বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

গুলশানে ২৮৪০-ধানমন্ডিতে ২৫০০ শতাংশ বেড়েছে জমির দাম

আইপিডি আয়োজিত সংলাপে দুই দশকে ঢাকার জমির চিত্র

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১ অক্টোবর, ২০২২, ১২:০২ এএম

দুই দশকে রাজধানী ঢাকার জমির দাম হুহু করে বেড়েছে। অভিজাত এলাকা হিসেবে পরিচিত গুলশানে জমির দাম বেড়েছে ২৮৪০ শতাংশ বেড়েছে। ধানমন্ডিতে বেড়েছে ২৫০০ শতাংশ, মিরপুরে ১৪২ শতাংশ। এতে করে মধ্য ও নিম্নবিত্তদের জন্য আবাসন নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়েছে। গতকাল শুক্রবার ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইপিডি) আয়োজিত সংলাপে এসব তথ্য জানানো হয়। আসন্ন বিশ্ব বসতি দিবস উপলক্ষে ‘ঢাকা মহানগরীতে সকলের জন্য মানসম্মত আবাসন : প্রেক্ষিত ও করণীয়’ শীর্ষক সংলাপের আয়োজন করে আইপিডি।
সংলাপে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান। তিনি বলেন, দুই দশকে ধানমন্ডি এলাকায় ফ্ল্যাটের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে ৬২০ শতাংশ। গুলশানে ৭১৬, মিরপুরে ৩০০, শান্তিনগরে ৪৭৩ এবং উত্তরায় ৪২৫ শতাংশ বেড়েছে। একইভাবে ধানমন্ডিতে কাঠা প্রতি জমির দাম বেড়েছে ১৫০০ শতাংশ। গুলশানে বেড়েছে ২৮৪০ শতাংশ, শান্তিনগরে ও উত্তরায় বেড়েছে ১০০০ শতাংশ।
অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, অপরিকল্পিত শিল্পায়ন ও অর্থনৈতিক কর্মকাÐ ঢাকার আবাসনের ওপর ক্রমাগত চাপ ফেলেছে। একই সঙ্গে ঢাকামুখী অভিগমনও অন্যতম কারণ। আমাদের শিল্পায়ন-অর্থনীতি-বাণিজ্যিক কর্মকাÐের সঙ্গে সঙ্গে আবাসন পরিকল্পনার সংযোগ করতে আমরা পারিনি। এর আগে ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ও ভৌত পরিকল্পনার সঙ্গে জনঘনত্ব ও নাগরিক সুবিধাদির সংস্থানের কোনো সংযোগ রাখা হয়নি। তিনি আরো বলেন, বিভিন্ন আইন-বিধি-পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে নেওয়া পরিকল্পনার স্ট্যান্ডার্ড বা মান আধুনিক নগর গড়তে সহায়ক নয়। ফলে সার্বিকভাবে সবার জন্য মানসম্মত ও সাশ্রয়ী আবাসন যেমন নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি, তেমনি সার্বিকভাবে জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ চরম সংকটে পড়েছে।
ঢাকায় প্লট ভিত্তিক আবাসন প্রকল্পকে বন্ধ করে ফ্ল্যাট ও বøকভিত্তিক আবাসিক প্রকল্প তৈরির তাগিদ দিয়ে অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, এক্ষেত্রে বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনার প্রস্তাবনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে নাগরিক সুবিধাদি নিশ্চিত করে ক্রমান্বয়ে ঢাকায় মানসম্পন্ন আবাসন নিশ্চিত করা সম্ভব।
বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনার (ড্যাপ) প্রকল্প পরিচালক পরিকল্পনাবিদ মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, বৈশ্বিক শহরগুলোর তুলনায় ড্যাপে এফএআর মান তুলনামূলক বেশি দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে তিনি মালয়েশিয়া, ভারত, পাকিস্তানের শহরগুলোর তুলনা তুলে ধরেন। মালয়েশিয়াতে প্লটকেন্দ্রিক উন্নয়নকে নিরুৎসাহিত করে বøক ডেভেলপমেন্ট করে একদিকে যেমন উন্মুক্ত স্থান, নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে, পাশাপাশি নিম্ন আয়ের লোকদের জন্য আবাসন ইউনিট তৈরি করা হয়েছে। তিনি বলেন, এবারের ড্যাপে এ ধরনের প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। পূর্বের রুরাল সেটেলমেন্ট জোনসহ অনেক এলাকায় আগের চেয়ে বেশি উচ্চতার ভবন করার প্রস্তাবনাও আছে ড্যাপে। অসত্য তথ্য দিয়ে যারা ড্যাপকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চাচ্ছে, সামগ্রিক জনস্বার্থের চেয়ে ব্যবসায়িক স্বার্থেই কথা বলছেন তারা। মানসম্মত আবাসন ও বাসযোগ্য নগর গড়তে যে কোনো ভালো প্রস্তাবনা ড্যাপে আত্তীকরণ করার সুযোগ আছে বলে মন্তব্য করেন রাজউকের এই পরিকল্পনাবিদ।
আইপিডির উপদেষ্টা ও পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আকতার মাহমুদ বলেন, ঢাকার আবাসন চাহিদা ও জোগানের আলোচনা হওয়া উচিত মূলত নিম্ন ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত শ্রেণিকে কেন্দ্র করে। অথচ ড্যাপ নিয়ে ভবনের উচ্চতা কিংবা এফএআর (ভ‚মির সাপেক্ষে ভবনের মোট মেঝের ক্ষেত্রফলের অনুপাত) সংক্রান্ত আলোচনার মূল কেন্দ্রে আছে উচ্চবিত্ত কিংবা উচ্চ-মধ্যবিত্তরা। তিনি আরো বলেন, জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষসহ অনেক সরকারি আবাসন প্রকল্পে খেলার মাঠ বা নাগরিক সুবিধাদির জন্য বরাদ্দকৃত জমিকে অবৈধভাবে প্লটে রূপান্তরিত করা হয়েছে।
সংলাপে অন্যানের মধ্যে বক্তৃতা করেন পরিকল্পনাবিদ ড. চৌধুরী মো. জাবের সাদেক, অধ্যাপক ড. শাম্মী আকতার সেতু প্রমুখ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন