শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

গ্রামীণ সেতু সংস্কার ও নির্মাণ করছে এলজিইডি

প্রোগ্রাম ফর সাপোর্টিং রুর‌্যাল ব্রিজেজ প্রকল্পের ৭৫ শতাংশের বেশি অগ্রগতি

পঞ্চায়েত হাবিব | প্রকাশের সময় : ৫ আগস্ট, ২০২২, ১২:০০ এএম

দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রতি সাড়ে চার কিলোমিটার রাস্তায় একটি করে সেতু প্রয়োজন। সেই তুলনায় এখনো দেশের গ্রামীণ সেতু নির্মাণ ও সংস্কার হয়নি। দেশের ৬১টি জেলার ৪৬৬টি উপজেলায় ১০০ মিটার দৈর্ঘ্যের নিচে প্রায় ৫ হাজার সেতু নির্মাণ, পূনঃনির্মাণ, ছোটবড় সংস্কার ও পূনঃস্থাপনের কাজ দ্রæত বাস্তবায়ন চলছে। এর মধ্যে সংস্কার ৮৫ হাজার মিটার। যার মধ্যে ছোট সংস্কার (মাইনর মেইনটেনেন্স) ৬০ হাজার মিটার এবং বড় সংস্কার (মেজর মেইনটেনেন্স) ২৫ হাজার মিটার। পুনর্বাসন ২৪ হাজার মিটার। প্রশস্ত করা হচ্ছে ৫ হাজার মিটার। প্রতিস্থাপন ১০ হাজার মিটার এবং নতুন করে নির্মাণ ১০ হাজার মিটার। এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) আওতায় প্রোগ্রাম ফর সার্পোর্টিং রুরাল ব্রিজেস’র। বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে যৌথভাবে এস প্রকল্পের হচ্ছে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) প্রধান প্রকৌশলী শেখ মোহাম্মদ মহসিন ইনকিলাবকে বলেন,
দেশে ছোট সংস্কার ৬০ হাজার মিটার এবং বড় সংস্কার ২৫ হাজার মিটার। পুনর্বাসন ২৪ হাজার মিটার। প্রশস্ত করা হচ্ছে ৫ হাজার মিটার। প্রতিস্থাপন ১০ হাজার মিটার এবং নতুন করে নির্মাণ ১০ হাজার মিটার। আমরা আগামীতে আরো নতুন নতুন বাস্তা- ব্রিজ ও সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছি। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের তালিকা ভিত্তিতে করা হবে।
এলজিইডির অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ও প্রোগ্রাম ফর সাপোর্টিং রুর‌্যাল ব্রিজেজ Ñএর প্রকল্প পরিচালক মো. ওয়াহিদুর রহমান ইনকিলাবকে বলেন, দেশের ৬১টি জেলার ৪৬৬টি উপজেলায় ১০০ মিটার দৈর্ঘ্যের নিচে প্রায় ৫ হাজার সেতু নির্মাণ, পূনঃনির্মাণ, ছোটবড় সংস্কার ও পূনঃস্থাপনের কাজ দ্রæত বাস্তবায়ন চলছে। জেলার নবীনগর উপজেলার নবীনগর পূর্বা-নবীপুর বাজার রোডের ৩৭ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতুটি পূনঃনির্মাণ করা হচ্ছে। সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ হবার কথা রয়েছে এ বছরের নভেম্বর মাসে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার কুটিবাজার-কসবা পুরান বাজার রোড। ২৭ মিটার দৈর্ঘ্যের ছোট্ট একটি সেতু এই রাস্তার উপর। দীর্ঘদিন ব্যবহারে সেতুটি তার সক্ষমতা হারিয়েছে। তাই নতুন করে তৈরি করা হচ্ছে সেতুটি। এ বছরের জানুয়ারিতে শুরু হওয়া কাজ এ পর্যন্ত ৬৫ শতাংশ এগিয়েছে। পুরোটা শেষ হবার কথা আগামী বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালের জুন মাসের মধ্যে। সেতুটি ছোট হলেও গ্রামের মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় এর গুরুত্ব অপরিসীম।

প্রকল্পের আওতাধীন প্রায় ৫ হাজার সেতুর মধ্যে ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত ৪১৮টি সেতুর কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ২০২২ সালের জুন মাসের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ৭৫১টি প্যাকেজের আওতায় এখন পর্যন্ত পুরোপুরি শেষ হয়েছে ৮১১টি সেতুর কাজ। ২১১টি সেতুর কাজ ৭৫ শতাংশের বেশি এগিয়েছে, অর্ধেকের বেশি কাজ হয়েছে ১৭৯টির। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে গ্রামীণ এই সেতু/কালভার্ট কর্মসূচির সফলতার সুবিধাভোগ করবে দেশের প্রায় ৯৯ শতাংশ জনগণ। এলজিইডির সমীক্ষায় দেখা গেছে, বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রতি সাড়ে চার কিলোমিটার রাস্তায় একটি করে সেতু প্রয়োজন।

গ্রামীণ যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে এই কর্মসূচি শুরু হয়েছে ২০১৮ সালে। প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে এই উন্নয়ন কাজ শেষ হবার কথা রয়েছে ২০২৩ সাল নাগাদ। ২০২১ সালের ২৫ শে জানুয়ারি এই কর্মসূচির আওতায় মনিটরিং অ্যান্ড ইভালুয়েশন সার্ভিস শুরু করে এলজিইডি, চুক্তিভিত্তিক এই কাজ এগিয়ে নিচ্ছে ডেভেলপমেন্ট প্রোজেক্ট ডিজাইন অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেড Ñডিপিডিএস প্রতিষ্ঠানটি। এর আওতায় প্রকল্পের কাজ পূর্ব নির্ধারিত পরিকল্পনা অনুযায়ী এগিয়ে চলেছে কি-না তা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

গ্রামের মানুষ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে নির্মাণ কাজ শেষ হবার। স্থানীয় কৃষক নাজির উদ্দিন (৪০) জানান, এই সেতুটি হলে তাদের কৃষিপণ্য পরিবহন আরও সহজ হবে। এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হবে। এই কসবা উপজেলাতেই চলছে ৪৪টি সেতুর কাজ। শিক্ষার্থী নুরুন্নাহার বলেন, দেড় বছর আগে কাজ শুরুর কথা লেখা আছে এখানকার সাইনবোর্ডে কিন্তু এই দেড় বছরে কতটুকু কাজ হয়েছে সেটা বুঝতে পারছি না। এমন হতাশার কারণ, সেতুটি এই এলাকার মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই দ্রæত এর পূনঃনির্মাণ কাজ শেষ হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন তারা।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন