এ যেন মুম্বাইয়ের হিন্দি সিনেমার দৃশ্য। শতাধিক মেয়ে একে অপরের ওপর রুদ্ররোষে ঝাঁপিয়ে পড়ছেন। একে অপরের চুলের ঝুঁটি ধরে মারধর করছেন, কেউ চেয়ার দিয়ে পেটাচ্ছেন; কেউ প্রতিরোধ করছেন, কেউ বা পাল্টা মার দিচ্ছেন। অনেকটা কুরুক্ষেত্রের মতো। পাশে দাঁড়িয়ে দৃশ্য দেখছেন পুলিশ বাহিনীর কয়েকজন সদস্য। রাজধানীর ইডেন কলেজ চত্বরে সংঘটিত মুম্বাই হিন্দি সিনেমার দৃশ্যের মতোই এ ঘটনা কিন্তু সেলুলয়ের ফিতায় ধারণ করে দর্শকদের দেখানো হয়নি। গতকাল সরাসরি স্যুটিংয়ের দৃশ দেখানো হয়েছে। দেশের কয়েকটি গণমাধ্যমে খবরে এ দৃশ্য সরাসরি প্রচার করে। আর এ কারণে টিভির খবরের প্রতি বিমুখ মানুষ গতকাল ওই দৃশ্য দেখতে টিভির সামনে ভিড় করেন। যারা এই হিন্দি সিনেমার দৃশ্যের মতো মারদাঙ্গায় অংশ নেন তারা সবাই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠন ছাত্রলীগের নেত্রী। ঐতিহ্যবাহী ছাত্র সংগঠনটির নেত্রীদের এই যুদ্ধ দেখে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নেটিনেজনরা নানান মন্তব্য, বক্তব্য দিচ্ছেন। শুধু তাই নয়, ইউটিউবে একাধিক নেত্রীর বক্তব্য ভাইরাল হয়েছে। সেখানে ছাত্র সংগঠনটির এক নেত্রীকে বলতে শোনা যায়, তাদের নেত্রীরা ইডেন মহিলা কলেজে পড়ুয়া ছাত্রীদের জোর করে দলের শীর্ষ নেতাদের কাছে ‘উপঢৌকন’ পাঠান। কেউ নেতাদের বিছানায় যেতে না চাইলে তাকে নির্যাতন করা হয়। আর ইডেন কলেজ কর্তৃপক্ষ নীরবে ঘুমিয়ে থাকেন।
ইডেন মহিলা কলেজের প্রশাসন ও ছাত্রী হলগুলোর নিয়ন্ত্রণ কার্যত ছাত্রলীগের হাতে। নানাভাবে সাধারণ ছাত্রীদের হয়রানি করা হয়। হলে সিটে কে থাকবেন, কার নামে সিট দেয়া হবে সবকিছু ছাত্রলীগের নেত্রীরা দেখাশোনা করেন। শুধু তাই নয়, নিজেদের অবস্থান ধরে রাখতে কলেজের প্রিন্সিপাল সুপ্রিয়া ভট্টাচার্য থেকে শুরু করে বেশির ভাগ শিক্ষক নেত্রীদের তোয়াজ করে থাকেন। ইডেন কলেজের একাধিক ছাত্রী নাম না প্রকাশ করার শর্তে জানান, কলেজে পড়ুয়া যে ছাত্রীরা সুন্দর চেহারা তাদের নানাভাবে টার্গেট করা হয়। ছাত্রলীগের কলেজ শাখার নেত্রীরা হলে হলে গিয়ে সুন্দরি ছাত্রীদের ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের বিছানায় যেতে চাপ দেন। কেউ অবাধ্য হলে তাদের ওপর নেমে আসে অমানসিক নির্যাতন। পরিস্থিতি জানতে গতকাল কলেজের প্রিন্সিপাল সুপ্রিয়া ভট্টাচার্যকে বার বার ফোন করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভা ও সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া সুলতানা সুন্দরীদের ছবি তোলেন এবং ব্যবসা করাতে চান বলে অভিযোগ করেছেন ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সামিয়া আক্তার বৈশাখী। কলেজটির ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের এমন সহিংস আচরণ নতুন নয় জানিয়ে বৈশাখী বলেন, ‘আগেও এমন অনেক ঘটনা ঘটেছে। আমাদের রুমের মেয়েদেরকে তারা নিয়ে যেতে চেয়েছেন। কিন্তু মেয়েরা তো তাদের কাছে নিরাপদ মনে করেন না। কারণ তারা ওই মেয়েদেরকে দিয়ে বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা করাতে চান। বৈধ রুমের মেয়েরা উপস্থিতি খাতায় স্বাক্ষর করার সময় সভাপতির অনুসারীরা তাদের ছবি তুলে রাখেন। সেখান থেকে কোন মেয়েটা সুন্দর তা নির্বাচন করে রাখা হয়। তারপর সেই মেয়েদেরকে রুমে নিয়ে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেয়া হয়। খারাপ উদ্দেশ্যে তাদেরকে বিভিন্ন ধরনের প্রস্তাব দেয়া হয়। কিছুদিন আগে একজন মেয়ে কান্না করতে করতে এ বিষয়ে বিবৃতিও দিয়েছেন।
ছাত্রলীগের এই নেত্রী বলেন, আমাদের প্রশাসন, শিক্ষক, হল প্রভোস্টসহ সংশ্লিষ্ট সবাই এ ঘটনা সম্পর্কে সব কিছুই জানেন। কিন্তু সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে তারা জব্দ। কারণ এর আগে রিভা আপার এ বিষয়ে একটা অডিও ফাঁস হয়েছে। সেখানে আমাদের অধ্যক্ষ ম্যাডামকে নিয়ে তিনি বলেছেন যে, ম্যাডামের নাকি কোনো ক্ষমতা নেই। সব ক্ষমতা নাকি ছাত্রলীগের সভাপতি রিভার কাছে আছে। কিন্তু তখন আমরা এটার কোনো প্রতিবাদ করিনি। কারণ আমরা দল করি। আর দলের সুনাম ক্ষুণ্ন হোক, সেটা আমরা চাই না। বৈশাখী আরো বলেন, কলেজ শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দিন দিন এমন বৈরী আচরণ মেনে নেয়া যায় না। দিনের পর দিন এমন ঘটনা ঘটতে থাকলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে আমাদের ছাত্রলীগের ভাবমর্যাদা নষ্ট হয়ে যাবে। আমাদেরকে ছাত্রলীগের প্রতিনিধি বানানো হয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাহায্যের জন্য। সেখানে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাহায্য না করে যদি সিট-বাণিজ্য, মেয়ে বাণিজ্যসহ নানা অপকর্ম করি, তবে তো ইডেন কলেজেরও বদনাম হবে। একজন সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে নিরপেক্ষভাবে আমি এই বিষয়টা মানতে পারছি না।
ইডেন কলেজের প্রশাসনিক সব সিদ্ধান্তই কার্যক ছাত্রলীগের নেত্রীরা নিয়ে থাকেন। ফলে যারা হলে থাকেন তাদের বেশির ভাগকেই ছাত্রলীগের মিছিল ও কর্মসূচিতে বাধ্যতামূলকভাবে যেতে হয়। এ ছাড়াও যে নেত্রী সংগঠনটির শীর্ষ নেতাদের নারী সাপ্লাই দিয়ে মনজয় করতে পারবেন তাদের গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানো হয়। এ ছাড়াও হলের সিট বণ্টনসহ নানা কর্মকাণ্ডের প্রচুর আয় রোজগার হয়। ফলে নেত্রীদের মধ্যে ছাত্রলীগের পদ-পদবির জন্য প্রতিযোগিতা হয়ে থাকে।
কলেজ শাখা ছাত্রলীগের কমিটি হয়েছে অনেক আগেই। সম্মেলনের ২ বছর ৯ মাস পর চলতি বছরের ১৩ মে ইডেন মহিলা কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণার পরপরই সে রাতেই সংঘর্ষে জড়ায় ইডেন কলেজ ছাত্রলীগ। সেই যে সংঘর্ষের শুরু তা আজো থামেনি। কিছুদিন পরপরই নানা বিষয় নিয়ে মারধর ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। এসব ঘটনায় দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছে ইডেন কলেজ ছাত্রলীগ।
এরই ধারাবাহিকতায় গত শনিবার গণমাধ্যমে কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভা ও সাধারণ সম্পাদক সুলতানা রাজিয়ার অপকর্ম ফাঁস করায় ওই কলেজ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌসকে মারধর করা হয়। যাদের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ করা হয় তারা হলেন ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি নুজহাত ফারিয়া রোকসানা, আয়েসা সিদ্দিকা মিম, অনিকা তাবাসসুম স্বর্ণা, সিরিনা আক্তার, সোমা মল্লিক, জিনাত লিমা, ফেরদৌস, লুবনা, বিজলী আক্তার। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিতু আক্তার, সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুন নাহার জতি, ফারজানা ইয়াসমিন নিলা। তারা সবাই কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভা ও সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া সুলতানার অনুসারী বলে জানা যায়।
মারধরের ঘটনায় গত শনিবার একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি তিলোত্তমা শিকদার ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বেনজীর হোসেন নিশিকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে নেত্রীদ্বয়কে। তবে এদিন দুপুরে কলেজের শহীদ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং ওই তদন্ত কমিটিকে কলেজ ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন কলেজ ছাত্রলীগের ২৫ জন নেত্রী। এসময় তারা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভা ও সাধারণ সম্পাদক সুলতানা রাজিয়ার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা না নিলে গণপদত্যাগের হুঁশিয়ারি দেন। এছাড়াও রিভা-রাজিয়ার সিট-বাণিজ্য, চাঁদাবাজি, দেহ ব্যবসাসহ নানান অভিযোগ তুলে ধরেন নেত্রীবৃন্দ।
এর আগে শনিবার রাতে মারধরের শিকার সহ-সভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌসী অভিযোগ করেন তিনি হলের বাইরে থাকা অবস্থায় কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অনুসারীরা তার রুমে ঝামেলা করেন। পরে তিনি কলেজ ক্যাম্পাসে এলে রাত সাড়ে দশটার দিকে তাকে মারধর করা হয়। এসময় জান্নাতের সাথে থাকা মোবাইল ফোন, ১৫ হাজার টাকা ও একটি স্বর্ণের চেইন এবং তার সাথে থাকা বোনের হাতের আংটি কেড়ে নিয়ে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নিকট জমা দেন তাদের অনুসারীরা।
এ ঘটনার জেরে শনিবার মধ্যরাত থেকে কলেজ ক্যাম্পাসে উত্তেজনা বিরাজ করে। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অনুসারীরা ক্যাম্পাসে মিছিল বের করেন। গতকাল রোববার যাদের পরীক্ষা ছিল এবং পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে ব্যস্ত ছিলেন; হলের রুমে রুমে গিয়ে তাদেরকেও জোর করে মধ্য রাতে মিছিলে অংশ নিতে বাধ্য করেন রিভা-রাজিয়া। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ একাধিক শিক্ষার্থী বিষয়টি ইনকিলাবকে নিশ্চিত করেন। অন্যদিকে এসময় জান্নাতুল ফেরদৌসের অনুসারীরাও পাল্টা মিছিল করেন। তাদের অভিযোগ হলের বাইরে থাকা অনেক শিক্ষার্থীকে রাত ১১টা পর্যন্ত হলে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। কলেজের দারোয়ান কলেজের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের নির্দেশে তাদের হলে প্রবেশ করতে দেয়নি।
এর আগে গত ১৯ আগস্ট শিক্ষার্থীদের রুমে গিয়ে তাদের সাথে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের একটি অডিও গণমাধ্যম ফাঁস হয় ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভার। যেখানে নিজেকে কলেজের প্রিন্সিপালের চেয়েও ক্ষমতাধর দাবি করে শিক্ষার্থীদের সাথে ধৃষ্টতাপূর্ণ আচরণ করতে শোনা যায় রিভাকে। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে এর কিছুদিন পর গণমাধ্যমে কথা বলায় ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীদের হলছাড়া করেন রিভা। এ ঘটনায় কয়েকজন ছাত্রলীগ নেত্রী মুখ খুললে তাদেরকেও কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় হল কর্তৃপক্ষ। হল কর্তৃপক্ষের এমন একপাক্ষিক আচরণে ক্ষুব্ধ এসব নেত্রী অভিযোগ করে বলেন, হল অফিসে একটা সাইন করাতে গেলেও এই দুই নেত্রীর সুপারিশ ছাড়া হয় না। কলেজে প্রশাসন থাকলেও কার্যত; সব ক্ষমতার মালিক ছাত্রলীগের এই দুই রথি-মহারথী।
এদিকে আগস্টের ওই ঘটনায় আনঅফিসিয়ালি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বেনজীর হোসেন নিশিকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার কথা বলা হলেও আগস্ট মাসে সাংগঠনিক কোনো ব্যবস্থা নেয়ার বিধান নেই বলে ইনকিলাবকে জানিয়েছেন ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত এই নেত্রী। তবে আগস্ট পেরিয়ে সেপ্টেম্বর মাসও শেষ প্রায়। তবুও কোনো সমাধানের কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। অবশ্য নিশির দাবি, সম্প্রতি আপন ভাই ইন্তেকাল করায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন তিনি। যেকারণে এসব বিষয়ে নজর দিতে পারেননি। অবশেষে ইডেন কলেজের এসব সমস্যা সমাধানে গতকাল রোববার কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে দুই সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দুই ঘটনার তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
তদন্তের বিষয়ে বেনজীর হোসেন নিশি বলেন, আগের ঘটনায় আমরা তদন্ত অনেকটাই এগিয়েছি কিন্তু অফিসিয়ালি আমরা কিছু জমা দিতে পারিনি। আর এখনকার বিষয়টি নিয়ে কলেজের প্রিন্সিপাল ও ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের সাথে কথাবার্তা বলে আমরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে একটা রিপোর্ট জমা দিব।
আরেক সদস্য তিলোত্তমা শিকদার বলেন, আসলে দু’দিন পর পর কেন যে ইডেনের অবস্থা উত্তপ্ত হচ্ছে তা আমরা বুঝতে পারছি না। আমরা দায়িত্ব ছাড়াও এর আগে কয়েকবার গিয়ে বিষয়গুলো সমাধানের চেষ্টা করেছি কিন্তু সমাধান হয়নি। আজকে আমাদের তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে কিন্তু এখনো ইডেনের অবস্থা স্বাভাবিক নয়। বিভিন্ন গ্রুপে বিভিন্ন মেয়েরা নানান অভিযোগ তুলছেন। আমরা শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিযোগকারী ও অভিযুক্তদের সাথে কথা বলে আপনাদের জানাব। আমরা সাংগঠনিকভাবে এর ব্যবস্থা নেব। যারা দোষী রয়েছে তাদের অবশ্যই আমরা বিচারের আওতায় আনব।
তদন্ত কমিটি নিয়ে ২৫ নেত্রীর আপত্তিকর বক্তব্যের প্রতিবাদ করে তিলোত্তমা বলেন, আসলে এর আগে কোনো ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়নি। সুতরাং আমরা নিরপেক্ষ তদন্ত করিনি এমন অভিযোগ ভিত্তিহীন। এবারই প্রথমবারের মতো তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং আমরা দেখিয়ে দেব নিরপেক্ষ তদন্ত করতে পারি কি-না। যারা এ ধরনের অভিযোগ তুলছে তাদের বিরুদ্ধেও তো নানান অভিযোগ রয়েছে। সুতরাং আমরা সবদিক বিবেচনায় নিয়েই কাজ করব।
গতকাল সন্ধ্যায় আরেকটি সংবাদ সম্মেলনে ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভা বলেন, একটা সঠিক সুষ্ঠু তদন্ত হোক। আমরা চাই যারা প্রকৃত দোষী, সঠিক তদন্তের মাধ্যমে তাদের যেন বিচারের আওতায় আনা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে কথা বলার সময় ফের উত্তপ্ত হয়ে পড়ে কলেজ ক্যাম্পাস। সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপ। এসময় ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভাসহ সংঘর্ষে আহত হন আরো কয়েকজন। রিভাকে ধাক্কা দিয়ে ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেয়ার চেষ্টা করেন বিদ্রোহীরা। শুরু হয় সংঘাত-সংঘর্ষ। এ দৃশ্য টেলিভিশনগুলোর খবরে লাইভ প্রচার করা হয়। এতে কিছুক্ষণের জন্য হলেও দেশের মানুষ টিভির খবরে ইডেন মহিলা কলেজের খবর জানতে-শুনতে মরিয়া হয়ে উঠে।
ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌস গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা তাদের (সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভা ও সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া সুলতানা) কাছের মানুষ হতে পারিনি। তাই আমাদের নির্যাতন করা হচ্ছে। আমরা যারা তাদের ভুল ধরিয়ে দেই, তারাই শত্রু হয়ে গেছি। কারণে-অকারণে আমাদের হেনস্তা করা হচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এ ঘটনার বিচার না হলে আমি সুইসাইড করব। ছাত্রলীগের ওপর মহলে বিষয়গুলো জানানোর পরও কোনো সুরাহা হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি আমার জায়গা থেকে ছাত্রলীগের ওপর মহলে জানিয়েছি। আর সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য তো ফোনই রিসিভ করেন না। তাদের কীভাবে জানাব?
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন