টাঙ্গাইলের দারুল উলুম কামিল মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপালের পদ থেকে হিন্দু শিক্ষক গোপাল চন্দ্র বসাককে অব্যাহতি দিয়ে এর আগে দায়িত্বে থাকা মাওলানা সোহরাব হোসেনকে ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপালের দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। একই সঙ্গে মাদরাসাটিতে সব ধরনের নিয়োগ কার্যক্রমও বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
একটি কামিল মাদরাসায় ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল হিসেবে একজন হিন্দু ধর্মাবলম্বীকে দায়িত্ব দেয়ার খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর সারাদেশে আলেম-ওলামা ও পীর-মাশায়েখদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। দেশের মাদরাসা শিক্ষক-কর্মচারীদের পেশাজীবী অরাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীন এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে একটি বিবৃতি দেয়। বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে ওপরের নির্দেশে গতকাল সকালেই গভর্নিং বডির সভায় ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপালের দায়িত্ব থেকে হিন্দু ধর্মাবলম্বী শিক্ষক গোপাল চন্দ্র বসাককে সরিয়ে দেয়া হয় বলে একটি সূত্রে জানা গেছে।
জানা যায়, ২০২০ সালে মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা আবু সাঈদের মৃত্যুর পর পদটি শূন্য হয়। এরপর থেকে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে প্রিন্সিপালের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন সোহরাব হোসেন। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে প্রিন্সিপাল নিয়োগের জন্য দরখাস্ত আহ্বান করা হলেও পর্যাপ্ত সংখ্যক আবেদন পাওয়া যায়নি। গত ৩০ আগস্ট পুনরায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয় মাদরাসা কর্তৃপক্ষ। ১২ সেপ্টেম্বর প্রিন্সিপাল পদে আবেদনের জন্য ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেন সোহরাব হোসেন। এ কারণে সিনিয়রিটির ভিত্তিতে ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপালের দায়িত্ব দেওয়া হয় গোপাল চন্দ্র বসাককে।
গোপাল চন্দ্র জানান, ১৯৯১ সালে তিনি প্রভাষক হিসেবে মাদরাসায় যোগ দেন। তখন মাওলানা আবু সাইদ প্রিন্সিপালের দায়িত্বে ছিলেন। তিনি বলেন, ‘ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপালের পদ খালি হওয়ায় নতুন প্রিন্সিপাল নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত সাময়িকভাবে আমাকে ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল হিসেবে নিয়োগপত্র দেয় মাদরাসা কর্তৃপক্ষ’।
সূত্র জানায়, গত বৃহস্পতিবার রাতে মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আনোয়ারুল হাবীবকে। কিন্তু শুক্রবার সকালে মাদরাসা কমিটির জরুরি সভায় সোহরাব হোসেনকে আবার ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপালের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
মাদরাসা কমিটি প্রেসিডেন্ট কুদরত-এ-এলাহীর দাবি, গোপাল চন্দ্র বসাককে ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপালের দায়িত্ব দেওয়া হয়নি এবং মাদরাসার সব ধরনের নিয়োগ স্থগিত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক আতাউল গনি বলেন, ‘ধর্মানুভূতিতে আঘাত লাগতে পারে, সে কারণে মাদরাসা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে বৃহস্পতিবার রাতে গোপাল চন্দ্র বসাককে ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপালের পদ থেকে অপসারণ করে নতুন একজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে’।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন