আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী লীগের প্রধান নেত্রীর বক্তব্য এবং প্রতিশ্রুতি বিশ^াস করা মানে ভয়াবহ প্রতারণার শিকার হওয়া বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল রিজভী। তিনি বলেন, আওয়ামী রাজনীতির যে সংস্কৃতি তৈরী হয়েছে তা প্রচলিত কোন সজ্ঞা দ্বারা বর্ণনা করা যাবে না। এরা স্বার্থসর্বস্বতার উর্ধ্বে উঠতে পারে না বলেই জনগণকে হরেক কিসিমের প্রতারণার দ্বারা বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে। একবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক সাংবাদিকের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, তিনি ক্ষমতায় আসলে সপ্তাহে একদিনের বেশী তাকে টেলিভিশনে দেখা যাবে না। ক’দিন আগেও তিনি আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে বিরোধী দলের সভা-সমাবেশে বাধা দেয়া হবে না এবং বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের আর গ্রেফতার না করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু আমরা কি দেখেছি-এখন প্রতিদিন সকল টেলিভিশনের আলো প্রক্ষেপিত হয় প্রধানমন্ত্রীর দিকে। গুরুত্বপূর্ণ না হলেও পত্রিকার প্রথম পাতায় কয়েক কলাম জুড়ে থাকে প্রধানমন্ত্রী বা তাঁর পরিবারের গুণগান। বিএনপিসহ বিরোধী দল ও মতের সংবাদ প্রচারে বিধি-নিষেধের খড়গ ঝুলে থাকে। বিরোধী দলের ওপর হামলা হবে না, এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে আমরা কি দেখছি, বিএনপি’র প্রতিটি কর্মসূচির ওপর উপর্যপুরি হামলা হচ্ছে এবং রক্তাক্ত আক্রমণ চালিয়ে নিহতসহ আহত করা হচ্ছে অসংখ্য নেতাকর্মীকে। গতকাল রোববার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, সম্প্রতি ভোলায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনী গুলি করে নুরে আলম ও আব্দুর রহিমকে হত্যা এবং অসংখ্য নেতাকর্মীকে গুরুতর আহত করার ঘটনায় প্রমাণিত হয়-শেখ হাসিনা সারাজাতির সাথে নিষ্ঠুর মশকরা ও প্রতারণা করেন। এরা লগি-বৈঠার ধারাবাহিকতা, জিহব্বা ছিঁড়ে ফেলার হুমকি, টকশোতে চোখ তুলে নেয়ার হুমকি ইত্যাদি আওয়ামী সংস্কৃতির নমূণা। সহিংসতা আর দুস্কর্মের সংমিশ্রণে গঠিত আওয়ামী লীগ। এদের কারণেই বর্তমান সময় সংকটময় ও সমস্যাদ্বীর্ণ গণতন্ত্রের সময়। দেশে এখন সীমাহীন দারিদ্র্য, দুর্নীতিগ্রস্ত ও অসাম্যের এক অন্ধকার মধ্যযুগীয় পরিবেশ ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
তিনি বলেন, ক’দিন আগেও একজন উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা ঘোষণা দিয়েছেন-বিরোধী দলের সভা-সমাবেশে বাধা দেয়া হবে না। অথচ ২২ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া দেশব্যাপী বিএনপি’র কর্মসূচির ওপর চলছে নারকীয় আক্রমণ এবং মিথ্যা মামলা দায়েরসহ গ্রেফতারের হিড়িক। ইউনিয়ন থেকে জেলা পর্যায়ে যেখানেই বিএনপি’র বিক্ষোভ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হচ্ছে সেখানেই হামলা চালিয়ে রক্ত ঝরানো হচ্ছে। এরা গণতান্ত্রিক শক্তির বিরুদ্ধে এক বর্বর হিংসাযুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে। তাই প্রধানমন্ত্রীসহ ক্ষমতাসীন শাসকগোষ্ঠীর বক্তব্য রুচিহীন, নির্লজ্জ মিথ্যাচার এবং দায়িত্বজ্ঞানবর্জিত। এরা পেশীশক্তি ও জিহব্বার ধার দিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতা ধরে রাখতে চায়।
রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর উদগ্র ক্ষমতালোভ, জনগণের প্রতি অমানবিক অবজ্ঞা গোটা জাতিকে এক করুণ দুর্দশার মধ্যে ফেলেছে। অবিচারের শরাঘাতে গোটা জাতি এক অনুচ্চারিত যন্ত্রণায় ছটপট করছে। রাগ, ঘৃণা ও প্রতিবাদে আগ্নেয়গিরি হয়ে আছে দেশবাসী। সরকারী সকল জুলুম, নিপীড়ণ উপেক্ষা করেও বিএনপি নেতাকর্মীদের ঢল নামছে রাজপথে। জ¦ালানী তেলসহ নিত্য পণ্যের দাম কমানো, ‘গণতন্ত্রের মা’ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে জাতীয়তাবাদী শক্তি অনড়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন