‘বিকাশ অ্যাপসের’ মাধ্যমে বিশেষ কৌশলে অপরাধ সংঘটিত করে আসা একটি অপহরণকারী চক্রকে গ্রেফতার করেছে কোতোয়ালী থানা পুলিশ। বৃহস্পতিবার গভীর রাত পর্যন্ত নগরীর বন্দর-পতেঙ্গা এবং হাটহাজারী ও ফটিকছড়িতে অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। ফটিকছড়ির দুর্গম লেলাং পাহাড় থেকে উদ্ধার করা হয়েছে অপহৃত কামরুল হোসেনকে (৪২)। গ্রেফতার তিনজন হলেন- ছখিনা বেগম মর্জিনা (৪৬), শাহজাহান জয় (৩০) ও কণা বেগম (৩০)।
মাছ ধরার ট্রলারের ওই মাঝিকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবির ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে চক্রের এ তিন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে বিকাশ অ্যাপসের মাধ্যমে পুলিশকে ফাঁকি দিয়ে অপরাধ সংঘটনের তথ্য মেলে। কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহিদুল কবীর জানান, ৪ অক্টোবর নগরীর ফিশারিঘাট থেকে কামরুলকে একটি গাড়িতে তুলে নিয়ে যায় অপহরণকারী চক্রের সদস্যরা। তাকে নিয়ে ফটিকছড়ির একটি পাহাড়ে আটকে রাখে।
এর আগে তার সঙ্গে কয়েকজন নারীর অশ্লীল ছবি তুলে সেই ছবি প্রকাশের ভয় দেখিয়ে দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। এ ঘটনায় ট্রলার মালিক শাহাদাত হোসেন বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।
অপহরণকারী চক্রকে দুই লাখ টাকা পরিশোধ করেন ট্রলার মালিক। এরপরও যখন কামরুলকে মুক্তি দেয়া হচ্ছিল না, তখন তারা থানায় আসে। অপরাধীদের অবস্থান শনাক্ত করে তাদের গ্রেফতারের পর অপহৃতকে উদ্ধার করি। দুই লাখ টাকা থেকে ৮২ হাজার ৪০০ টাকা উদ্ধার করি। পুলিশ জানিয়েছে, তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে অপহৃত ও অপহরণকারীদের অবস্থান শনাক্ত করতে গিয়ে তারা সমস্যায় পড়েন। কারণ তারা দুই লাখ টাকা নিয়েছে বিকাশ অ্যাপসের মাধ্যমে। সেখানে মোবাইল নম্বর থাকলেও সীম খুলে রাখা হয়েছে। আরও একটি অ্যাপসের তথ্য পাওয়া যায়, সেটাতেও একইভাবে সীম নেই। ফলে কোনোভাবেই অবস্থান শনাক্ত করা যাচ্ছিল না। এরপর গ্রেফতার শাহাজাহানের একটি পারসোনাল বিকাশ নম্বর ও একটি এজেন্ট নম্বর পাওয়া যায়। এর মাধ্যমে অবস্থান শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। বিকাশ অ্যাপস ব্যবহার করে পুলিশকে ফাঁকি দেয়ার কৌশলের তথ্য দিয়ে পুলিশ জানায়, মোবাইল নম্বর দিয়ে অ্যাপস খুলে যদি সীমটা সেই মোবাইলে না থাকে তাহলে অবস্থান শনাক্ত করা যায় না। জিজ্ঞাসাবাদে তারা এই কৌশলের কথা স্বীকার করেছে। তারা জানিয়েছে, পুলিশ যাতে তাদের ধরতে না পারে সেজন্য তারা এই কৌশল নিয়েছে। একই কৌশলে তারা কয়েক মাস আগে বিমানবন্দর থেকে এক আইনজীবীর বাবাকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করে। আরও ৭-৮টি এ ধরনের ঘটনা তারা ঘটায়, যার সবগুলোই বিকাশ অ্যাপসের মাধ্যমে। কিন্তু সীম মোবাইলে না থাকায় তাদের অবস্থান শনাক্ত করা যাচ্ছিল না। গ্রেফতার তিনজনের বিরুদ্ধে আরও বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা আছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন