সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও ব্যাপক উৎসব মুখর পরিবেশে আজ শনিবার থেকে শুরু হচ্ছে। অশুভ শক্তির নাশ এবং সত্যকে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বলে দেবী দুর্গাকে দুর্গতি নাশিনী বলা হয়। মহিষাসুরের অসুর বাহিনীকে পরাজিত করেছিলেন বলে তাকে মহিষাসুর মোদিনী বলা হয়ে থাকে। বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এ পূজা হচ্ছে। রাজধানীতে ২৪২টি পূজামÐপসহ সারা দেশে ৩২ হাজার ১৬৮টি পূজামÐপে দুর্গাপূজার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। মহানগর পূজা উদযাপন কমিটি নিরাপত্তার মাধ্যমে পূজা উদযাপনের আশাবাদ ব্যক্ত করেছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সারা দেশের পূজামÐপে পাহারা দেয়ার জন্য দলীয় নেতা কর্মীদের অনুরোধ জানিয়েছেন। আইন শৃঙ্খলা বাহিনী পূজামÐপগুলোতে নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে।
শনিবার মধ্যরাতে ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে এই উৎসব শুরু হবে এবং আগামী ৫ অক্টোবর বুধবার বিজয়া দশমীতে প্রতিমা নিরঞ্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে। দুর্গাদেবী এবার গজে আগমন করবেন এবং নৌকায় গমন করবেন। এই পাঁচ দিন প্রতিটি মন্দিরে পূজা-অর্চনা, ঢাকের বাজনা, শঙ্খ ধ্বনি, উলুর ধ্বনি, সন্ধ্যায় আরতি, প্রসাদ বিতরণ করা হবে। মন্দির প্রাঙ্গণে দর্শকদের ভীড় পরিলক্ষিত হবে। গত বছরের চেয়ে এবার ৫০টি মন্ডপ বেশি। এছাড়া নয়টি উপজেলার মধ্যে রূপসায় ৭৬টি, তেরখাদায় ১০৯টি, দিঘলিয়ায় ৬০টি, কয়রায় ৫৬টি, পাইকগাছায় ১৫৪টি, ডুমুরিয়ায় ২০৬টি, ফুলতলায় ৩৪টি, দাকোপে ৮৫টি ও বটিয়াঘাটায় ১১৫টি মন্ডপে পূজা উৎসব পালিত হবে। আগামী ৫ অক্টোবর সরকারি ছুটির দিন। ইতোমধ্যেই প্রতিমা তৈরির ও মন্দিরের সাজসজ্জার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এ উপলক্ষে প্রেসিডেন্ট মো. আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন। বাংলাদেশ টেলিভিশন, বেতার ও বিভিন্ন টেলিভিশনের চ্যানেলে দুর্গাদেবীর আগমন উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠান মালার আয়োজন করেছে।
বাল্মিকীমুনির রামায়ণ থেকে জানা যায়, ত্রেতা যুগে অযোধ্যার রাজা দশরথের পুত্র শ্রীরামচন্দ্র পিতৃসত্য পালনে স্ত্রী সীতা ও ভাই লক্ষণসহ ১৪ বছর বনে বাস করেন। এ সময় লঙ্কার রাজা রাবণ সীতাকে অপহরণ করেন। সীতা উদ্ধারের জন্য রাবণকে বধ করার সময় শ্রীরামচন্দ্র শরৎকালে অকাল বোধন করে শ্রী শ্রী দুর্গাপূজার আয়োজন করেন। তখন থেকেই শরৎকালে মা দুর্গাকে অকাল বোধন পূজা করা হচ্ছে। বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ খুলনা মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক প্রশান্ত কুমার কুন্ডু জানিয়েছেন, শনিবার থেকে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় অনুষ্ঠান শারদীয় দুর্গাপূজা শুরু হচ্ছে। ইতিমধ্যে মহানগরের সকল মন্দিরে প্রতিমা তৈরি কাজ শেষ হয়েছে। আগামী ৫ অক্টোবর বিজয় দশমী পূজা শেষে প্রতিমা নিরঞ্জনের মধ্যদিয়ে শেষ হবে এ অনুষ্ঠান। এ অনুষ্ঠান সাফল্য মন্ডিত ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন করার জন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, প্রশাসন, এলাকার জনপ্রতিনিধিসহ সকলের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন