ইসলামী অনুষ্ঠানের উপস্থাপক মাওলানা নুরুল ইসলাম ফারুকী খুনের ৮ বছরেও মামলার চার্জশিট দিতে পারেনি পুলিশ। তবে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা দাবি করছেন, এমন একজন ব্যক্তি ফারুকীর হত্যার পরিকল্পনা করে, যার সঙ্গে পীর ও মাজার বিরোধী একাধিক গ্রুপের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে।
২০১৪ সালের ২৭ আগষ্ট রাতে রাজধানীর ১৭৪, পূর্ব রাজাবাজারের বাসায় মাওলানা নুরুল ইসলাম ফারুকীকে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় তার ছেলে ফয়সাল ফারুকী বাদী হয়ে শেরেবাংলা নগর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। যা প্রথমে তদন্ত করে ডিবি। এর পর মামলাটি ন্যস্ত হয় সিআইডিতে । এই মামলার দশম তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে মামলাটি তদন্ত করছেন, সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জিসানুল হক। তিনি জানান, যারা হত্যাকান্ডে জড়িত তাদের শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের বিষয়ে তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়েছে। তারা কারাগারে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জেএমবির দীক্ষা নেয়। কারাগার থেকে বের হয়ে এই হত্যাকান্ড ঘটায়। পরে তারা ভিন্ন মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাগারে যায়। তখন পর্যন্ত ফারুকীর হত্যার সঙ্গে জড়িত তা জানতে পারেনি পুলিশ। কিন্তু পরে ওই মামলায় জামিনে ছাড়া পেয়েই আত্মগোপন করে। তাদের বিরুদ্ধে শিগগির চার্জশিট দেওয়া হবে।
২০১৪ সালের ২৭ আগষ্ট সন্ধ্যায় দুই যুবক ১৭৪, পূর্ব রাজাবাজারে ফারুকীর বাসায় দেখা করেন। যাদের পরনে ছিল জিন্স প্যান্ট ও টি-শার্ট। তারা জানায়, তাদের ভাইসহ আত্মীয়রা হজ্জে যাবেন। ফারুকী হজ্জে গমনেচ্ছুদের নিয়ে আসার কথা বলেন। জবাবে যুবকরা জানায়, তারা যানজটে আটকে পড়েছে। কিছু সময়ের মধ্যেই চলে আসবে। ১৫ মিনিট পর ৬/৭ জন যুবক সেখানে আসে। ১৮ থেকে ৩৫ বছরের যুবকদের একজন ফারুকীর শ্যালকের গলায় চাপাতি ও অন্যজন তার মাথায় পিস্তল ঠেকায়। এরপর বিছানার চাদর ছিঁড়ে শ্যালক ও ফারুকীর হাত-পা বাঁধেন। এ সময় ফারুকীর ৩ ভক্ত ভিতরে ঢুকলে তাদেরও হাত-পা বেঁধে ফেলা হয়। এর মধ্যে তারা একটি বেডরুমে থাকা ফারুকীর শাশুড়ি জয়গুন নেসা ও গৃহকর্মী শরীফাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে। সেখানে ছিলেন, ফারুকীর দ্বিতীয় স্ত্রী লুবনা কুলসুম ও ফারুকীর দুই নারী ভক্ত। তাদের সবাইকে একই কক্ষে হাত-পা বেঁধে জিম্মি করা হয়। এরপর ফারুকীকে ডাইনিং রুমে নিয়ে যায় তারা। যুবকরা চলে যাওয়ার পর লুবনা নিজের হাতের বাঁধন খুলতে সক্ষম হন। পরে তিনি অন্য নারীদের বাঁধন খুলে দেন। এরপর ঘর থেকে বের হতেই খাবার ঘরে স্বামীকে গলা কাটা অবস্থাায় পড়ে থাকতে দেখে চিৎকার দেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন