পদ্মার ভাঙনে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার ৭টি ফেরি ঘাটের মধ্যে ৪টি বন্ধ হয়ে গেছে। এদিকে বিআইডবিøউটিএর আরিচা অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জহিরুল ইসলাম জানান, গত বুধবার রাত থেকে পদ্মার ভাঙনে উপজেলার দৌলতদিয়া ৩ নম্বর ফেরি ঘাটের সিদ্দিকপাড়া এলাকার ১০০ মিটার এলাকা বিলীন হয়ে গেছে।
গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ৩ নম্বর ঘাটটি সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের এখানে সাতটি ঘাট আছে। এর মধ্যে ৩ ও ৫ নম্বর ঘাটে এই মুহূর্তে সমস্যা দেখা দিছে। ৩ নম্বর ফেরি ঘাট এলাকায় ভাঙন শুরুর পর থেকেই কাজ শুরু হয়েছে। তবে ভাঙন তো পুরোটা প্রতিরোধ করা যাবে না, তারপরও যতটা সম্ভব চেষ্টা করছি। ৭টি ঘাটের মধ্যে এখন ৪, ৬ ও ৭ নম্বর ঘাট দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে।
সরেজমিনে জানা গেছে, হঠাৎ করে ৩ নং ফেরিঘাট এলাকা সিদ্দিক কাজী পাড়ায় নদীভাঙন দেখা দিয়েছে এতে নদী পাড়ে বসবাসরত ৬টি পরিবারের ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়েছে। এতে করে নদীর পাড়ে বসবাস করা অন্য পরিবারগুলোর মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। চরমভাবে ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে ফেরিঘাট ও লঞ্চ ঘাটও। ভাঙন রোধে যে সকল জিও ব্যাগ ও বালু ব্যবহার করা হচ্ছে সে সকল সামগ্রী নিম্নমানের বলে অভিযোগ উঠেছে। পাড়ের মানুষের দাবি নদীতে জিওব্যাগগুলো ডাম্পিং করে ফেলা হলে ভাঙন রোধ কার্যকর হবে।
নদী পাড়ের বাসিন্দা নুরু কাজী বলেন, আমার বাড়ি নদীতে দু’বার বিলীন হয়েছে। এখন আবার নদী পাড়ে পড়ে গেছি, কখন যে আবার নদীগর্ভে চলে যায় বসত-ভিটা। সব সময় আতঙ্কে থাকতে হয়। শারমিন আক্তার বলেন, আমরা রাতে খাবার খেয়ে ঘুমি পড়েছি। হঠাৎ করে ঘরে পিছনে নদীর চাপ ভাঙার শব্দ কানে আসে তখন ওঠে গিয়ে দেখি বিশাল বিশাল চাপ নদীতে চলে যাচ্ছে। এলাকার সবার সহযোগিতায় আমাদের ঘর গুলো কোন রকম সরিয়ে নিয়েছি।
নিছা বেগম বলেন, তিন-চারবার বাড়ি-ঘর ভাঙছে। এখন কিছুই নেই। আমারা কিভাবে বাঁচবো। আমাদের নদী শাসন করে দেয় না। যেটুকু ছিলো সেটাও নদীতে চলে গেলো। সরকারের কাছে দাবি জানাই, দ্রæত ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নিক।
ঘাটের আধুনিকায়ণ নিয়ে কোনো পরিকল্পনা রয়েছে কি না জানতে চাইলে বিআইডবিøউটিএর প্রকৌশলী জহিরুল বলেন, এক হাজার ৩৫১ কোটি টাকার ঘাট আধুনিকায়ণ প্রকল্পের কাজ আটকে আছে বুয়েটের ডিজাইনের ওপর। ডিজাইন হাতে পেলেই স্থায়ী কাজ শুরু হবে। বিআইডবিøউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট শাখার সহকারী ব্যবস্থাপক মো. নাসির হোসেন জানান, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ছোট-বড় মিলে ২১টি ফেরি আছে। এর মধ্যে ১২টি ফেরি দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। বর্তমানে ৪, ৬ ও ৭ নম্বর ঘাটে ফেরিগুলো ভিড়ছে। তবে যানবাহনের চাপ না থাকায় এবং ফেরি কম চলার কারণে ফেরিগুলোকে ঘাটে ভিড়তে কোনো সমস্যায় পড়তে হচ্ছে না বলে জানান তিনি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন