ঢাকার বুড়িগঙ্গা নদীর পাড়ে কেরানীগঞ্জের মিরেরবাগ-কালিগঞ্জের অবৈধ ডকইয়ার্ড সড়িয়ে এ গুলোকে ধলেশ্বরীর এবং চরকিশোরগঞ্জে স্থানান্তরের জন্য ডকইয়ার্ড মালিকদের প্লট দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহণ কর্তৃপক্ষ ( বিআইডব্লিউটিএ) থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। সম্ভাবত্যতা যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট অব ওয়াটার মডেলিং (আইডাব্লিউএম) জানিয়েছে আমাদের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আমরা আমাদের মতামত দিয়েছি। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করবে বিআইডব্লিউটি।
গত ২০১৮ সালে নদীরক্ষা কমিশনের পক্ষ থেকে কেতরানীগঞ্জের মিরেরবাগ-কালিগঞ্জের ডকইয়ার্ড মালিকদের নোটিশ দিয়ে তাদের ডকইয়ার্ডের মালিকানা সংক্রান্ত জমির কাগজপত্র চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু ৭টি ডকইয়ার্ড জমির মালিকানার দলিলাদি জমা দিলেও এত নানা অসঙ্গতি রয়েছে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে নৌ পরিবহণ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ইনকিলাবকে বলেন, র্দীঘ অনেক বছর ধরে অবৈধ ডকইয়ার্ড ও শিপইয়ার্ড গুলো স্থানান্তরের চেষ্টা চলছিল। এরই ধারা- বাহিকতায় এগুলো ধলেশ্বরীর (বক্তাবলী) এবং গজারিয়ার চরকিশোরগঞ্জে স্থানান্তরের কাজ চলছে। ইতোমধ্যে এ দুটি জায়গার সম্ভাবত্যতা যাচাই করা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এগুলো স্থানান্তরের কার্যক্রম শুরু হবে। তিনি বলেন, নদীকে তার জায়গা ছেড়ে দেয়া এবং ডকইয়ার্ড ও শিপইয়ার্ড ভাটির দিকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাও রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহণ কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক ইনকিলাবকে বলেন, বুড়িগঙ্গা নদী দখল করে অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে বেশ কিছু ডকইয়ার্ড। এসব ডকইয়ার্ডের কোনো সরকারি অনুমোদন নেই। এগুলোর কারণে বুড়িগঙ্গা নদীটি চিকন হয়ে গেছে। সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল থেকে যাত্রী নিয়ে আসা ও যাওয়াতে প্রায়শই নৌ দুর্ঘটনা ঘটছে। এছাড়াও বুড়িগঙ্গা নদীকে তার আগের অবস্থা ফিরিয়ে দিতেই আমাদের এ উদ্যোগ। আমাদের প্রাথমিক কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। এখন আমরা মালিকদের সঙ্গে বসবো। পাশাপাশি এ বছরের মধ্যেই একটি প্রকল্প নেওয়া হবে।
ফারহান ডকইয়ার্ডের স্বত্তাধিকারী গোলাম কিবরিয়া টিপু ইনকিলাবকে বলেন, সরকার যা বলবে আমরা তা মানতে বাধ্য। আমরাও এই জমি ছেড়ে দিতে চাই। তবে এখানে আমাদের অনেক বিনিয়োগ রয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে শুধু জমি দিলেই হবে না। আমাদের আর্থিক বিষয়টিও দেখতে হবে।
বিআইডব্লিউটিএর অতিরিক্ত পরিচালক এবং সংশ্লিষ্ট প্রকল্প পরিচালক একেএম আরিফ উদ্দিন ইনকিলাবকে বলেন, বুড়িগঙ্গা নদী দখল করে অবৈধভাবে গড়ে উঠা ৩২টি ডকইয়ার্ড হুমকির মধ্যে ফেলেছে দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম নৌ বন্দর ঢাকা সদরঘাটকে। ফলে এ জায়গার নৌ চ্যনেলটি চিকন হয়ে গেছে। ডকইয়ার্ডগুলো বুড়িগঙ্গা নদীর প্রায় অর্ধেক জায়গাই দখল করে রেখেছে। নৌ যানগুলো যাত্রি নিয়ে ঘাট থেকে বের হওয়ার সময়ে প্রায়শই দুর্ঘটনা ঘটছে। এসময়ে একটি নৌ যান বের হলে পুরো চ্যানেলই বন্ধ হয়ে যায়। প্রাথমিকভাবে ছোট ডকইয়ার্ড গুলো ধলেশ্বরী নদীর বক্তাবলী এবং শিপ ইয়ার্ডগুলো গজারিয়ার চর কিশোরগঞ্জে স্থানান্তরের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন