গাইবান্ধা-৫ আসনের ভোট বন্ধে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিদ্ধান্তে হতবাক হয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। পাশাপাশি অস্বস্তি বিরাজ করছে দলটিতে। দলের নেতাকর্মীদের মাঝেও এ নিয়ে নানান আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। ৫০০ কিলোমিটার দূরে থেকে ইসির এমন সিদ্ধান্তে প্রশ্নও তুলেছেন আওয়ামী লীগের হাই-কমাÐ। গাইবান্ধায় ইসির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিলও হয়েছে। ইসি হঠাৎ এমন সিদ্ধান্ত কেনো নিলো তা নিয়েও দলে চলছে বিচার বিশ্লেষণ।
আওয়ামী লীগের নেতাদের মতে, ইসির এ সিদ্ধান্ত দেশের জনগণ এবং বহির্বিশ্বে কাছে নেতিবাচক বার্তা যে, আওয়ামী লীগ অনিয়ম করে নির্বাচনে জয়লাভ করে। অতীতেও আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা অনিয়ম করেছে। তাই ইসির এ সিদ্ধান্তে অস্বস্তি বিরাজ করছে দলটিতে। এছাড়া গত শনিবার ডিসি ও এসপিদের সাথে নির্বাচন কমিশনের সভায় যে হট্টগোল হয়েছিল, তাতে ইসি ও মাঠ প্রশাসনের দূরত্বের প্রতিফলনের কারণে এমন সিদ্ধান্ত কী না তা-ও বিচার বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। তবে এ বিষয়ে সরাসরি আওয়ামী লীগের নেতারা কেউ মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে মন্ত্রী পর্যায় থেকে ইসির সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে।
গাইবান্ধা-৫ উপনির্বাচনে কি কারণে ভোট গ্রহণ বন্ধ করা হয়েছে তা স্পষ্ট নয় জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রিজাইডিং অফিসারদের ভাষ্যমতে নির্বাচনী কর্মকর্তাসহ সহকারী রিটার্নিং অফিসারের নির্দেশে ভোট গ্রহণ বন্ধ করা হয়েছে। গাইবান্ধার উপ-নির্বাচনে ঢাকা থেকে ইসি কর্তৃক বন্ধ করা ৫১ কেন্দ্রের বাইরে সবগুলোয় সুষ্ঠু ভোট হয়েছে। কিন্তু তারপরও কেন নির্বাচন বন্ধ করা হলো ও এর যৌক্তিকতা কী, প্রশ্ন তুলেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ভোট বন্ধ হওয়ায় ‘জনগণ হতবাক’। কারণ নির্বাচনী এলাকায় কোনও ধরনের গÐগোল হয়নি। কোনও পোলিং বা প্রিজাইডিং অফিসারেরও কোনও অভিযোগ ছিল না। সহিংসতাও হয়নি। নির্বাচন কমিশন ৫০০ কিলোমিটার দূরে বসে সিসি টিভি ফুটেজ দেখে ভোট বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
তবে অতীতে এভাবে কোন নির্বাচনে ভোট বন্ধ করার কোন নজির না থাকায় নির্বাচন কমিশনের এ সিদ্ধান্তের পিছনের কারণ অনুসন্ধান করার চেষ্টা করছে আওয়ামী লীগ। নির্বাচন কমিশনের বিষয়ে দলের হাই-কমাÐের নেতাদের সাথে কথা বলতে চাইলে বেশিরভাগ নেতা সরাসরি এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি।
তবে নেতারা তাদের বিশ্লেষণে কয়েকটি কারণ তা উল্লেখ করার চেষ্টা করেছেন। প্রথমত, নির্বাচন কমিশন শক্তিশালী তা উপস্থাপন করা। দুই, বিদেশি কূটনীতিকদের মাঝে বার্তা দেয়া। তিন, মাঠ প্রশাসনে ইসির প্রভাব বিস্তার করা।
নাম প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক দলের একজন কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, কিছুদিন আগে ডিসি এসপিদের সাথে নির্বাচন কমিশনারদের মাঝে কিছুটা ঝামেলা হয়েছে। নির্বাচন বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়ে মাঠ প্রশাসনের কাছে হয়তো ইসি বার্তা দিতে চেয়েছে যে তারা বেশি শক্তিশালী।
আওয়ামী লীগের আরো দুইজন নেতা বলেন, ইসির সিদ্ধান্তে ভাল এবং মন্দ দুই ধরণের বার্তাই আছে। ভোটে অনিময় হচ্ছে জনগণ ও কূটনীতিকদের কাছে এমন বার্তা নেতিবাচক। আবার ভোট বন্ধ করে ইসি শক্তিশালী ভূমিকা পালন করছে এ বার্তা ইতিবাচক।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন