শারদীয় দুর্গোৎসবের মহাষ্টমীতে গতকাল সারা দেশের পূজামণ্ডপগুলোতে নানা আচার অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। করোনা বিধিনিষেধের কারণে দুই বছর পর সাড়ম্বরে উদযাপন করা হলো এ পূজা। আশীর্বাদ ও প্রার্থনায় মন্দিরে মন্দিরে ভিড় করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এবারের পূজায় সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা খুশি। সোমবার বৃষ্টিস্নাত ভোরে অঞ্জলি আর কুমারী পূজার আয়োজনে সুগন্ধি চন্দন, পুষ্পমালা, ধূপদীপে সমারোহে উদযাপিত হয়েছে মহাষ্টমীর অর্চনা।
শুদ্ধ বস্ত্র আর পুষ্পাঞ্জলি মন্ত্র নিয়ে সবার মঙ্গল কামনার মন্ত্র পাঠের মধ্য দিয়ে চলে অঞ্জলি দেয়ার আচার আচরণ। দেবীদুর্গা সব নারীর মধ্যে মাতৃরূপে আছেন এ উপলব্ধি সকলের মধ্যে জাগ্রত করার জন্যই কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। ষোলো বছর পর্যন্ত কুমারীর মধ্যে মাতৃভাব প্রতিষ্ঠাই এ পূজার মূল লক্ষ্য। পরে অষ্টমী ও নবমীর সন্ধিক্ষণে অনুষ্ঠিত হবে সন্ধি পূজা। ১০৮টি মাটির প্রদীপ ও ১০৮টি পদ্মফুল উৎসর্গ করে দেবীর পূজা করা হবে।
কুমারী পূজা হলো এক বিশেষ ধরনের পূজা। যে পূজায় এক কিশোরী কন্যাকে দেবীর আসনে বসিয়ে মাতৃরূপে পূজা-অর্চনা করা হয়। শঙ্খের ধ্বনি, কাঁসর ঘণ্টা, ঢাকের বাদ্য, উলুধ্বনির মধ্য দিয়ে কুমারী মাকে পুষ্পমাল্য পরিয়ে দেয়া হয়। অষ্টমী তিথির পূজা শেষে হয় কুমারী পূজা। অষ্টমী ছাড়াও অনেক জায়গায় নবমীর দিনেও করা হয় কুমারী পূজা। কালী পূজা, জগদ্ধাত্রী পূজা, অন্নপূর্ণা পূজা এমনকি শক্তি পূজাতেও কুমারী পূজা করা হয়।
হিন্দু শাস্ত্র অনুযায়ী, মা কালীর হাতে কলাসুর বধের প্রতীকী হলো কুমারী পূজা। কথিত রয়েছে, কলাসুর স্বর্গ ও মর্ত্য অধিকার করে নিয়েছিল। দেবতারা মা কালীর কাছে উদ্ধারের জন্য প্রার্থনা করেন। তাদের আর্তি শুনে মা কালী আবার জন্ম নেন শিশুকন্যা রূপে এবং কলাসুরকে বধ করেন। এ পূজার বৈশিষ্ট্য হলো কুমারীকে পূজা করার সময় দেখা হয় না তার ধর্ম, জাত-পাত। এখনো ঋতুবতী হয়নি ১ থেকে ১৬ বছর বয়সী যেকোনো মেয়েই কুমারী হতে পারে। এমনকি বারবনিতার সন্তানও কুমারীরূপে পূজিত হতে পারে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন