সপ্তম দফায় তিস্তার পানি বৃদ্ধির পর লালমনিরহাটের ৫ উপজেলার গত তিনদিন ধরে বন্যার পর কমতে শুরু করেছে । পাশাপাশি দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙ্গন। এতে দিশাহারা পড়েছে তিস্তাপারের হাজারো মানুষ। বন্যা কবলিত এলাকায় এখনও কোন ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছায়নি। পাশাপাশি দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির সংকট। গতকাল শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টা লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার দোয়ানী তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে পানি প্রবাহ ৫২.০৫ সেন্টিমিটার (স্বাভাবিক ৫২.৬০) যা বিপদসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার রেকর্ড করা হয়।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় লালমনিরহাটের পাঁচটি উপজেলায় তিস্তা নদীর গর্ভে ৪২টি ঘর-বাড়ি বিলীন হয়ে গেছে। পরিবারগুলো ঘর-বাড়ি হারিয়ে বিভিন্ন জায়গায় আশ্রয় নিয়েছেন। জানা গেছে, এ বছরের কয়েক দফা বন্যা ও নদীর ভাঙনে লালমনিহাটের পাঁচ উপজেলার ২০টি পয়েন্টে তিস্তার ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙনে বিলীন হয়েছে ঘর-বাড়ি, মসজিদ, মাদরাসা,কবরস্থান, ফসলি জমি, স্কুলসহ বিভিন্ন স্মৃতিবিজড়িত স্থাপনা। তিস্তার ভয়াবহ ভাঙনে সহায় সম্বল হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে প্রায় হাজারও পরিবার।
এ দিকে তিস্তার পানি কমা বাড়ার ফলে লালমনিরহাটের সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, দিঘলটারি, কালমাটি, চোংগাডারা, গোকুণ্ডা, মোগলহাট আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, হাতীবান্ধা উপজেলার ডাউয়াবাড়ী, পাটিকাপাড়া, সিন্দুর্না, গড্ডিমারী ও পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রামসহ জেলার প্রায় ১০টি পয়েন্টের দেখা দিয়েছে ভয়াভয় ভাঙন। এসব এলাকায় তিস্তার ভাঙন থেকে রক্ষা পাইনি বসতভিটে, গাছ পালা ফসলি জমি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
তিস্তা পারের বন্যাকবলিত নছিমন বেগম বলেন, গত দুইদিন ধরে পানির নিচে ডুবে আছি। এখনও কোন সরকার থেকে সাহায্য সহযোগিতা পাইনি। সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের চোংগাডারা গ্রামের আ. মালেক বলেন, গত তিনদিন ধরে বন্যার পানিতে কষ্ট ভোগ করলাম। এখন নদীর পানি নেমে যাচ্ছে এখন ভাঙনের আতঙ্কে পড়ছি। লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান জানান,তিস্তার পানি কমার পাশাপাশি নদীর ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। ভাঙনরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড কাজ করছে।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর জানান, বন্যা কবলিত মানুষদের তালিকা করা হয়েছে খুব দ্রুত খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হবে পাশাপাশি যারা ঘর-বাড়ি হারিয়েছেন তাদের পুনর্বাসন করা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন