নাটোরের লালপুর উপজেলার দেড় লক্ষাধিক গরু নিয়ে খামারিরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। হঠাৎ করেই কিছু কিছু এলাকায় গরুর মধ্যে লাম্পি স্কিন ডিজিজ (এলএসডি) ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। তবে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. চন্দন কুমার সরকার জানান, এলএসডি রোগে আক্রান্ত হলেও এ পর্যন্ত কোন গরু মারা যায়নি।
লালপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যলয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ১৪১টি খামার ও কৃষক পর্যায়ে মোট ১ লাখ ৫৩ হাজার গরু রয়েছে। এর মধ্যে উপজেলার বিলমাড়িয়া, ওয়ালিয়া ও আড়বাব ইউনিয়ানে ভাইরাসজনিত রোগ লাম্পি স্কিন ডিজিজের গরু আক্রান্ত হয়েছে। এই রোগের নির্দিষ্ট কোন ভ্যাকসিন নেই। রোগ নিরাময়ে আক্রান্ত গরুর মধ্যে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের পক্ষ থেকে গোট পক্স নামের ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হচ্ছে।
ওয়ালিয়া ইউনিয়নের আজিবর নামে এক গরু পালনকারী জানান, তার ৭ মাসের একটি বাছুর ল্যাম্পি স্কিন ডিজিজ নামের রোগে আক্রান্ত হয়েছে। স্থানীয় পশু চিকিৎসেকর পরামর্শে বাজার থেকে ইনজেকশন, এন্টিবায়োটিক ও প্যারাসিটামল ওষুধ খাওয়াচ্ছেন। পাশাপাশি কাঁচা হলুদের রস ও খাবার সোডা গরুর শরীরে ব্যবহার করছেন।
এদিকে ল্যাম্পি স্কিন ডিজিজে গরু আক্রান্ত হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন মোস্তাফিজুর রহমান, কাচুসহ একাধিক গবাদি পশু পালনকারীরা। তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জরুরি ভিত্তিতে ভ্যাকসিন সরবরাহের জন্য দাবি জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. চন্দন কুমার সরকার ইনকিলাবকে বলেন, লাম্পি স্কিন ডিজিজ একটি ভাইরাসজনিত রোগ। আক্রান্ত গরুর প্রথমে জ্বর হয় এবং খাওয়ার রুচি কমে যায়। শরীরের বিভিন্ন জায়গায় চামড়ায় গুটি গুটি আকৃতি ধারণ করে এবং পশম উঠে ক্ষতের সৃষ্টি হয়। এ রোগটি মূলত মশা মাছির মাধ্যমে আক্রান্ত গরু থেকে সুস্থ গরুর মধ্যে ছড়ায়। এতে আতঙ্ক হওয়ার কিছু নেই। একটু সচেতন হলেই এই রোগ নিরাময় সম্ভব।
তিনি জানান, লাম্পি স্কিন ডিজিজে মূলত সঙ্কর জাতের গরু বেশি আক্রান্ত হয়। উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের পক্ষ থেকে খামারি ও কৃষক পর্যায়ে সচেতন করতে মাঠ পর্যায়ে কাজ করা অব্যাহত রয়েছে। খামার ও খামারের আশপাশ পরিস্কার পরিচ্ছন্ন ও মশামাছিমুক্ত রাখার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আতঙ্কিত না হয়ে চিকিৎসা করলে ৭ থেকে ২০ দিনের মধ্যে আক্রান্ত গরু সুস্থ হয়ে যায় বলে জানিয়েছেন এই কর্মকর্তা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন