ভারতের দক্ষিণ মধ্যপ্রদেশ ও এর পাশর্^বর্তী এলাকায় অবস্থানরত স্থল নিম্নচাপটি আরো পশ্চিম, উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর ও দুর্বল হয়ে গতকাল সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছিল। এটি স্থলভাগের উপর দিয়ে আরো পশ্চিম, উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর ও দুর্বল হয়ে সরে যাচ্ছে। পূর্ণিমা এবং ক্রমেই দুর্বল হয়ে পড়া সুস্পষ্ট স্থল লঘুচাপের দ্বিমুখী প্রভাবে, ঝড়ো হাওয়ায় সাগর-উপকূল এখনও উত্তাল। দেশের দক্ষিণাঞ্চল ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের সমুদ্র উপকূলের নিম্নাঞ্চল প্রবল জোয়ারে প্লাবিত হচ্ছে।
দক্ষিণের উপকূলীয় এলাকায় নদ-নদী, খালসমূহে এবং চাঁদপুরে মেঘনার মোহনা পর্যন্ত পানি বেড়েই চলেছে। সারা দেশে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত, কোথাও কোথাও ভারী বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। তাপমাত্রার পারদ কমেছে। সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সঙ্কেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। বঙ্গোপসাগর উত্তাল থাকায় সমুদ্রে মাছ শিকার প্রায় বন্ধ রয়েছে। মাছ শিকারি দেশীয় হাজারো ট্রলার-নৌযান উপকূলভাগে অলস ঘাটে ভিড়ে রয়েছে।
২৪ ঘণ্টার আবহাওয়া পূর্বাভাসে জানা গেছে, মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের উপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে জোরালো অবস্থায় রয়েছে। খুলনা, বরিশাল, ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা থেকে ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা কিছুটা হ্রাস পেতে পারে। রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। পরবর্তী ৭২ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমে আসতে পারে। গতকাল সর্বশেষ অবহাওয়া পরিস্থিতি সম্পর্কে আবহাওয়াবিদ মো. শাহীনুল ইসলাম জানান, ভারতের দক্ষিণ মধ্যপ্রদেশ ও এর পাশর্^বর্তী এলাকায় অবস্থানরত স্থল নিম্নচাপটি আরো পশ্চিম, উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর ও দুর্বল হয়ে গতকাল সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছিল। এটি স্থলভাগের উপর দিয়ে আরো পশ্চিম, উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর ও দুর্বল হয়ে সরে যেতে পারে।
স্থল সুস্পষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও এর সংলগ্ন এলাকায় গভীর সঞ্চারণশীল মেঘমালার সৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। সমুদ্র বন্দরসমূহ, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সঙ্কেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
পূর্ণিমা ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলা এবং এর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক সামুদ্রিক জোয়ারের চেয়ে এক থেকে ২ ফুট অধিক উঁচু বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন