অবশেষে বহুল আলোচিত ছাত্রলীগ নেতা সুদিপ্ত বিশ্বাস হত্যা মামলার বিচার শুরু হয়েছে। মামলার অভিযোগপত্র জমা দেয়ার এক বছর সাত মাস পর ছয়বার পিছিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা দিদারুল আলম মাসুমসহ ২৪ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। গতকাল সোমবার চট্টগ্রামের দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. আমিরুল ইসলামের আদালতে অভিযোগ গঠন করে আগামী ৩০ অক্টোবর থেকে সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য্য করা হয়। হত্যাকাণ্ডের পাঁচ বছর পর এ মামলার বিচার প্রক্রিয়া শুরু হলো।
চট্টগ্রাম মহানগর আদালতের পিপি মো. ফখরুদ্দিন চৌধুরী জানিয়েছেন অভিযোগ গঠনের আবেদনের ওপর শুনানি শেষে আদালত ২৪ আসামির সবার বিরুদ্ধে ৩০২ ধারায় অভিযোগ গঠন করেছেন। আগামী ৩০ অক্টোবর মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর দিন ধার্য করা হয়। অভিযোগ গঠনের সময় ২৩ জন আসামি আদালতে হাজির ছিলেন। আবু জিহাদ সিদ্দিকী নামে একজন আসামি অনুপস্থিত থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
এই মামলার আসামিদের মধ্যে মো. মামুন নামের একজন ছাড়া বাকিরা জামিনে আছেন। ২০১৭ সালের ৬ অক্টোবর নগরীর সদরঘাট থানার দক্ষিণ নালাপাড়ার নিজ বাসার সামনে মহানগর ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক সুদিপ্ত বিশ্বাসকে পিটিয়ে খুন করা হয়। এ ঘটনায় তার বাবা অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক মেঘনাথ বিশ্বাস বাদি হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছিলেন। সাড়ে তিন বছর তদন্তের পর ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগ নেতা দিদারুল আলম মাসুমসহ ২৪ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন।
মামলার অভিযোগপত্রে নগরীর লালখানবাজার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম মাসুমকে সুদিপ্ত হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে উল্লেখ করা হয়। আর কিলিং মিশনে নেতৃত্ব দেন আইনাল কাদের নিপু। ফয়সাল আহমেদ পাপ্পুর আঘাতে সুদিপ্ত মারা যান বলে অভিযোগপত্রে বলা হয়।
বিচারের মুখোমুখি হওয়া আসামিরা সবাই দিদারুল আলম মাসুমের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। ফেসবুকে লেখালেখির কারণে দিদারুল আলম মাসুমের নির্দেশে সুদিপ্তকে খুন করা হয়েছে বলে শুরু থেকেই অভিযোগ করে আসছিলেন নগর ছাত্রলীগের নেতারা। মিজানুর রহমান নামে এক আসামিও জবানবন্দিতে ‘বড় ভাই’ মাসুমের নির্দেশে খুনের কথা উল্লেখ করেন বলে গণমাধ্যমে তথ্য আসে। আসামিদের মধ্যে দিদারুল আলম মাসুমসহ ১৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এদের মধ্যে চারজন আদালতে জবানবন্দি দেন।
এদিকে বিচার শুরুর আদেশ আসায় সন্তোষ প্রকাশ করে সুদিপ্ত বিশ্বাসের বাবা মেঘনাথ বিশ্বাস বলেন, পাঁচ বছর ধরে ছেলে হত্যার বিচারের অপেক্ষায় আছি। আদালতে অনেকবার সময় পেছানো হয়েছে। আসামিরা অনেক প্রভাবশালী ও টাকাওয়ালা। আমি নিরীহ শিক্ষক। আমি চাই, দ্রুত বিচার কার্যক্রম শেষ হোক। আসামিরা যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পায়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন