শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

সুরমা নদী খননে ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের উদ্যোগ

একনেকে অনুমোদনের অপেক্ষায় : প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৬৭৫ কোটি টাকা : ফিরিয়ে আনা হবে নাব্যতা

ফয়সাল আমীন, সিলেট থেকে | প্রকাশের সময় : ৬ আগস্ট, ২০২২, ১২:০৩ এএম

নড়েচড়ে উঠেছে সুরমা নদী খনন উদ্যোগ। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, দীর্ঘ দাবি, প্রয়োজনীয়তা স্বত্ত্বেও খনন উদ্যোগ ছিল লালফিতায় বন্দি। সম্প্রতি ভয়াবহ বন্যায় সুরমার গর্জনে তলিয়ে গেছে গোটা সিলেট। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুরমা খননের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন এবং আশ^াস দেন ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের। সম্প্রতি বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন উদ্যোগ নেন সিলেটে জকিগঞ্জে সুরমা-কুশিয়ারার উৎস থেকে আশুগঞ্জের মেঘনা নদী পর্যন্ত ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের। ৫ বছর মেয়াদি এ প্রকল্পে এক সঙ্গে খনন করা হবে ১৮টি নদী। ৪ দশমিক ৩ মিটার গভীর ও ৯০ মিটার প্রস্থ করে খনন করা হবে সুরমা নদী। এতে ব্যয় হবে ১ হাজার ৬৭৫ কোটি টাকা। প্রকল্পটি বর্তমানে একনেকে অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। নির্বাহী প্রকৌশলী (পুর) আ স ম মাশরেকুল আরেফিন ইনকিলাবকে এ তথ্য জানান।
প্রকল্প সংশ্লিষ্ট তথ্য মতে, সুরমা, কুশিয়ারা, কালনী, যাদুকাটা, রক্তি, বৌলাই, মনু, পুরাংগী, জুমনাল খাল, খোয়াই, সুতাং, বেলেশ্বরি খাল, তিতাস, পাগলা, বুড়ি, মাগড়া, কংশ ও আপার মেঘনা নদী খননের লক্ষ্যে ২০২০ সালে বিআইডব্লিউটি’র বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলীরা পরিদর্শন করে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা প্রস্তুুত করেন। সীমান্তবর্তী জকিগঞ্জের সুরমা নদী ও কুশিয়ারা নদীর উৎস মুখ থেকে খনন শুরু করে খনন চলবে আশুগঞ্জের আপার মেঘনা নদী পর্যন্ত। বর্তমানে আশুগঞ্জে প্রতি বছর বাংলাদেশ-ভারতের প্রটোকল অনুযায়ী ৮ ফুট গভীর ও ৩০ মিটার চওড়া করে খনন কাজ করা হয়। ভারত সরকারের খরচে আশুগঞ্জে বর্তমানে খনন কাজ করা হচ্ছে। বিআইডব্লিউটিএ’র প্রকল্প অনুমোদন হলে ৩০ মিটারের স্থলে নদীর প্রস্থ ৭০ মিটার চওড়া করা হবে। কেবল নদী খননই নয় নদীতে নির্মাণ করা হবে মোট ৫৬ টি ঘাট। ৮টি কার্গো ঘাট, ২৮টি লঞ্চ ঘাট ও ২০টি খেয়া ঘাট নির্মাণ করবে বিআইডব্লিউটিএ। এছাড়াও নির্মাণ করা হবে ১৫টি সুইচ গেইট।
সূত্র জানায়, নদী খননের ফলে হাওরাঞ্চলের নদ-নদীর ফিরে আসবে নাব্যতা। উন্নতি হবে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার। উজান থেকে নেমে আসা ভারতীয় ঢলের পানি খুব অল্প সময়ের মধ্যেই নেমে যাবে ভাটিতে। হাওরাঞ্চলের ইরি বোরো ফসলকে আগাম বন্যা থেকে রক্ষার পাশাপাশি বন্যার পানিও আটকে থাকবে না বেশি দিন। বৃদ্ধি পাবে পর্যটন ও দর্শনার্থীদের সংখ্যা। মাছের প্রজনন বৃদ্ধি পাবে অনেকগুণ বেশি। নদীতে শুকনো মৌসুমে থাকবে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি। এতে সেচ সুবিধা আরও সহজ হয়ে উঠবে। সেই সাথে নৌপথে কম খরচে মালামাল পরিবহনে সুবিধা ঘটবে।
নদী খননে মাটির ব্যবহারের বিষয়ে সম্প্রতি একটি পরিপত্র জারি করেছে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়। নদী খনন কাজের সময় জেলা প্রশাসককে প্রধান করে একটি কমিটি থাকবে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর, পরিবেশ অধিদফতর, মৎস্য অধিদফতরসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা কমিটিতে থাকবেন। এই কমিটি কাজ তদারকির পাশাপাশি খননের বালুর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন। এদিকে, বিআইডব্লিউটিএর নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, সাধারণত দেশের অন্যান্য নদীগুলো বিআইডব্লিউটিএ যেভাবে খনন করছে; একইভাবে খনন করা হবে এই ১৮টি নদী। খনন কাজের মানের ক্ষেত্রে বিআইডব্লিউটিএ’র কোনো ছাড় নেই। সার্বক্ষনিক তদারকি করবেন বিশেষজ্ঞরা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন