কোচিংয়ে যাওয়ার কথা বলে গত ২৩ আগস্ট বাসা থেকে বের হয়ে আর ফেরেনি কুমিল্লার সাত শিক্ষার্থী। দুই সপ্তাহেও তাদের কোনো খোঁজ মেলেনি। এদের মধ্যে ছয় জন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া ও কুমিল্লা সরকারি কলেজের ছাত্র। অপরজন একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স সম্পন্ন করেছে। এ ঘটনায় নিখোঁজ ছাত্রদের অভিভাবকরা কোতোয়ালি থানায় ছয়টি সাধারণ ডায়েরি করেন।
নিখোঁজ শিক্ষার্থীরা হলো- কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ইমরান বিন রহমান, একই কলেজের আস সামি, কুমিল্লা সরকারি কলেজের হাসিবুল ইসলাম, একই কলেজের নিহাল আবদুল্লাহ। এরা সবাই এইচএসসি পরীক্ষার্থী। এছাড়া ভিক্টোরিয়া কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের ইমতিয়াজ আহমেদ রিফাত ও তৃতীয় বর্ষের আমিনুল ইসলাম আলামিন এবং ঢাকা ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটি থেকে কম্পিউটার সায়েন্স থেকে অনার্স সম্পন্ন করা সরতাজ ইসলাম নিলয়। তাদের মধ্যে নিহাল ও নিলয় সম্পর্কে খালাতো ভাই।
কুমিল্লার অতিরিক্ত এসপি মো. আফজাল হোসেন ইনকিলাবকে বলেন, কয়েকজন শিক্ষার্থী মিসিংয়ের জিডি হাতে পেয়েছি। আমরা তাদের সন্ধানে ও উদ্ধারে কাজ শুরু করেছি। তারা দলবদ্ধভাবে কোথাও গিয়েছে, নাকি অন্য কোনো বিষয় আছে তা তদন্তের পর বলতে পারব। নিখোঁজ শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করতে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। র্যাব-১১ সিপিসি ২, কুমিল্লার কম্পানি কমান্ডার মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন বলেন, আমরা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছি।
কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি শহিদুর রহমান জানান, প্রাথমিকভাবে আমরা জানতে পেরেছি কোচিংয়ের নামে বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর তারা কুমিল্লা থেকে চাঁদপুরে যায়। এরপর রেলস্টেশন এলাকার একটি হোটেলে রাত যাপন করে। পরদিন সকাল সাড়ে ৬টায় শিক্ষার্থীরা ওই হোটেল থেকে চলে যায়। এরপর থেকে তাদের অবস্থান সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। তবে আমরা তাদের সন্ধানে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
গতকাল বুধবার নিখোঁজ শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা জানান, তারা প্রত্যেকেই পরস্পরের পরিচিত। পড়াশোনার বাইরে অন্য কোনো বিষয়ের প্রতি সন্তানদের আগ্রহ দেখেননি। এদিকে ঘটনার দিন কোচিংয়ে যাওয়ার পর ইমরান বিন রহমান নামের ওই ছাত্র তার বাবাকে বলেছে, আব্বু আমি আজ কোচিং থেকে রেল স্টেশন মসজিদে তাবলিগের বয়ান শুনতে যাব। ফিরতে দেরি হবে।
ঘটনার পরদিন ইমরানের কথার সূত্র ধরে নিখোঁজ ছাত্রের অভিভাবকরা কুমিল্লা রেল স্টেশন মসজিদসহ নগরী ও আশপাশের যেসব মসজিদে তাবলীগের বয়ান হয় সেখানে খোঁজাখুঁজি অব্যাহত রাখেন। কিন্তু পনের দিনেও তাদের খোঁজ না মেলায় পরিবারের লোকদের মধ্যে চরম উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন