যুগ জামানা পাল্টে দিতে চাই না অনেক জন, এক মানুষই আনতে পারে জাতির জাগরণ। মাওলানা রুহুল আমিনের লেখা কবিতার এ পঙক্তিটির প্রকৃষ্ট উদাহরণ সৃষ্টি করলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ইংরেজি বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী হাসনাত আব্দুল্লাহ। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের দাপ্তরিক কাজের জটিলতা সংক্রান্ত হয়রানি বন্ধে ৮ দফা দাবিতে আন্দোলন ও অনশন করে অবশেষে সফল হয়েছেন হাসনাত। ঘোষণা এলো- দাপ্তরিক কাজের জন্য আর কোনো শিক্ষার্থীকে রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ে যেতে হবে না।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) প্রশাসনিক ভবনের কর্মকর্তাদের অসহযোগিতামূলক আচরণ ও ডিজিটাল যুগে এসেও সনাতনী পদ্ধতিতে সেবা দানের বিরুদ্ধে ৮ দফা দাবিতে বেশ কয়েকদিন যাবত আন্দোলন করে আসছিলেন হাসনাত আব্দুল্লাহ। আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার দুপুর থেকে অনশন শুরু করেন তিনি। অনশনের ২৭ ঘন্টা পর গতকাল বুধবার ২টা ১০ মিনিটে পানি খাইয়ে অনশন ভাঙান বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মো. আখতারুজ্জামান। আশ্বাস দেন দাবি মেনে নেয়ার।
প্রফেসর ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, আমি ঘোষণা দিচ্ছি, এই মুহূর্ত থেকে কোনো শিক্ষার্থীকে দাপ্তরিক কাজের জন্য আর রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ে যেতে হবে না। সব কাজ হল এবং বিভাগে সম্পন্ন হবে। সেখানে আমাদের লোকবল দেওয়া আছে এবং প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হবে।
ভিসি বলেন, আমাদের কোনো শিক্ষার্থী যেন রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ে এসে মূল্যবান সময় নষ্ট না করে। সে সময়টিতে তারা যেন পড়াশোনা করে, সেমিনার রুমে আড্ডা দেয় এবং লাইব্রেরিতে যায়। কোনো কাজেই তারা রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ে আসবে না। সব কাজ হল এবং বিভাগে সম্পাদন হবে। সেখানে কেউ হয়রানি হলে প্রভোস্ট এবং চেয়ারম্যানের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নিজামুল হক ভূইয়া, প্রক্টর ড. একেএম গোলাম রব্বানীসহ সহকারী প্রক্টর ও বিভাগের শিক্ষকরা।
এদিকে হাসনাতের এসব দাবির সাথে সাধারণ শিক্ষার্থীরা একাত্মতা পোষণ করলেও দেখা মিলেনি প্রগতিশীল চিন্তাধারার, সর্বদা শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের বুলি আওড়ানো ছাত্রলীগসহ অন্যান্য প্রগতিশীল বাম ছাত্র সংগঠনগুলোর। সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি কেবল ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদেরই শুরু থেকে এ আন্দোলনের পাশে থেকে সংহতি জানাতে দেখা গেছে। এরই ধারাবাহিকতায় গতকালের অনশনে সংহতি জানাতে আসেন ছাত্র অধিকার পরিষদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আখতার হোসেন। এসময় আখতার হোসেন বলেন, দীর্ঘ সময় ধরে আমরা এখানে কথা বলে যাচ্ছি। কিন্তু ভিসি স্যার একটা মিটিংয়ে আছেন- এমন ধরনের অজুহাত আমাদের কাছে আসছে বারবার। এদিকে ১ দিনেরও বেশি সময় ধরে একজন শিক্ষার্থী অনশনে আছেন। আমরা বলতে চাই, ওই শিক্ষার্থীর জীবন আগে নাকি মিটিং আগে? এসময় ভিসির প্রতি হাসনাতের অনশন ভাঙানোর আহ্বান করেন আখতার।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন