সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

মোড়ে মোড়ে বাধা দেয়ার প্রস্তুতি সরকারি দলের

খুলনায় ২২ অক্টোবর বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ বিএনপির গণসমাবেশ হবে স্মরণকালের সর্ববৃহৎ জনসমুদ্র : দুদু

খুলনা ব্যুরো : | প্রকাশের সময় : ২০ অক্টোবর, ২০২২, ১২:০০ এএম

আগামী ২২ অক্টোবর খুলনায় বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সমাবেশের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, সমাবেশকে কেন্দ্র করে উত্তেজনার পারদ ততোই বেড়ে চলেছে। সমাবেশকে সামনে রেখে ইতিমধ্যে সরকার সমর্থিত পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনগুলো ২১ ও ২২ অক্টোবর দু’দিন পূর্ণদিবস ধর্মঘট আহ্বান করেছেন। যদিও সংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দ বলছেন বিএনপির মহাসমাবেশ ঠেকাতে নয়, মহাসড়কে অবৈধ যান চলাচল বন্ধের দাবিতে তাদের এই ধর্মঘট।
অন্যদিকে, সমাবেশে বাধা দিতে খুলনার প্রবেশ মুখগুলোতে সরকারি দলের অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মীরা অবস্থান নেবে বলে জানা গেছে।
এছাড়া নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশ প্রশাসনের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, ২০ থেকে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত নগরীর আবাসিক হোটেলগুলোর উপর নজরদারী জোরদার করা হবে। সন্দেহজনক কাউকে হোটেলে কক্ষ বরাদ্দ না দিতে হোটেল মালিকদের বলা হয়েছে।
এদিকে, গতকাল বুধবার খুলনায় এক প্রেসব্রিফিংয়ে বিএনপি’র ভাইস-চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, যত বাধাই আসুক, তা প্রতিহত করা হবে। খুলনায় বিএনপির গণসমাবেশ হবে স্মরণকালের সর্ববৃহৎ জনসমুদ্র।
বিভাগীয় সমাবেশকে কেন্দ্র করে খুলনায় টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ সামনে রেখে দুই দিন বাস চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার সমর্থিত বাস মালিক-শ্রমিক সংগঠন। খুলনা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন বিপ্লব এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আগামী ২১ ও ২২ অক্টোবর খুলনা থেকে সকল বাস চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। হাইওয়েতে অবৈধ বাহন বন্ধের দাবিতে বাস মালিক সমিতি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এদিকে, ধর্মঘটের ঘোষণায় সাধারণ মানুষের মনে বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। তারা প্রশ্ন তুলেছেন, একটি রাজনৈতিক দল সমাবেশ করবে, তার জন্য পরিবহণ ধর্মঘট ডেকে সাধারণ মানুষকে কেনো ভোগান্তিতে ফেলতে হবে? আওয়ামী লীগ সব সময় দাবি করে তারা জনগণের দল, তাহলে কেনো দলীয় রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলে সাধারণ মানুষকে হয়রানিতে ফেলছে?
এ প্রসঙ্গে খুলনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আমীর এজাজ খান বলেন, সমাবেশকে বানচাল করতে ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। এটা ময়মনসিংহ ও চট্টগ্রামেও করেছে তারা। সমাবেশে খুলনা ছাড়াও যশোর, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, মাগুরা, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, নড়াইল, ঝিনাইদহ ও চুয়াডাঙ্গা থেকে নেতাকর্মীদের আসার কথা রয়েছে। এছাড়া খুলনা মহানগর ও জেলার ৯টি উপজেলা থেকে নেতাকর্মীরা অংশ নেবেন। প্রয়োজনে পায়ে হেঁটে হলেও সমাবেশে নেতা কর্মীরা আসবেন। কোনো বাধাই বিএনপির সমাবেশকে ঠেকাতে পারবে না। আমাদের ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। নেতাকর্মীরা যথাসময়ে সমাবেশে উপস্থিত থাকবে। তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের কাছে জনগণের স্বার্থ মূল্যহীন, তা আরও একবার প্রমান হল সমাবেশ বানচালে তাদের সমর্থিত পরিবহন মালিক শ্রমিকদের ডাকা ধর্মঘটের মধ্য দিয়ে।
নগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাড শফিকুল আলম মনা জানিয়েছেন, সমাবেশের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। সমাবেশ হবেই। নগরীর ডাকবাংলো চত্বরে সমাবেশ ও সড়ক ব্যবহারের জন্য অনুমতি দিয়েছে খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি)। সমাবেশের মাইক ব্যবহারসহ আনুষাঙ্গিক বিষয়ে অনুমতি মিলেছে পুলিশের কাছ থেকেও। সমাবেশ সফল করতে পুলিশ সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে। তারাও শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি শেষ করতে আমাদের সহযোগিতা চেয়েছেন। আমরাও সব ধরনের সহযোগিতার কথা বলেছি। আশা করছি পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের সমস্যা হবে না। খুলনাসহ বিভাগের ১০ জেলা থেকে কয়েক লাখ নেতাকর্মী সমাবেশে যোগ দেবেন। প্রত্যেকের হাতে লাঠির মাথায় জাতীয় পতাকা থাকবে। কেউ বাধা দিলে সেখানে প্রতিহত করা করা হবে। যানবাহন বন্ধ করে দিলে পায়ে হেঁটে কর্মীরা সমাবেশে যোগ দেবেন। সমাবেশে উপস্থিত থাকবেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।
খুলনার বিভিন্ন প্রবেশ মুখে আ’লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মীরা অবস্থান নেবে বলে বিশ্বস্থ সূত্রে জানা গেছে। দলের জেলা সাধারণ সম্পাদক অ্যাড সুজিত অধিকারী জানিয়েছেন, সমাবেশের নামে বিএনপি কোনো নৈরাজ্য করলে তা আওয়ামী লীগ মেনে নেবে না। বিএনপি সহিংসতা করতে চাইলে তার জবাব দেয়া হবে। এ জন্য আমাদের নেতাকর্মীরা প্রস্তুত থাকবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বিএনপির সমাবেশ উপলক্ষ্যে শহরের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। কোনো প্রকার অপ্রীতিকর অবস্থা যাতে না হয়, তার জন্য পুলিশ প্রস্তুত থাকবে। সমাবেশকে কেন্দ্র করে কেউ যেন নাশকতা করতে না পারে তার জন্য আগাম কিছু প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। নগরীর হোটেলগুলোতে আগামী ৩ থেকে ৪ দিন সন্দেহজনক কাউকে থাকতে না দেয়ার জন্য হোটেল কর্তৃপক্ষগুলোকে বলা হয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন