইঙ্গিত দেন। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, আগামী দু-এক মাসের মধ্যেই দেশে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসবে। একই সঙ্গে শিগগিরই দেশের অর্থনীতি স্থিতিশীলতায় ফিরবে এবং কমে আসবে ডলারের দাম।
পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য ঘেঁটে দেখা যায়, নয় বছর আগে ২০১১-১২ অর্থবছর শেষে সার্বিক গড় মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৮ দশমিক ৬৯ শতাংশ। ওই বছরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ৭ দশমিক ৭৩ শতাংশ। আর খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি ছিল ১০ দশমিক ২১ শতাংশ। ২০১২-১৩ অর্থবছরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি কমে ৬ দশমিক ৭৮ শতাংশে নেমে আসে। ওই বছরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয় ৫ দশমিক ২২ শতাংশ। আর খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ৯ দশমিক ১৭ শতাংশ। এর পর থেকে মূল্যস্ফীতি নিম্নমুখীই ছিল।
৩০ জুন শেষ হওয়া বিদায়ী ২০২১-২২ অর্থবছরে টানা ছয় মাস বাড়ার পর জানুয়ারিতে কিছুটা কমেছিল এই সূচক। ফেব্রুয়ারি থেকে তা আবার চড়ছে। বিবিএসের তথ্যে দেখা যায়, দেড় বছর পর গত বছরের ডিসেম্বরে মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশের ‘ঘর’ অতিক্রম করে ৬ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশে ওঠে। তবে চলতি বছরের জানুয়ারিতে তা কমে ৫ দশমিক ৮৬ শতাংশে নেমে আসে। এর প্রতি মাসেই বাড়ছে। ২০২১ সালের জুনে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৫ দশমিক ৬৪ শতাংশ। এর পর থেকে গত বছরের নভেম্বর পর্যন্ত মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশের নিচেই অবস্থান করছিল। ১২ মাসের গড় হিসাবে জুন মাস শেষে (২০২১ সালের জুন থেকে ২০২২ সালের জুন) মূল্যস্ফীতির হার দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ১৫ শতাংশ, যা নির্ধারিত লক্ষ্যের চেয়ে বেশ খানিকটা ওপরে। গত ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে গড় মূল্যস্ফীতির হার ৫ দশমিক ৩ শতাংশে আটকে রাখার লক্ষ্য ধরেছিল সরকার। ২০২০-২১ অর্থবছরে এই লক্ষ্য ধরা ছিল ৫ দশমিক ৪ শতাংশ। কিন্তু অর্থবছর শেষ হয় ৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ মূল্যস্ফীতি নিয়ে। এ তথ্যে দেখা যাচ্ছে, গত দুই অর্থবছরে সরকার মূল্যস্ফীতি আটকে রাখার যে লক্ষ্য ধরেছিল, তাতে আসলে সফল হয়নি। ২০২২-২৩ অর্থবছরের নতুন বাজেট গড় মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৬ শতাংশে আটকে রাখার লক্ষ্য ধরেছে সরকার। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করার পর থেকেই বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেল, খাদ্যপণ্যসহ সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়ছে। তার প্রভাব পড়েছে ছোট-বড় সব দেশে। বিশ্বব্যাংক-আইএমএফ, এডিবিসহ বিভিন্ন আর্থিক সংস্থা পূর্বাভাস দিচ্ছে, বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতি আরও বাড়বে। তার প্রভাব বাংলাদেশেও পড়েছিল। মহামারীর ধাক্কা সামলে অর্থনীতির গতি বাড়ায় গতবছরের শেষ দিক থেকেই মূল্যস্ফীতি ছিল বাড়তির দিকে। চলতি বছরের শুরুতে ইউক্রেইন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর বিশ্বজুড়ে জ্বালানি ও খাদ্যমূল্য বাড়তে শুরু করে। তার প্রভাব পড়ে অন্যান্য পণ্যেও।
এদিকে পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য বলছে, গ্রামে মূল্যস্ফীতি এখনও ৮ শতাংশের বেশি। গত কয়েক মাসের মতো জুলাই মাসেও শহরের চেয়ে গ্রামে বেশি মূল্যস্ফীতি হয়েছে। জুন মাসে গ্রামাঞ্চলে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ৮ দশমিক শূন্য নয় শতাংশ। জুলাইয়ে তা কিছুটা কমে ৮ দশমিক শূন্য দুই শতাংমে নেমেছে। অর্থাৎ শহরের চেয়ে গ্রাম এলাকায় পণ্যমূল্য ও অন্যান্য সেবার দাম বেড়েছে বেশি। জুলাই মাসে শহরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৬ দশমিক ৫১ শতাংশ; জুন মাসে হয়েছিল ৬ দশমিক ৬২ শতাংশ। বিবিএসের তথ্য বলছে, শহরের চেয়ে গ্রামে খাবারের দাম বেশি। জুলাই মাসে গ্রামে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৮ দশমিক ৭৯ শতাংশ। জুনে হয়েছিল ৮ দশমিক ৯৩ শতাংশ। জুলাইয়ে গ্রামে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি খানিকটা বেড়েছে। জুনে এই হার ছিল ৬ দশমিক ৫১ শতাংশ; জুলাইয়ে হয়েছে ৬ দশমিক ৫৮ শতাংশ।
জুলাই মাসে শহরাঞ্চলে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৬ দশমিক ৫১ শতাংশ। জুনে এই হার ছিল ৬ দশমিক ৬২ শতাংশ। জুলাই মাসে শহরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৬ দশমিক ৮৪ শতাংশ। জুনে হয়েছিল ৭ দশমিক ১১ শতাংশ। আর খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৬ দশমিক শূন্য আট শতাংশ থেকে সামান্য বেড়ে ৬ দশমিক ১৫ শতাংশ হয়েছে।
তবে আশার কথাও আছে। আগামী মাসগুলোতেও মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বমূখী ধারা কমবে। মূল্যস্ফীতি নিম্মমূখী হওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। গতকাল তার দফতরে এক সংবাদ সম্মেলনে মূল্যস্ফীতির হালনাগাদ তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, আমার মনে হয় অগাস্ট মাসে মূল্যস্ফীতির এই হার আরও একটু কমবে। আমি গণক নই, তবে আমার ধারণা কমার একটা লক্ষণ আমি লক্ষ্য করছি। জুন মাসের তুলনায় জুলাই মাসে মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমে আসাকে ‘ইতিবাচক’ হিসেবে বর্ণনা করে পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি যে শ্রীলঙ্কার দিকে যাচ্ছে না, এটা তার ‘প্রমাণ’।
এদিকে অর্থনৈতিক পরিস্থিতির একটা গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট হচ্ছে মূল্যস্ফীতি। পুরো অর্থনীতিটাকে এটা রিফ্লেক্ট করে এটা অর্থনীতির একটা প্রতিচ্ছবি। এই মূল্যস্ফীতি পুরো অর্থনীতির ওপর প্রভাব ফেলে। আর কম আয়ের মানুষের ওপর এটা আঘাত করে বেশি। জনগণের সরকারকে এটা চিন্তা করতে হবে। নিম্ন আয়ের মানুষের লাইফ ক্ষতিগ্রস্ত হয়- এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। জুলাই মাসে মূল্যস্ফীতি যতটা কমেছে, সেই হার ‘অনেক কম’ বলে মনে হলেও বর্তমান সময়ের প্রেক্ষিতে এটাও ‘খুব গুরুত্বপূর্ণ’। ‘শুধু যে কমেছে তা নয়, মাথার ছোবলটা একটু নুয়েছে। এটা আরও নুয়ে আসবে বলেও উল্লেখ করেন এম এ মান্নান। এই ধারণার পক্ষে যুক্তি দিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, যুদ্ধের মধ্যেও ইউক্রেইন থেকে খাদ্য নিয়ে জাহাজ ছাড়া শুরু হয়েছে। অলরেডি জাহাজ ভেসে বেড়াচ্ছে, আমরাও পাব। ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক বাজারে খাদ্য পণ্যের দাম কিছুটা ফল করেছে। এই বেনিফিট এখন আরও আসবে।
জুলাইয়ে মূল্যস্ফীতি কেনো কমেছে- এ প্রশ্নের উত্তরে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, মূল কারণ হচ্ছে খাদ্য দ্রব্যের দাম কমে আসা। সয়াবিন তেল আমাদের খাদ্যের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই পণ্যটির দাম কিছুটা কমে আসায় এর প্রভাব পড়েছে। চালের দাম কমতে শুরু করা আরেকটা কারণ। দেশে হঠাৎ চালের দাম বাড়তে শুরু করলে সরকার গত মাসে চাল আমদানির সুযোগ করে দেয়। এরপর থেকে চালের দামও কমতে শুরু করেছে। প্রধানত এই দুই পণ্যের দাম কমার কারণেই খাদ্য মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমতে শুরু করেছে। পরিসংখ্যান ব্যুরো মূল্যস্ফীতির যে তথ্য দেয়, বাস্তবে এই হার বেশি- বেসরকারি কিছু গবেষণা সংস্থার এমন অভিযোগের বিষয়ে এম এ মান্নান বলেন, বিবিএস এর বাস্কেটে ৪২২টি পণ্যের মূল্য সংগ্রহ করি। এর মধ্যে দেশের সকল মানুষের ব্যবহার্য্য জিনিসপত্র থাকে। কিন্তু ওই সংস্থাগুলো শুধুমাত্র কম আয়ের মানুষের ব্যবহারের, বিশেষ করে খাদ্য পণ্যের দাম বেশি ছিল বলে তারা বেশি মূল্যস্ফীতি হিসাব পেয়েছিল। কিন্তু সার্বিক মূল্যস্ফীতির হিসাবতো তাদের মত করে শুধুমাত্র খাদ্য নিয়ে তৈরি করতে পারি না।
ডলার সঙ্কটের কারণে আমদানি ব্যয়ের লাগাম টেনে ধরতে গত এপ্রিল থেকে একটার পর একটা পদক্ষেপ নিচ্ছিল সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক। তার ইতিবাচক ফল এখন পাওয়া যাচ্ছে। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে পণ্য আমদানির ঋণপত্র খোলার (এলসি) হার কমেছে ৩১ দশমিক ৩২ শতাংশ। এই মাসে ৫৪৭ কোটি (৫ দশমিক ৪৭ বিলিয়ন) ডলারের এলসি খুলেছেন ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তারা। গত ২০২১-২২ অর্থবছরের শেষ মাস জুনে এলসি খোলা হয়েছিল ৭৯৬ কোটি (৭ দশমিক ৯৬ বিলিয়ন) ডলারের। অন্যদিকে এই মাসে বিদেশি মুদ্রার অন্যতম প্রধান উৎস রফতানি আয় বেড়েছে প্রায় ১৫ শতাংশ। যদিও এ তথ্য গত বছরের জুলাইয়ের। যখন দেশ তথা বিশ্ব করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে টালমাটাল ছিল। বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন ছিল। তাই তখনকার হিসেব অনুযায়ী রফতানি আয় বাড়ার হিসেব নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে। যদিও বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে গত জুন মাস থেকে চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে রফতানি আয় কমেছে ৯৩ কোটি ডলার। জুনে রফতানি আয় হয়েছিল ৪৯১ কোটি ডলার। জুলাইয়ে হয়েছে ৩৯৮ কোটি ৪৮ লাখ ডলার। এক মাসের ব্যবধানে রফতানি আয় কমেছে সাড়ে ২৩ শতাংশ। রফতানি আয় কমায় দেশের বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবস্থাপনায় আগামী দিনে চাপ আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করেছেন অর্থনীতিবিদরা। তারা বলেছেন, দেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের প্রধান খাত রফতানি। এটি কমে গেলে ডলারের প্রবাহও কমে যাবে। তখন চাপও বাড়বে। এতে মুদ্রাবাজারে আরও অস্থিরতা সৃষ্টি হবে। যদিও বাংলাদেশ ব্যাংক গত মে মাসেই পূর্ভাবাস দিয়েছিল রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে যে মন্দা দেখা দিয়েছে, এর প্রভাবে রফতানি আয় কমে যাবে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার দায়িত্ব নিয়েই যেসব রফতানি বিল এখনো বকেয়া রয়েছে সেগুলো দেশে আনার জন্য ব্যাংকগুলোর ওপর চাপ সৃষ্টি করেছেন। এখন প্রায় ১ হাজার কোটি ডলারের রফানি আয় বিদেশে আটকে রয়েছে। যেগুলোর দেশে আনার সময় পেরিয়ে গেলেও আসছে না।
এছাড়া প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স বেড়েছে ১২ শতাংশের বেশি। আর এর ফলে বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভ বাড়তে শুরু করেছে। গতকাল দিন শেষে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৩৯ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলার। জুলাই মাসের ৫ দশমিক ৪৭ বিলিয়ন ডলারের আমদানি খরচ হিসাবে এই রিজার্ভ দিয়ে সাত মাসের বেশি সময়ের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব। ১২ জুলাই এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) ১ দশমিক ৯৬ বিলিয়ন ডলার আমদানি বিল পরিশোধের পর রিজার্ভ ৪০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে আসে। চাহিদা মেটাতে রিজার্ভ থেকে অব্যাহতভাবে ডলার বিক্রির ফলে আরও কমে যায় অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর এই সূচক। কয়েক দিন ধরে টানা কমে ২৬ জুলাই তা ৩৯ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে যায়। ২৭ জুলাই তা আরও কমে ৩৯ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে। এরপর থেকেই বাড়তে শুরু করেছে অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর এই সূচক।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন