শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

বিপুল রাজস্ব হারাচ্ছে এনবিআর

মো. জাহিদুল ইসলাম | প্রকাশের সময় : ৪ অক্টোবর, ২০২২, ১২:০১ এএম

ভুয়া অডিট রিপোর্ট : ৯ নিরীক্ষকের সিওপি স্থগিত
অভিযুক্ত নিরীক্ষকদের ক্ষোভ, পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ
নিয়ম মেনেই ব্যবস্থা : আইসিএবি’র চেয়ারম্যান
বিশ্লেষকদের মত : নজরদারি বাড়ানোর বিকল্প নেই

বিগত ২০২১-২২ অর্থবছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) রেকর্ড ৩ লাখ ১ হাজার ৬৩৪ কোটি টাকার রাজস্ব আহরণ করলেও ঘাটতি দাঁড়িয়েছিল ২৮ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের (২০২২-২৩) প্রথম দুই মাসেও রাজস্ব ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ৩১৯ দশমিক ৪৪ কোটি টাকা। বিশ্লেষকেরা এ বিষয়ে পরিকল্পনার ঘাটতি, বকেয়া পাওয়া আদায়ে ব্যর্থতা, মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে যাওয়াসহ বিভিন্ন বিষয়কে দায়ী করে থাকেন। তবে সেইসঙ্গে এই ব্যর্থতার নেপথ্যে নিরীক্ষকদের নেতিবাচক ভূমিকাকেও অস্বীকার করা যায় না। প্রতি অর্থবছরে ভুয়া অডিট রিপোর্টে কত টাকা রাজস্ব বঞ্চিত হয় এনবিআর-তার সুনির্দিষ্ট কোন গবেষণা বা পরিসংখ্যান না থাকলেও সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, ভুয়া অডিট রিপোর্টে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আদায় কম হচ্ছে। এক্ষেত্রে নজরদারি বাড়ানোর আহ্বান তাদের।
চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টের ভুয়া তথ্য ও পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে তৈরি হচ্ছে এসব অডিট রিপোর্ট। এতে মোটা অঙ্কের রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, অডিট রিপোর্ট দেয়ার যোগ্যতা রাখা এসব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট বছরে ২২ হাজার প্রতিষ্ঠানের অডিট রিপোর্ট দিয়ে থাকেন। সে হিসাবে বৈধ অডিট রিপোর্ট আছে ২২ হাজার প্রতিষ্ঠানের। তবে এনবিআরের কাছে রিটার্ন জমা দেয়া প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৫৫ হাজার। অর্থাৎ ৩৩ হাজার প্রতিষ্ঠান এনবিআরের কাছে ভুয়া অডিট রিপোর্ট জমা দিচ্ছে।
এনবিআরের এক কর্মকর্তা বলেন, রিটার্ন জমা দেয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে বড় একটা অংশই ভুয়া অডিট রিপোর্ট জমা দেয়। এ ধরনের অভিযোগ আনেক আগে থেকেই আছে। ভুয়া তথ্য ও পরিসংখ্যান দিয়ে তৈরি করা এসব অডিট রিপোর্টের কারণে কোম্পানিগুলোর প্রকৃত আয়ের চিত্র পাওয়া যায় না। মূলত কর ফাঁকি দেয়ার জন্য এসব প্রতিষ্ঠান এমন অনৈতিক কাজ করে। এতে সরকার বিপুল অঙ্কের রাজস্ব হারাচ্ছে।
ওই কর্মকর্তা আরও জানান, বাংলাদেশ ব্যাংক, রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মস (আরজেএসসি) ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনসহ (বিএসইসি) সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর সহায়তায় ভুয়া অডিট রিপোর্ট চিহ্নিত করার উদ্যোগ নেয়া হয়। তবে যে কারণেই হোক এখনও ভুয়া অডিট রিপোর্ট জমা দেয়া বন্ধ হয়নি।
অন্যদিকে নিরীক্ষকদের শিক্ষা এবং মান সংরক্ষণের ব্যাপারে সার্বক্ষণিক নজরদারীর দায়িত্ব দি ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড একউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশের (আইসিএবি)। সংস্থাটি নিরীক্ষকদের জন্য মান, আইন ও বিধি তৈরি করে হিসাব ও নিরীক্ষার সঠিক মান নিয়ন্ত্রণে। সম্প্রতি নিয়ম ভঙ্গের অভিযোগে ৪৩টি নিরীক্ষা ফার্মের ৫০ জন নিরীক্ষকের বিরুদ্ধে কাজের গুণগত মান তদন্ত করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে ফাইনানশিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিলের (এফআরসি) পক্ষ থেকে আইসিএবিকে চিঠি দেয়া হয়।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশন সিস্টেমের (ডিভিএস) তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যাচ্ছে, অত্র দফতর থেকে যে ৫০ জন নিরীক্ষকের নিরীক্ষা কাজের ব্যাপারে তদন্ত করতে অনুরোধ করা হয়েছে তারা সম্মিলিতভাবে ১৭ হাজার ৪১টি নিরীক্ষা প্রতিবেদন প্রদান করেছেন। যা অধিকাংশই কোনরকম নিরীক্ষা না করেই সংস্থাসমূহের তৈরি আর্থিক বিবরণীকে সত্য ও গ্রহণযোগ্য বলে প্রত্যয়ন করা হয়েছে। চলতি আগস্টের ৩১ তারিখ পর্যন্ত ডিভিএসে রক্ষিত মোট ৪১ হাজার ৮২টি নিরীক্ষা প্রতিবেদন প্রায় ৪০০ নিরীক্ষক দ্বারা সম্পন্ন করা হয়েছে। অথচ মাত্র ৫০ জন নিরীক্ষক ১৭ হাজার ৪১টি নিরীক্ষা প্রতিবেদন প্রদান করেছেন যা নিরীক্ষা কাজের গুণগত মান অক্ষুন্ন রেখে কোনভাবেই করা সম্ভব না। সার্টিফিটেক অব প্রাকটিস (সিওপি) ধারী নিরীক্ষকদের এ ধরনের নিরীক্ষা প্রতিবেদন প্রদান করার কারণে সরকারের রাজস্ব আহরণ, ব্যাংকের ঋণ ব্যবস্থাপনা, শেয়ারবাজারের উপর বিরূপ প্রভাবসহ পেশাদার একাউন্টেন্টসদের সুনাম ক্ষুন্ন করেছে।
এতে আরও উল্লেখ করা হয়, উক্ত ৫০ জন নিরীক্ষকদের সর্বমোট ৯ হাজার ২৩টি নিরীক্ষা প্রতিবেদন প্রদান করেছিলেন। তাদের বিরুদ্ধে আপনাদের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণে বিলম্বের কারণে আরও প্রায় ৭ হাজার ৮২০টি একই ধরনের নিরীক্ষা প্রতিবেদন করার সুযোগ পেয়েছে। এখনও তাদের অনেকেই কোন ধরনের নিরীক্ষা কাজ না করেই নিরীক্ষা প্রতিবেদন প্রদান অব্যহত রেখেছেন যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। অভিযুক্ত ৫০ জন নিরীক্ষক প্রায় ৪১ দশমিক ৪৮ শতাংশ নিরীক্ষা প্রতিবেদন প্রদান করেছেন এবং বাকী ৩৫০ জন নিরীক্ষক ৫৮ দশমিক ৫২ শতাংশ নিরীক্ষা প্রতিবেদন প্রদান করেছেন। যা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
এ পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে সরকারের রাজস্ব আদায়ে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে উল্লেখ করে আইসিএবি’র চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন এফসিএ বলেন, এই প্রক্রিয়ায় রাজস্ব আদায় বাড়বে। অডিট রিপোর্ট, অ্যাকাউন্টসহ বিভিন্ন প্রক্রিয়া মিলেইতো একটি রাষ্ট্রের রাজস্ব। তবে আমাদের পার্টে যতটুকু আছে, তাতে আমরা আশাবাদী। এই খাতে শৃঙ্খলা আসলে রাজস্ব আদায়ে একটি ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে বলে আশা করেন তিনি।
তবে আইসিএবি’র বিরুদ্ধে অভিযোগের তীর ছুড়েছেন অভিযুক্তরা। সংস্থাটির বিরুদ্ধে অযোগ্যতা, দুর্নীতি এবং স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ করেছেন তারা। ফেইক এবং একাধিক অডিট রিপোর্ট বন্ধ করার জন্য ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশন সিস্টেম (ডিভিসি) চালু করে। নতুন এই সিস্টেম নিয়ে কোন প্রচারণা ও সচেতনতা কার্যক্রম না চালিয়ে সম্প্রতি ৯ জন নিরীক্ষকের সিওপি বা নিরীক্ষার সনদ স্থগিত করেছে সংস্থাটি। পাশাপাশি অসংখ্য নিরীক্ষকের ডিভিসি সুবিধা লক করে রেখেছে। নিরীক্ষা পেশার মানোন্নয়ন এবং সক্ষমতা বাড়ানোর চেষ্টা না করে, সার্বিক অবস্থা মূল্যায়ন না করে কিসের ভিত্তিতে এই সনদ বাতিল করা হয়েছে, ডিভিসি লক করা হয়েছে, তা নিয়ে ক্ষোভ ও ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।
ভুক্তভোগীদের মধ্যে কয়েকজন এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুপ্রীম কোর্টে মামলাও করেছেন। তাদের দাবি, ডিভিএস চালু করার সময়ে মাত্র একবার এ বিষয়ে একটি টেকনিক্যাল প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। তাছাড়া এর আওতাধীন বিষয়ে কোন সেমিনার, কার্যপরিধি কিংবা এর ব্যত্যয় ঘটলে করনীয় সম্পর্কে কোন ধারণা দেয়া হয়নি। ভুক্তভোগী নিরীক্ষকদের দাবি, অধিক সংখ্যক যে নিরীক্ষা প্রতিবেদনের সূত্র ধরে এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে, তা পক্ষপাতদুষ্ট। আলাপকালে জানা যায়, শুধু সংখ্যা দিয়েই তাদের নিরীক্ষা প্রতিবেদন মূল্যায়ন করা হয়েছে। কিন্তু দেখা হয়নি তারা কোন প্রতিষ্ঠানের হিসাব করেছেন। তাদের দাবি, তারা এক মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের হিসাব করেছেন বেশি। এছাড়া তাদের অডিট ফার্মে কর্মরত কর্মী বা ছাত্রের সংখ্যাও বেশি। তাই তাদের পক্ষে এই কাজ করার মানে না দেখে অডিট করা নয়। তারা জানান, আইসিএবি’কে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য এফআরসি গঠন করার পর থেকে আইসিএবি নিজের দ্বায়িত্ব এড়াতে হঠাৎ করেই কিছু প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে খড়গহস্ত হন। নিজেদের আর্থিক সুবিধা ও জবাবদিহিতা এড়াতে অন্য ফার্মের উপর শাস্তি আরোপ করে আইওয়াশ চালাচ্ছেন।
মোস্তফা কামাল এফসিএ, আতা করিম এফসিএ, আমিনুল ইসলাম এফসিএসহ মোট ৯ জনের সিওপি বাতিল করেছে আইসিএবি। তাদের দাবি, আইসিএবি সভাপতি ও কাউন্সিলের সদস্যরা একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছেন। এছাড়া কাউন্সিলের সদস্য ও তাদের আশীর্বাদপুষ্টরা তাদের ফার্মের মাধ্যমে যাতে কাজ বাগিয়ে নিতে পারেন, সেজন্য করা হয়েছে এই অবিচার।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সাময়িক নিবন্ধন স্থগিতকৃত অডিট ফার্মের কিছু পার্টনার বা সিইওরা অনেকেই বলেন, নিরীক্ষন ফার্মগুলো শৃঙ্খলা আনতে গিয়ে চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন ব্যক্তি মালিকানাধীন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান আজ চরম হয়রানির শিকার হচ্ছেন শুধু তাদের ব্যবসায়ীক অডিট করতে না পারার কারণে। বিশেষ করে ব্যাংকিং করতে গিয়ে তারা সবাই ব্যবসায়ীকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। যেখানে আইসিএবির কাজ ছিলো অডিট ফার্মগুলোকে শক্তিশালী করা, নিবন্ধনকৃত চার্টাড অ্যাকাউন্টেটদের বাইরে যেন কোন প্রকার অডিট রিপোর্ট না আসে সেদিকে নজরদারি বাড়ানো কিন্তু তারা উল্টো কাজটি করেছেন। কিছু ফার্ম সিন্ডিকেট করে কয়েকগুন বেশি হারে ফি আদায় করে নিচ্ছে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের হতে। নিরীক্ষা না করতে পেরে ট্যাক্স রিটার্ন, ব্যাংক লোন, আমদানী রফতানির লাইসেন্স নবায়ন করা সম্ভব হচ্ছে না। আগের চেয়ে এখন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অডিট করতে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে বলেও জানান তারা।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আইসিএবি’র চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন এফসিএ বলেন, যারা একটু উল্টা-পাল্টা বিশেষ করে আমাদের অ্যাকাউন্টিং অডিটিং স্ট্যান্ডার্ড ফলো করে যারা অডিট করছে না, বা করে, যাদের বিরুদ্ধে প্রমান পাচ্ছি; তাদেরকে বিরুদ্ধে নিয়ম মেনে কাউন্সিল শাস্তি দেয়। এই প্রক্রিয়াটা লম্বা। কাউকে যাচ্ছেতাই ভাবে শাস্তি দেয়ার কোন সুযোগ নেই। তিনি দাবি করেন, নিয়ম মেনেই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। নিয়মের ব্যতয় ঘটিয়ে কারো বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
অভিযুক্তরা দাবি করেছেন এই শাস্তি মনগড়া। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যারা শাস্তির আওতায় আসে তারা তাদের মতো বলে। তাদের কয়েকজন মামলায় গেছে। আমরাও কাউন্টারে গিয়েছি। মনগড়া হলেতো একবারে হাইকোর্ট থেকে উচ্চ আদালত পর্যন্ত ওঠে না।
নিজেদের পছন্দসই অডিটরদের কাজের সুযোগ করে দিতেই কিছু অডিটরদের বলির পাঁঠা বানানো হয়েছে বলে দাবি ভুক্তভোগীদের। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আইসিএবি’র চেয়ারম্যান বলেন, এটা শতভাগ তাদের মনগড়া কথা। কাজে কমবেশি না। আমরা আগেই বলি, কে কতটা কাজ করলো তা নিয়ে আইসিবির কোন মাথাব্যথা নেই। কিন্তু তা কোয়ালিটি মেইনটেইন করে করতে হবে, তাতে কোন বাধা নেই। এটা একেবারে ওপেন বলা হয় তাদেরকে। কোয়ালিটি মেইনটেইন করে যে যতখুশি কাজ করুক, তাতে আমাদের কোন কথা নেই।
বাংলাদেশে সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানের কাজও করতে বাধা দেয়া হচ্ছে অনেক নিরীক্ষকদের, এমন অভিযোগও উঠেছে। এ প্রসঙ্গে শাহাদাত হোসেন বলেন, কে কোথায় তালিকাভুক্ত সেটাতো আমাদের ইস্যু না। তার কাজের উপরে নির্ভর করে। যদি আমাদের থেকে সিওপি বন্ধ হয়ে থাকে তাহলেতো সে অডিট করতে পারবে না। এতে তালিকাভুক্ত হোক বা না হোক।
বিভিন্ন কোম্পানির অডিট রিপোর্ট করে থাকেন এমন এক চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট নাম প্রকাশ না করে বলেন, আরজেএসসি থেকে নিবন্ধন নেয়া কোম্পানির সংখ্যা দুই লাখের ওপরে। অথচ এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মাত্র ৫৫ হাজার আয়কর রিটার্ন দেয়। আবার যেসব কোম্পানি রিটার্ন জমা দেয় তাদের বেশির ভাগ ভুয়া অডিট রিপোর্ট দেয়। অপরদিকে যোগ্যতাসম্পন্ন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টরা যে অডিট রিপোর্ট অনুমোদন করেন তার মান নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক। এতে সরকার কোটি কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে।
বিশ্লেষকেরা মনে করেন, অডিটরদের দৌরাত্ম্য কমাতে রাজস্ব বিভাগে কর গোয়েন্দা সেলকে আরো সক্ষম ও কার্যকর করার বিষয়ে গুরত্বারোপ করেন তারা। সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান বলেন, অডিটরদের মধ্যে একটা পেশাদারিত্ব ও দায়িত্ব ঠিকমতো পালন করা উচিত। একইসঙ্গে তাদের জবাবদিহিতার আওতার মধ্যে নিয়ে আসা উচিত। যে কোন প্রতিষ্ঠানে ঠিকমতো অডিট করা না হলে ট্যাক্স ভাঁকি দেয়ার একটা সুযোগ সৃষ্টি হয়। সরকার বিপুল পরিমাণের রাজস্ব হারায়। এক্ষেত্রে অডিটরদের যে অ্যাসোসিয়েশন আছে, তাদের এবং সরকারের যে তদারকি সংস্থা তাদের জোড়ালো ভূমিকা রাখা উচিত। সরকারের রাজস্ব আদায় বৃদ্ধির লক্ষ্যে নজরদারি বাড়ানোর বিকল্প নেই বলে মত এই বিশ্লেষকের।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (8)
Sabbir Rahman Biplob ৪ অক্টোবর, ২০২২, ৭:৫০ এএম says : 0
ঘুষখোর কর্মকর্তাদের কি হবে??
Total Reply(0)
MD Monir Hossain ৪ অক্টোবর, ২০২২, ৭:৫০ এএম says : 0
কাস্টমস বা আয়কর কর্মকর্তাগন অবৈধ কিছু সুবিধা নেওয়ার জন্য কোন প্রতিষ্ঠানকে হয়রানি করতে পারে।তাই সরকারের উচিত প্রতিষ্ঠানকে বাচিয়ে রেখে কর আদায় করা।আর কোন কর্মকর্তা যেন কোন প্রতিষ্ঠানকে হয়রানি না করে এদিকটি নজর দেওয়া।
Total Reply(0)
Sahariar Rukon ৪ অক্টোবর, ২০২২, ৭:৫১ এএম says : 0
কর কর্মকর্তা,কর্মচারীর আগে ঘোষ বন্ধ করতে হবে।
Total Reply(0)
Shahriar Kamal Jisan ৪ অক্টোবর, ২০২২, ৭:৫১ এএম says : 0
জনগনের দেয়া করের টাকার সুষ্ঠু ও সুষম ব্যবহার ও সরকারের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে না পারলে জনগনের কখনও সাভাবিক ভাবে কর দেবেনা। জনগনের দেয়া করের টাকার সুষ্ঠু ও সুষম ব্যবহার ও সরকারের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে পারলে - জনগনের কাছে করের টাকার জন্য শক্তি প্রয়োগের জন্য সরকার ও সরকারি কর্মচারীদের নৈতিক অধিকার ও থাকেনা।
Total Reply(0)
Nayem Khan ৪ অক্টোবর, ২০২২, ৭:৫১ এএম says : 0
সুইস ব্যংকে আরো টাকার পাহাড় হবে।ক্ষমতা পেলে গরিবের উপর প্রয়োগ হবে।রাঘোব বোয়ালরা ঘুষের জোরে বেরিয়ে যাবে।প্রান্তিক ব্যবসায়ীরা সব সময় মানষিক নির্যাতনের শিকার হয়।এবার আরে বাড়বে।
Total Reply(0)
Mdsalauddin Almoneam ৪ অক্টোবর, ২০২২, ৭:৫০ এএম says : 0
যেসব ব্যাবসায়াইরা কর প্রধান করবে না তাদের কে জেল জরিমানা ব্যাংক ঋন, পানি,বিদ্যুৎ, কেটে দিন পাশাপাশি যাঁরা কর দিতে আসবে তারা যেন হয়রানি শিকার যাতে না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে এবং কর আদায়ে সরকারকে অত্যন্ত কঠোর অবস্থানে থাকতে হবে তাহলে আমি বিশ্বাস করি রাজস্ব আদায়ের সরকার মূল লক্ষে পৌঁছানো সম্ভব ৷
Total Reply(0)
Md Elias ৪ অক্টোবর, ২০২২, ৭:৫২ এএম says : 0
যারা কর দেয় এদের চাপ দেয়। যারা দেয়না এরা আবার লোন জমা না দিয়েও পার। আজব সিস্টেম
Total Reply(0)
Mohammad Asif ৪ অক্টোবর, ২০২২, ৭:৫২ এএম says : 0
আওয়ামী লীগ মনে করে তারা জনগণের টাকায় পদ্মা সেতু বানিয়ে বাংলার মানুষের হৃদয় জয় করেছে। এবার তাহলে সুষ্ঠু নির্বাচন দিয়ে দেখুক
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন