রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন গতকাল জাতির উদ্দেশে একটি বিরল ভাষণে বলেছেন যে, ইউক্রেনে তার অভিযানের লক্ষ্য পরিবর্তন হয়নি। পদক্ষেপটি ‘প্রয়োজনীয় ও জরুরি’ এবং অবিলম্বে কার্যকর হয়েছে। তিনি ‘মাতৃভূমিকে রক্ষার জন্য’ নির্দেশ দিয়েছেন। এই নির্দেশনার ফলে যারা কোন একসময় রুশ সেনাবাহিনীতে কাজ করেছেন বা প্রশিক্ষণ নিয়েছেন ভবিষ্যতে যে কোন প্রয়োজনে সেনাবাহিনীর কাজে লাগবার জন্য, সেসব রিজার্ভিস্টদের এখন যুদ্ধ করার জন্য ডেকে পাঠানো হবে। পুতিন বলেছেন, মাতৃভূমি, সার্বভৌমত্ব, আঞ্চলিক অখণ্ডতা আর জনগণের নিরাপত্তা রক্ষা করার তিনি সৈন্য সমাবেশের নির্দেশ দিয়েছেন। গতকাল থেকেই সৈন্য সমাবেশ শুরু হয়ে গিয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, রাশিয়ার অনেক যুদ্ধাস্ত্র প্রস্তুত আছে। রাশিয়ার অস্ত্র উৎপাদন বৃদ্ধি করার জন্যও তিনি বাড়তি তহবিল বরাদ্দের নির্দেশ দিয়েছেন। পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতি হুমকি দিয়ে তিনি বলেছেন, ‘আমাদের দেশের আঞ্চলিক অখণ্ডতা যদি হুমকির মধ্যে পড়ে, রাশিয়া এবং এর জনগণকে রক্ষা করার জন্য আমরা সবরকমের ব্যবস্থা নেবো। এটা কোন ফাঁকা বুলি নয়। যারা পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে আমাদের ব্ল্যাকমেইল করতে চায়, তাদের জানা উচিত যে, পাল্টা বাতাস তাদের দিকেও যেতে পারে।’
তিনি অভিযোগ করেন, পশ্চিমা দেশগুলো প্রমাণ করেছে যে, তারা চায় না রাশিয়া আর ইউক্রেনের মধ্যে শান্তি থাকুক। ডনবাসে যারা লড়াই করছে, তাদের আইনি স্বীকৃতি দেয়ারও তিনি ঘোষণা দিয়েছেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, পুতিন আরও বলেছেন, ইউক্রেনের যে এলাকাগুলো রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, সেখানকার বাসিন্দারা নিও-নাৎসি রাজত্বে যেতে চায় না। সেখানে যে গণভোটের আয়োজনের পরিকল্পনা করা হচ্ছে, সেই প্রসঙ্গে পুতিন বলেছেন, আমরা তাদের সহায়তায় রয়েছি।
এমন সময়ে পুতিন এ ভাষণটি দেন, যখন মস্কো পূর্ব এবং দক্ষিণে ইউক্রেনের ভূখণ্ডের উপর তার দখলকে সুসংহত করতে শুরু করেছে। তারা আনুষ্ঠানিকভাবে রাশিয়ায় যোগদানের জন্য ইউক্রেনের মুক্ত এলাকাগুলোতে গণভোট আয়োজনের পরিকল্পনা করছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, গণভোটগুলো রাশিয়ার দ্বারা অঞ্চলগুলোকে সংযুক্ত করার বৈধতা দেবে। এর ফলে সেসব এলাকা, যার মধ্যে এমনকি ইউক্রেন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত এলাকাও আছে, সেখানে যে কোন আক্রমণকে মস্কো নিজের উপর আক্রমণ বলে ঘোষণা করতে পারে। ফলে তারা নিজেদের রক্ষার কথা বলে এমনকি পারমাণবিক বোমা ব্যবহারেরও অজুহাত পাবে।
উপরন্তু, রাশিয়ার সংসদ মঙ্গলবার একটি আইন পাস করেছে যা রাশিয়ার ফৌজদারি কোডে ‘মোবিলাইজেশন’ এবং ‘মার্শাল ল’ এর ধারণাগুলি প্রবর্তন করেছে। এটি আরও জল্পনা জাগিয়েছে যে, পুতিন ইউক্রেনের অভিযানকে আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধ বলে ঘোষণা করতে পারেন। ফলে পুতিন ইউক্রেনে তার পূর্ণ সামরিক শক্তি প্রয়োগের সুযোগ পাবেন। মঙ্গলবার, রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ভি ল্যাভরভ বলেছেন, গণভোট অঞ্চলগুলিকে তাদের ভবিষ্যত নির্ধারণের অনুমতি দেবে। ‘বর্তমান পরিস্থিতি নিশ্চিত করে যে, তারা তাদের ভবিষ্যতের কর্তা হতে চায়,’ ল্যাভরভ রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন নেটওয়ার্ক রসিয়া-১-কে বলেছেন।
চারটি অঞ্চলে রাশিয়া সমর্থক কর্মকর্তারা - পূর্বে ডোনেৎস্ক ও লুহানস্ক এবং দক্ষিণে খেরসন ও জাপোরোজিয়ায় চার দিন ধরে গণভোট নেয়ার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন যা শুক্রবার থেকে শুরু হবে। এর মধ্যে লুহানস্ক এবং খেরসনের প্রায় পুরোটাই রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। জাপোরোজিয়া এবং ডোনেৎস্কের বেশিরভাগ এলাকা রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, বাকি অংশে সংঘর্ষ চলছে। ২০১৪ সালে, রাশিয়ান বাহিনী ক্রিমিয়া আক্রমণ করেছিল এবং পুতিন একে রাশিয়ার সাথে সংযুক্ত করেছিলেন। সেখানেও তখন এই সংযুক্তিকরণের জন্য একইভাবে গণভোটের আয়োজন করা হয়েছিল, যেখানে ৯৭ শতাংশ ভোটার রাশিয়াকে সমর্থন করেছিলেন। বর্তমানে ক্রিমিয়া রাশিয়ার অংশ বলে স্বীকৃত।
পুতিনের সৈন্য সমাবেশের ঘোষণায় পশ্চিমাদের মাথায় হাত : পুতিনের এই ঘোষণার ফলে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্ররা। যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি এবং ফ্রান্স জানিয়েছে, তারা গণভোটের ফলাফল কখনোই মেনে নেবে না। নেটো সামরিক জোট জানিয়েছে, এ ধরনের পরিকল্পনা যুদ্ধকে আরও উস্কে দেবে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন, ইউক্রেনের মুক্ত অঞ্চলে অনুষ্ঠিত গণভোটের ফলাফলকে যুক্তরাষ্ট্র কখনোই স্বীকৃতি দিতে রাজি হবে না। ‘যদি এই গণভোট এগিয়ে যায়, এবং যদি রাশিয়া ইউক্রেনের ভূখণ্ড সংযুক্ত করার পরিকল্পনা করে, তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কখনই এটিকে স্বীকৃতি দেবে না,’ মার্কিন শীর্ষ কূটনীতিক ৭৭তম জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের পাশে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র সচিব জেমস ক্লিভারলির সাথে আলোচনার আগে বলেছিলেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্ররা সতর্ক করেছে যে মস্কোর আক্রমণকে ন্যায্যতা দিতে গণভোটে কারচুপি করা হবে। ‘ইউক্রেনের কোনও কথিতভাবে সংযুক্ত অংশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কখনই রাশিয়ার দাবিকে স্বীকৃতি দেবে না’, প্রেসিডেন্ট বাইডেনের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বলেছেন। ন্যাটো মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ইউক্রেনের জন্য সমর্থন বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন যাকে তিনি যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান পরিস্থিতি বলে অভিহিত করেছেন। তিনি টুইটারে লিখেছেন, ‘গণভোটের কোনো বৈধতা নেই।’
ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ কূটনীতিক জোসেপ বোরেল এক বিবৃতিতে বলেছেন যে, ব্লক এবং এর সদস্য রাষ্ট্রগুলো গণভোটের ফলাফলকে স্বীকৃতি দেবে না এবং তারা অতিরিক্ত নিষেধাজ্ঞা বিবেচনা করবে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ তার বক্তৃতায় বলেছেন, ‘রাশিয়াকে এখন বুঝতে হবে যে বোমা হামলা ও দখলকৃত অঞ্চলগুলোতে গণভোট হলেও তারা সামরিকভাবে তাদের ইচ্ছা চাপিয়ে দিতে পারে না।’
তিন সপ্তাহে ৭ হাজারের বেশি ইউক্রেনীয় সেনা নিহত : গতকাল রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বোর্ড সভায় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সের্গেই শোইগু বলেছেন, ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর নিকোলায়েভ এবং ক্রিভোই রোগের কাছে আক্রমণ করার সমস্ত প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। গত তিন সপ্তাহে একা কিয়েভ ৭ হাজারের বেশি সেনা এবং প্রায় ১ হাজার সামরিক সরঞ্জাম হারিয়েছে।
তিনি বলেন, রাশিয়ান সামরিক বাহিনী ডোনেৎস্ক পিপলস রিপাবলিকের অঞ্চল মুক্ত করে চলেছে এবং সুপ্রিম কমান্ডার-ইন-চীফ দ্বারা নির্ধারিত লক্ষ্যগুলি সম্পূর্ণরূপে অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত বিশেষ সামরিক অভিযান চালিয়ে যাবে। স্ট্রাইক ক্ষমতা জোরদার করতে ‘ইজিয়াম-বালাক্লেয়া গ্রুপকে ডনবাসে স্থানান্তর করা হয়েছে।’ তিনি জানান, রাশিয়ান সেনাবাহিনী ‘নিকোলায়েভ এবং ক্রিভোই রোগের কাছে আক্রমণ করার জন্য ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর সমস্ত প্রচেষ্টাকে বিপর্যস্ত করেছে। শুধুমাত্র গত তিন সপ্তাহে, কিয়েভের ৭ হাজার সৈন্য নিহত এবং ৯৭০ টি সামরিক হার্ডওয়্যার ধ্বংস হয়েছে, যার মধ্যে ২০৮টি ট্যাঙ্ক এবং ২৪৫টি পদাতিক যুদ্ধের যান, ১৮৬টি সাঁজোয়া যান, ১৫টি বিমান এবং ৪টি হেলিকপ্টার রয়েছে।
কিয়েভের সাথে কোন আলোচনায় যাবে না মস্কো : ডনবাস রাশিয়ায় যোগদানের পর কিয়েভের সাথে মস্কোর আলোচনার কোনো সম্ভাবনা থাকবে না। রাশিয়ার স্টেট ডুমার (সংসদের নিম্নকক্ষ) পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান লিওনিড সøুটস্কি গতকাল সাংবাদিকদের বলেছেন। ‘দুর্ভাগ্যবশত, আলোচনা কিছুদিনের জন্য প্রশ্নের বাইরে ছিল। পশ্চিম এবং কিয়েভ জান্তা বলেছে যে, তারা আলোচনা করতে প্রস্তুত নয়। কিয়েভের রাজনীতিবিদরা আগে বলেছিলেন যে, আত্মসমর্পণই একমাত্র সম্ভাব্য উন্নয়ন,’ ডনবাসে রাশিয়ায় যোগদানের বিষয়ে গণভোটের পর আলোচনা সম্ভব হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি উল্লেখ করেছেন, ‘আমরা আলোচনার জন্য প্রস্তুত ছিলাম, কিন্তু কিয়েভ সমস্ত চুক্তি লঙ্ঘন করেছে।’
তিনি আরও উল্লেখ করেছেন যে, আলোচনার প্রক্রিয়াটি দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেছে, এখন আর ফিরে আসার সুযোগ নেই। ‘কারণটি হল যে পরিস্থিতিটি সামরিক উন্নয়ন এবং বেসামরিকদের মৃত্যুর দিকে পরিচালিত করেছে কিন্তু কিয়েভ সরকার এবং এর পিছনে যারা রয়েছে, তারা দুর্ভাগ্যবশত এটিকে পাত্তা দেয় না,’ সøুটস্কি যোগ করেছেন। জাপোরোজিয়ার ৩,৫০০ বাসিন্দা মিত্র বাহিনীতে যোগ দিয়েছেন : জাপোরোজিয়া অঞ্চলের ৩,৫০০ জনেরও বেশি বাসিন্দা ইতিমধ্যেই রাশিয়ান সৈন্য বা ডোনেৎস্ক ও লুহানস্ক পিপলস রিপাবলিকের (ডিপিআর এবং এলপিআর) মিলিশিয়াদের সাথে যোগ দিয়েছেন বিশেষ সামরিক অভিযানে অংশ নিতে। ‘উই আর টুগেদার উইথ রাশিয়া’ আন্দোলনের নেতা ভøাদিমির রোগভ এ তথ্য জানিয়েছেন। মঙ্গলবার তিনি বার্তা সংস্থা তাসকে বলেন, ‘জাপোরোজেয়ের ৩,৫০০ জনেরও বেশি বাসিন্দা বিভিন্ন ফ্রন্টে লড়াই করছে - পিপলস রিপাবলিক (ডোনেটস্ক এবং লুহানস্কের) এবং জাপোরোজিয়া ও খেরসন অঞ্চলে, এই সংখ্যাটি ইউক্রেন থেকে মুক্ত হওয়া অন্য যে কোন এলাকার থেকে বেশি।’
নতুন কৌশল ঘোষণা কাদিরভের : রাশিয়ার উত্তর ককেশাস প্রজাতন্ত্রের চেচনিয়ার প্রধান রমজান কাদিরভ বলেছেন, রাশিয়ান যোদ্ধারা কিয়েভ সরকারের বাহিনীর বিরুদ্ধে তাদের অভিযানে নতুন কৌশল অবলম্বন করবে। ‘আমরা বিশেষ অভিযানে একটি নতুন কৌশল গ্রহণ করছি। আমি ইতিমধ্যে চেচেন প্রজাতন্ত্রের বিশেষ অভিযানের অপারেটিভ সদর দফতরের প্রধান ম্যাগোমেদ দাউদভের সাথে সমস্ত বিবরণ নিয়ে আলোচনা করেছি,’ কাদিরভ মঙ্গলবার তার টেলিগ্রাম চ্যানেলে লিখেছেন। ‘প্রতিপক্ষ নতুন পরিকল্পনার সবচেয়ে গুরুতর পরিণতির মুখোমুখি হতে চলেছে,’ তিনি যোগ করেছেন। তার ভাষায়, নতুন কৌশল আগে ব্যবহৃত সব কৌশলকে ছাড়িয়ে গেছে।
খারকভ এবং লুহনস্কের সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ করছে মিত্রবাহিনী : মিত্রবাহিনী খারকভ অঞ্চল এবং লুহানস্ক পিপলস রিপাবলিক (এলপিআর) এর মধ্যে সীমান্তে বসতি নিয়ন্ত্রণ করে, খারকভ অঞ্চলের সামরিক-বেসামরিক প্রশাসনের প্রধান ভিটালি গানচেভ গতকাল বলেছেন। ‘লুহানস্ক প্রজাতন্ত্রের সাথে সীমান্তের বসতিগুলি আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আমি বিশ্বাস করি যে আমাদের সশস্ত্র বাহিনী সেখানে তাদের অবস্থান দাঁড়াবে,’ তিনি রসিয়া-২৪ টিভি চ্যানেলকে বলেছেন।
গানচেভ যোগ করেছেন যে, ইউক্রেনীয় সামরিক বাহিনী লুহানস্ক এবং ডোনেৎস্ক গণপ্রজাতন্ত্রে রাশিয়ায় যোগদানের গণভোট আয়োজনে বাধা দেয়ার জন্য খারকভ অঞ্চল থেকে মিত্র বাহিনীকে তাড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাবে। উল্লেখ্য, ডোনেৎস্ক এবং লুহানস্ক পিপলস রিপাবলিকের কর্তৃপক্ষ, সেইসাথে জাপোরোজিয়া এবং খেরসন অঞ্চলের প্রশাসন, এর আগে রাশিয়াকে এর উপাদান সত্তা হিসাবে যোগদানের বিষয়ে গণভোট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। আগামী ২৩-২৭ সেপ্টেম্বর গণভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। সূত্র : তাস, নিউইয়র্ক টাইমস, বিবিসি নিউজ, এপি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন