গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে রয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা। গতকাল রোববার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এদিকে পরিবারের পক্ষ থেকে তার সুস্থতার জন্য সবার কাছে দোয়া চায়া হয়েছে।
জানা গেছে, গত দুই দিন ধরে তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে। এর আগে তার ইআরসিপি করা হয়েছিল, তারপর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে আইসিইউতে নেয়া হয়। পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয়েছে।
ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, শারীরিক অসুস্থতা ধরা পড়লে গত মাসে ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয় সেব্রিনা ফ্লোরাকে। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় ১০ থেকে ১২ দিন আগে তাকে সিঙ্গাপুরে নেয়া হয়। সেখানেই তার অস্ত্রোপচার হয়। সেব্রিনা ফ্লোরার অসুস্থতার ধরন সম্পর্কে ডা. খুরশীদ বলেন, অগ্নাশয় এবং পিত্তনালী দুটো একসঙ্গে যুক্ত হয়ে খাদ্যনালীর ভেতরে ঢোকে। এই পিত্তরস এবং অগ্নাশয়ের রস একসঙ্গে খাবারের সঙ্গে মিশে হজমে সাহায্য করে। অগ্নাশয় এবং পিত্তনালীর রস যে পথে আসে তা সরু হয়ে গিয়েছিল। ফলে পিত্ত জমা হয়ে থাকছিল, জন্ডিস হচ্ছিল। আর পিত্তরসে অনেক ব্যাকটেরিয়া থাকে, ফলে কোলানজাইটিস হচ্ছিল। এজন্য ইআরসিপি (ওই মুখটা কেটে বড় করে দেয়া) করা হয়েছিল। যেন পিত্তরস এবং অগ্নাশয়ের রস বাধাহীনভাবে আসতে পারে। তবে অস্ত্রোপচারের পর সেব্রিনা ফ্লোরার পিত্তনালী ও অগ্নাশয়ে প্রদাহ শুরু হলে তাকে ওই হাসপাতালের এইচডিইউতে নেয়া হয়। সেখানে ভর্তি থাকা অবস্থায় তার কিডনি বিকল হয়। তখন তাকে ডায়ালাইসিস করতে নিয়ে যাওয়া হয়। এটা করতে গেলে তার হার্টের সমস্যা বেড়ে যায়। হার্ট পাম্প করতে না পারায় তার ফুসফুসে পানি জমে যায়। তাকে এখন ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস করা ডা. সেব্রিনা ফ্লোরা বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিল, নিপসমে কাজ করেছেন। কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি ডিগ্রি নেন তিনি। ২০২০ সালের ১৩ অগাস্ট থেকে তিনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালকের পদে রয়েছেন। মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা রোগতত্ত্ববিদ এবং জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ। তিনি রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক ছিলেন। দেশে বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের পাদুর্ভাবের সময় প্রথম দিকে তিনি প্রতিদিন সংবাদ সম্মেলন করে করোনা আক্রান্ত ও মৃত্যের সংখ্যা প্রকাশ করতেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন