টেকনাফের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে থামছেনা খুনাখুনি। গত বুধবার রাতেও এক রোহিঙ্গা যুবককে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। নিহত এরশাদ উখিয়া কুতুপালং ক্যাম্প-৪ এক্সটেনশনের এইচ বøকের বাসিন্দা।
এপিবিএন-১৪ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আনোয়ার বলেন, গত রাত সাড়ে তিনটার দিকে এক রোহিঙ্গা যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আমরা হত্যার কারণ অনুসন্ধানের চেষ্টা করছি এবং এর সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অতি দ্রæত সময়ের মধ্যে আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য অভিযান অব্যাহত রেখেছি। উখিয়া থানার ওসি শেখ মো. আলী বলেন, গত দু’দিনে ৩ জনকে হত্যা করেছে কিছু রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা। আমরা দ্রæততম সময়ের মধ্যে হত্যাকাÐের সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।
জানা যায়, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে, গত জুলাই মাস থেকে ৩ মাসে ১১ জন খুনের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ৫ জন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্বেচ্ছাসেবক (ভলেন্টিয়ার) হিসেবে কাজ করত। সন্ত্রাসীরা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্বেচ্ছাসেবক দলকে অকার্যকর করতে এবং সাধারণ রোহিঙ্গাদের মনোবল ভেঙ্গে দিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টির উদ্দেশ্যেই পরিকল্পিত টার্গেট কিলিংয়ের মতো ঘটনা ঘটাচ্ছে বলে অনেকেই মনে করেন। মিয়ানমারে নির্যাতিত ১২ লাখের মত রোহিঙ্গা গত ৫ বছর ধরে উখিয়া-টেকনাফের ৩৪টি ক্যাম্পে অবস্থান করছে। যখনই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে তুড়জোড় শুরু হয় তখনই মহল বিশেষ সীমান্তে অস্থিরতা সৃষ্টি করে।
এদিকে কিছু রোহিঙ্গাদের ক্যাম্পে গুম, খুন, অপহরণ, চাঁদাবাজি, ইয়াবা ব্যবসা, স্বর্ণ চোরাচালান ও সন্ত্রাসী কর্মকাÐে আশ্রয় ক্যাম্পগুলো অস্থির হয়ে উঠেছে। এসব কর্মকাÐ আইনশৃংখলা বাহিনীর প্রতি চ্যালেঞ্জ স্থানীয়ের মাঝে ভীতি ছড়িয়ে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিলম্বিত করাই তাদের মতলব বলে মনে করেন স্থানীয় সচেতন মহল। তাদের মতে, দ্রæত রোহিঙ্গাদেও নিজ দেশে প্রত্যাবাসন করাই সমস্যার একমাত্র সমাধান।
অপরাধীদের আড়াল করতে ফেসবুকে অপপ্রচার : এপিবিএন
উখিয়া (কক্সবাজার) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চার মাঝি খুনের ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন মোহাম্মদ হাশিম নামে এক রোহিঙ্গা তরুণ। এ প্রসঙ্গে গতকাল বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিয়োজিত এপিবিএনের সহকারী পুলিশ সুপার মো. ফারুক আহমদ জানান, গত বুধবার ফেসবুক লাইভে হাসিমের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সংঘটিত কয়েকটি হত্যাকাÐের বক্তব্য যাচাই বাছাই করে এপিবিএন। পুলিশ ঐ সন্ত্রাসীকে গ্রেফতারের চেষ্টা করছে এবং গোয়েন্দা নজরদারির মাধ্যমে তার অবস্থান নিশ্চিত করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়, বিভিন্ন উৎস থেকে প্রাপ্ত অপরাধ গোয়েন্দা তথ্য যাচাই-বাছাই করে প্রাথমিকভাবে জানা যায়, হাসিমের বক্তব্য সঠিক নয়। প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করতে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে বা কারো প্ররোচনায় হাসিম এ ধরনের অপপ্রচার চালিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তার পরেও হাসিমের বক্তব্যকে গুরুত্বসহকারে গ্রহণ করে তাকে আইনের আওতায় এনে প্রকৃত রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন