সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। গত মঙ্গলবার তারা একটি আলোচনা বৈঠকও করেছেন। এ সময় তারা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক, সাম্প্রতিক আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন।
আমিরাতের প্রেসিডেন্ট রাশিয়ায় একটি সরকারি সফরে গেছেন। এ সময় তিনি রাশিয়ার সঙ্গে তার দেশের দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার প্রশংসা করেন। এর আগে করোনার সময়ে দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছিল। এ সময় তাদের বাণ্যিজ্য ২.৫ থেকে ৫ বিলিয়ন ডলারে পরিণত হয়। তখন অর্ধ মিলিয়ন রাশিয়ান পর্যটক সংযুক্ত আরব আমিরাত সফর করেছেন।
খনিজ তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর সংস্থা ওপেক প্লাস জ্বালানি তেলের উৎপাদন দৈনিক ২০ লাখ ব্যারেল কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার এক সপ্তাহ পর মস্কো সফরে গেছেন মোহাম্মদ বিন জায়েদ। ওপেক প্লাসের তেল উৎপাদন কমানোর সিদ্ধান্তে রাশিয়া, সউদী আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রধান ভূমিকা পালন করে বলে মনে করা হয়। ওই ঘটনায় রিয়াদ ও আবুধাবির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র চরম ক্ষুব্ধ হওয়া সত্ত্বেও আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট রাশিয়া সফরে গেছেন।
মঙ্গলবার সেন্ট পিটাসবার্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বিন জায়েদকে প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেন, বিশ্বের জ্বালানি বাজারের চাহিদা ও সরবরাহে ভারসাম্য বজায় রাখতে চায় রাশিয়া। তিনি আরো বলেন, রাশিয়া বিশেষ কোনো দেশকে লক্ষ্য করে কোনো ব্যবস্থা নেয় না, বরং জ্বালানীর বাজারের চাহিদা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়াই মস্কোর লক্ষ্য।
দাম বাড়ানোর জন্য ওপেকে প্লাসের উৎপাদন কমানোর সিদ্ধান্ত পশ্চিমা দেশগুলিকে ক্ষুব্ধ করেছে। অনেকে এটিকে একটি পদক্ষেপ হিসেবে দেখেছে যা পুতিনকে ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক প্রচেষ্টায় অর্থায়ন করতে সহায়তা করবে। যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনামূলক মধ্যবর্তী নির্বাচনের ঠিক আগে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান পেট্রোলের দাম বৃদ্ধির কারণে এই উৎপাদন কম হওয়ার ঝুঁকিও রয়েছে।
সংযুক্ত আরব আমিরাত রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়িক সম্পর্ক বজায় রেখেছে এবং ইউক্রেনে মস্কোর আক্রমণের প্রতিক্রিয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য পশ্চিমা মিত্রদের আরোপিত নিষেধাজ্ঞাগুলিতে যোগদান থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করেছে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ডব্লিউএএম বলেছে, ইউক্রেনের যুদ্ধের মতো পরিস্থিতিতে এমবিজেড পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে তারা বিশ্ব শান্তি ও স্থিতিশীলতার ভিত্তি শক্তিশালীকরণে অবদান রাখার পাশাপাশি উত্তেজনা কমাতে এবং সংকটের কূটনৈতিক সমাধান খুঁজার ব্যাপারে আলোচনা করেছেন। এক্ষেত্রে অবদান রাখাই তার দেশের লক্ষ্য। এছাড়াও দুই নেতা বেশ কয়েকটি আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সমস্যা এবং অভিন্ন উদ্বেগের উন্নয়ন পর্যালোচনা করেছেন। সূত্র : মিডল ইস্ট মনিটর
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন