মাতৃত্বকালীন ছুটিতে যাওয়ার নির্ধারিত তারিখের আগে কোনো নারী শ্রমিকের গর্ভপাত হলে তিনি চার সপ্তাহ ছুটি পাবেন। এমন বিধান রেখে শ্রম বিধিমালা-২০১৫ সংশোধন করেছে সরকার। সম্প্রতি শ্রম বিধিমালা সংশোধনের প্রজ্ঞাপন জারি করেছে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। গতকাল বুধবার শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা এ তথ্য জানান।
এতে বিধিমালায় ‘গর্ভপাতজনিত ছুটি’ শিরোনামে নতুন একটি বিধি (৩৮ক) যুক্ত করা হয়। এতে বলা হয়, প্রসূতি কল্যাণ বা মাতৃত্বকালীন ছুটিতে যাওয়ার নির্ধারিত তারিখের আগে কোনো নারী শ্রমিকের গর্ভপাত ঘটলে তিনি স্বাস্থ্যগত কারণে পরবর্তীসময়ে চার সপ্তাহ ছুটি ভোগ করতে পারবেন এবং এক্ষেত্রে এ ছুটির জন্য মজুরি কর্তন করা যাবে না বা অন্য কোনো ছুটির সঙ্গে সমন্বয় করা যাবে না। এছাড়া প্রসব পূর্ববর্তী আট সপ্তাহের নির্ধারিত সময়ের পরে কোনো নারী শ্রমিক সন্তান প্রসব করলে ওই নির্ধারিত সময়ের পরবর্তীসময়ে দিনগুলো এই বিধির অধীন সমন্বয় করতে হবে বলেও সংশোধিত বিধিমালায় বলা হয়েছে। এছাড়া প্রসূতি কল্যাণ সুবিধার হিসেবে পরিবর্তন আনা হয়েছে সংশোধিত বিধিমালায়। এতে বলা হয়, শ্রম আইন অনুযায়ী প্রসূতি কল্যাণ সুবিধা হিসাবে করার ক্ষেত্রে শ্রমিকের সর্বশেষ মাসিক প্রাপ্ত মোট মজুরিকে ২৬ দিয়ে ভাগ করে একদিনের গড় মজুরি নির্ধারণ করতে হবে। এছাড়া প্রতিষ্ঠানে ভবিষ্যৎ তহবিলের বিধান থাকলে প্রসূতি কল্যাণ সুবিধাভোগীর ভবিষ্যৎ তহবিলে প্রদেয় চাঁদা তার প্রাপ্য সুবিধা থেকে আইনের বিধান অনুযায়ী কর্তন করতে হবে। আগে দৈনিক, সাপ্তাহিক বা মাসিক গড় মজুরি গণনার জন্য সংশ্লিষ্ট শ্রমিকের প্রসূতি হওয়ার নোটিশ দেওয়ার আগের তিন মাসে তার প্রাপ্ত মোট মজুরিকে ওই সময়ে মোট প্রকৃত কাজের দিন দিয়ে ভাগ করে প্রসূতি কল্যাণ সুবিধার হিসাব করা হতো।
শ্রম আইন অনুযায়ী আগামী আট সপ্তাহের মধ্যে সন্তান প্রসবের সম্ভাবনা রয়েছে বলে একজন চিকিৎসকের প্রত্যয়নপত্র পেশ করার পর সংশ্লিষ্ট নারী শ্রমিক সন্তান প্রসবের আগে আট সপ্তাহ এবং সন্তান প্রসবের পরে আট সপ্তাহ মোট ১৬ সপ্তাহ মাতৃত্বকালীন বা প্রসূতিকালীন ছুটি ভোগ করতে পারেন। অন্যদিকে, ঠিকাদারি সংস্থায় কাজ করা কর্মীদের ‘কর্মী সামাজিক নিরাপত্তা তহবিল’ ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আনা হয়েছে।
সংশোধিত শ্রম বিধিমালায় এ বিষয়ে বলা হয়, প্রত্যেক ঠিকাদার সংস্থাকে লাইসেন্স প্রাপ্তির ছয় মাসের মধ্যে ওই সংস্থার নাম সম্বলিত ‘কর্মী সামাজিক নিরাপত্তা তহবিল› নামে যে কোনো তফসিলি ব্যাংকে একটি ব্যাংক হিসাব শুরু করতে হবে। ব্যাংক হিসাব খোলার পর লাইসেন্স নেওয়ার জন্য সব কর্মীর এক মাসের মূল মজুরির সমপরিমাণ অর্থ উক্ত ব্যাংক হিসাবে দিতে হবে। পরের বছর থেকে পুরোনো কর্মীর জন্য মূল মজুরির ১৫ শতাংশ এবং নতুন কর্মীর জন্য এক মাসের মূল মজুরির সমপরিমাণ অর্থ জমা দিতে হবে। যেসব ঠিকাদার সংস্থায় আগে থেকে গ্রাচুইটি স্কিম রয়েছে সেসব প্রতিষ্ঠানের কর্মীর জন্য বিশেষ নিরাপত্তা তহবিল গঠনের প্রয়োজন হবে না। এতে বলা হয়, কর্মীর চাকরির যে কোনো ধরনের অবসানে আইন অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ বা গ্রাচুইটি অর্থ সম্পূর্ণ বা অংশবিশেষ চেকের মাধ্যমে সরাসরি পরিশোধ করতে হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন