সুনামগঞ্জের ছাতকে জাউয়াবাজার ডিগ্রি কলেজের দুই ছাত্রলীগ কর্মীর বিরোধের জের ধরে একই গ্রামের দুই পাড়ার লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গত মঙ্গলবার রাত ৮টায় কলেজ ছাত্র জুনেদ আহমদ ও মাহতাব মিয়ার অনুসারীদের মধ্যে প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে পুলিশসহ উভয়পক্ষের শতাধিক লোক আহত হয়েছে। ৬০ রাউন্ড রাবার বুলেট ২৫ রাউন্ড টিয়ারসেল ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জাউয়াবাজার ডিগ্রি কলেজের ছাত্র ও জাউয়া কোনাপাড়া গ্রামের ইব্রাহিম আলীর পুত্র জুনেদ আহমদের সাথে একই কলেজের ছাত্র ও জাউয়া পূর্বহাটি গ্রামের আতাউর রহমান আতার ছেলে মাহতাব মিয়ার পূর্ব বিরোধ ছিল। গত মঙ্গলবার বিকেলে জাউয়াবাজারের আকিল কমিউনিটি সেন্টারের সামনে দুইজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এর জের ধরে সন্ধ্যার পর দু’পক্ষ দুইদিকে জড়ো হতে থাকে। এক পর্যায়ে দুই কলেজ ছাত্রের পক্ষ নিয়ে রাত ৮টায় সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের জাউয়াবাজারের রাস্তার উপর দেশীয় অস্ত্র, ইট-পাটকেল ও কাঁচের বোতল নিয়ে দুইপক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। উভয় পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষে পুরো জাউয়াবাজার এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সংঘর্ষে পুলিশ, পথচারীসহ উভয়পক্ষের শতাধিক লোক আহত হয়।
এ ঘটনায় আহত ৩০ জনকে স্থানীয় কৈতক হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়, গুলিবিদ্ধ আহত ১৬ জনকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য আহতদের সুনামগঞ্জ সদর, শান্তিগঞ্জসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি ও চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
এদিকে, সংঘর্ষ চলাকালে আতঙ্কে জাউয়াবাজার এলাকার সড়কের আশপাশে সকল দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। সড়কের উভয় পাশে বাস-ট্রাকসহ শত শত ছোট-বড় যানবাহন আটকা পড়ে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। যাত্রী সাধারণরাও চরম দুর্ভোগে পড়েন।
খবর পেয়ে ছাতক থানা, জাউয়াবাজার তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ দ্রæত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাবার বুলেট ও টিয়ারসেল ছুড়ে। রাত সাড়ে ১০টায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পুলিশের সহায়তায় সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কে যানবাহন স্বাভাবিক হয়। রাতেই সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ এহসান শাহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
জাউয়াবাজার পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর আহাম্মেদ উল্লাহ ভ‚ঁইয়া বলেন, এলাকার পরিস্থিতি শান্ত আছে। সংঘর্ষে থানার ওসি মাহবুবুর রহমান, টিআই ইন্সপেক্টর কবির হোসাইন, এএসআই রিপনসহ ৮ জন পুলিশ আহত হয়েছে।
এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন