বর্তমানে দেশে নিবন্ধিত কোম্পানির সংখ্যা ২ লাখ ৩ হাজার ৩৯৪ (চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত)। এরমধ্যে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির সংখ্যা ৩ হাজার ৬৪১টি। প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি ১ লাখ ৯৯ হাজার ৭৫৩। এছাড়া বিদেশী কোম্পানির লিয়াজো অফিস, অংশীদারি ফার্ম, ট্রেড অর্গানাইজেশন, সোসাইটি ও এ ব্যক্তিক কোম্পানি মিলে সেই সংখ্যা দাঁড়ায় ২ লাখ ৭৬ হাজার ৪৬০টি। কোম্পানি হিসেবে কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য এসব কোম্পানিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন যৌথমূলধনী কোম্পানি ও ফার্মসমূহের (আরজেএসসি) কার্যালয় থেকে নিবন্ধন নিতে হয়েছে। বিদ্যমান আয়কর আইন অনুযায়ী, নিবন্ধনধারী সব কোম্পানির টিআইএন (করদাতা শনাক্তকরণ নম্বর) থাকতে হবে। শুধু তাই নয়, বছর শেষে কোম্পানিগুলোকে আয়কর বিবরণী বা রিটার্ন জমা দিতে হবে। কিন্তু জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ২ লাখ ৩ হাজার নিবন্ধিত কোম্পানির মধ্যে চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত আয়কর রিটার্ন দাখিল করেছে ৩০ হাজার ১৩২টি কোম্পানি। শতকরা হিসেবে করদাতা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ১৪ দশমিক ৮১ শতাংশ। অর্থাৎ আইনগত বাধ্যবাধকতা থাকা সত্ত্বেও ৮৫ শতাংশের বেশি কোম্পানি করের আওতার বাইরে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. মো. আইনুল ইসলাম বলেন, এনবিআরের যে সক্ষমতা তা নিয়ে আমরা সবসময়ই বলে আসছি। বর্তমানে টিআইএনধারী তিন লাখের মতো। কিন্তু রিটার্ন দেয় মাত্র ৭৬ হাজারের মতো। এটা নিয়েও কোন কাজ এনবিআর করতে পারছে না। এক্ষেত্রে আমি বলবো, রাজস্ব আদায়ের ব্যাপারে এনবিআর এখনো সেই সক্ষমতাটা অর্জণ করেনি। আরেকটা বিষয়, বর্তমানে মন্দা যাচ্ছে সে কারণেও আদায় কম হতে পারে। তিনি বলেন, আমাদের কর-জিডিপি অনুপাত প্রতিবারই ১৫ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা থাকে। সেটাতো করতে পারছে না। এটা নতুন করে বলার কিছু নেই। তাদেরকে জিজ্ঞেস করলে বলে, তাদের জনবলের অভাব আছে। তারা অটোমেশনের কাজ করছে। এছাড়া বিশ্বব্যাংকও যে বিষয়গুলোতে সতর্ক করেছে তারমধ্যে এটা (রাজস্ব আদায়) অন্যতম। এনবিআরের এক কর্মকর্তা বলেন, আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করে রাজস্ব বাড়াতে এবং কোম্পানিগুলোকে করের আওতায় আনতে এনবিআর কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। ইতিমধ্যেই কোম্পানি এবং ব্যক্তি পর্যায়ে চলতি অর্থবছরের বাজেট অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সুবিধা পাওয়ার জন্য আয়কর রিটার্নের প্রমাণ জমা দিচ্ছে যা ট্যাক্স রিটার্ন জমাকে বাড়িয়েছে।
তিনি বলেন, একই সঙ্গে নিবন্ধিত কোম্পানি কিন্তু এনবিআর থেকে টিআইএন নেয়নি সেসব কোম্পানি অনুসন্ধান করে কোম্পানির টিআইএনের সংখ্যা বাড়াচ্ছে। বেশিরভাগ কোম্পানিই নিবন্ধন নিয়েছে ন্যূনতম একটি পরিশোধিত মূলধন দেখিয়ে। তাদের ব্যাপারে কোন অনুসন্ধান করা হয়নি। এমনকি আমরা তাদের কোন অফিসও খুঁজে পাইনি। এছাড়া দেশে নিবন্ধিত যে সব কোম্পানি টিআইএন গ্রহণ বা আয়কর রিটার্ন দাখিল করছে না, তা চিহ্নিত করে তাদের আয়করের আওতায় আনার লক্ষ্যে টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
রাজস্ব বোর্ড সূত্র জানিয়েছে, যে কোনো কোম্পানি খোলার ক্ষেত্রে কেবল পরিচালকদের ব্যক্তিগত টিআইএন দিতে হয়। কোম্পানি অনুমোদনের পর টিআইএন নিতে হয়। মূলত অনুমোদনের পর আর টিআইএন নিচ্ছে না কিংবা রিটার্ন জমা দিচ্ছে না।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন