দুই বছর আগে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে সম্পূর্ণরূপে বের হয়ে যাওয়া যুক্তরাজ্যকে পুনরায় ইইউ জোটে যুক্ত হওয়ার দাবিতে লন্ডনের রাস্তায় হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেছে। স্থানীয় সময় শনিবার লন্ডনের পার্লামেন্ট স্কয়ারের সামনে এই বিক্ষোভ হয়েছে বলে ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে।
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লন্ডনের পার্ক লেন থেকে পার্লামেন্ট স্কয়ার পর্যন্ত হাজার হাজার মানুষ মিছিল করেছে এবং তারা যুক্তরাজ্যকে পুনরায় ইইউতে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। বিক্ষোভে অংশ নেওয়া অনেকেই বলেছেন, তাঁরা লন্ডনের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে কয়েক ঘণ্টার পথ পাড়ি দিয়ে এসে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন।
ইইউ জোট থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করে ২০১৬ সালে শুরু হয়েছিল ‘ব্রেক্সিট আন্দোলন’। তারপর ব্রেক্সিটের পক্ষে-বিপক্ষে গণভোট ও নানা পথ ঘুরে ২০২০ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের হাত ধরে ব্রেক্সিট আন্দোলন পূর্ণতা পায় এবং ব্রিটেন ইইউ থেকে সম্পূর্ণরূপে বের হয়ে যেতে সক্ষম হয়। এর দুই বছর যেতে না যেতেই আবারও ব্রিটেনে শুরু হলো ইইউতে যুক্ত হওয়ার আন্দোলন।
আন্দোলনে অংশ নেওয়া ৬০ বছর বয়সী শিক্ষক নিকি আজিবদে বলেন, ‘ব্রেক্সিট কখনোই কাজ করবে না। আমাদের পুনরায় ইইউতে যোগ দিতে হবে। আমরা এখন যে পরিস্থিতিতে আছি, তাতে ২০১৬ সালের মতো আবার গণভোটের আয়োজন করা ছাড়া উপায় নেই।’
ওয়ারউইকশায়ার থেকে বোনের সঙ্গে মিছিলে আসা প্রবীণ শিক্ষক নিকি আজিবদে আরও বলেন, ‘সেই সময়ের গণভোটের ফলাফল অতি সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে হয়নি। ভোটের ব্যবধান ছিল ৫২ শতাংশ ও ৪৮ শতাংশ। এখন দেখুন, ছয় বছর ধরে আমরা কোথায় আছি। আমাদের এই মুহূর্তে একজন বুদ্ধিমান সরকার দরকার। রাজনৈতিক নেতারা শুধু বস্তাবন্দী ইঁদুরের মতো ঝগড়া করছে।’
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ২৬ বছর বয়সী অলিভার জ্যাকসন বলেছেন, ‘আমরা যাঁরা ইইউতে পুনরায় যোগ দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি, তাঁদের কথা শোনা রাজনীতিবিদদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এখন এই বিশৃঙ্খল সময়ে ব্রিটেনকে আবার স্থিতিশীল অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে হলে ইইউতে যোগ দেওয়া ছাড়া উপায় নেই।’ অলিভার জ্যাকসন আরও বলেন, ‘ব্রেক্সিট হচ্ছে ধীরগতির মৃত্যু, যা বছরের পর বছর ধরে যুক্তরাজ্যের প্রাণশক্তিকে শুকিয়ে ফেলছে।’
পুঁজিবাজারে কাজ করা ৪৪ বছর বয়সী টনি হ্যারল্ড বলেছেন, ব্রেক্সিটের কারণে তিনিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। কারণ স্পেনে তাঁর সম্পদ রয়েছে। তিনি বলেন, স্পেনে আমার একটি ‘সেকেন্ড হোম’ রয়েছে। আমি ইইউর সুবিধা প্রত্যক্ষভাবে অনুভব করেছি।
ইইউতে যোগ দিলে মানুষের জীবনযাত্রার মান আরও উন্নত হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। অন্য দিকে ৫৭ বছর বয়সী জশুয়া অ্যালোট বলেন, ইইউ ত্যাগ করার কারণে যুক্তরাজ্যকে দীর্ঘদিন ভুগতে হবে। সূত্র : বিবিসি, গার্ডিয়ান
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন