ঘুষ-দুর্নীতির প্রতিবাদে সহযোগীদের নিয়ে মানববন্ধন করা আইনজীবী মাহাবুবুল ইসলামকে বহিষ্কারের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে।
গতকাল সোমবার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার আশরাফুল ইসলাম আশরাফ এ রিট করেন। রিটে মানিকগঞ্জের আদালতে ‘ঘুষ ও দুর্নীতি’র অভিযোগের বিষয় তদন্তের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। এছাড়া ওই আইনজীবীর বিষয়ে বার সমিতিকে মানিকগঞ্জের জেলা জজের চিঠির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে।
বিচারপতি মো: নজরুল ইসলাম তালুকদার এবং বিচারপতি খিজির হায়াতের ডিভিশন বেঞ্চে রিটের শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। রিটে আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব, সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল, দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে।
এর আগে গত ১৯ অক্টোবর মানিকগঞ্জে ঘুষ-দুর্নীতির প্রতিবাদে মানব বন্ধন কর্মসূচি পালন করেন অ্যাডভোকেট মাহাবুবুল ইসলাম। এর পরপরই এই আইনজীবীকে ১৫ দিনের জন্য আইন পেশা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেয় মানিকগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতি। বিরত থাকার পরপরই মানিকগঞ্জ আদালত চত্বরের সামনে শহীদ রফিক সড়কে মাহাবুবুর ইসলাম গলায় ‘ঘুষে চেয়ে ভিক্ষা উত্তম, করলাম প্রতিবাদ, হইলাম বহিষ্কার’ লেখাসম্বলিত প্ল্যাকার্ড গলায় ঝুলিয়ে আবারও প্রতিবাদে নামেন।
প্রসঙ্গত: গত ১০ অক্টোবর জেলার আদালত প্রাঙ্গণে মাহাবুবুল ইসলামের নেতৃত্বে মানিকগঞ্জ বারের কয়েকজন আইনজীবী বিচার বিভাগে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে ঘুষ-দুর্নীতি আর ন্যায়বিচার এক সঙ্গে চলে না, স্লোগান সম্বলিত লিফলেট বিতরণ ও সহযোগীদের নিয়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। তারা জানান, অ্যাফিডেভিট করতে নির্দিষ্ট ফি থেকে অতিরিক্ত ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা আদায় করা হচ্ছে।
১ হাজার টাকার কমে কোনো নকল সরবরাহ করা হচ্ছে না। রেকর্ড রুম থেকে নথি পেতে হলে অতিরিক্ত টাকা দিতে হয়। জেলার বিচার বিভাগের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য বিচার প্রার্থীদের মামলা খরচ অনেক বেড়ে যায়। এই কর্মসূচির প্রেক্ষিতে জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য মাহাবুবুল রহমানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন সমিতির সভাপতি জামিলুর রশিদ খান ও সাধারণ সম্পাদক নূরতাজ আলম ওরফে বাহার। লিখিত এই নোটিশ ১৫ কার্যদিবসের জন্য তাকে আইন পেশা থেকে বিরত থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়। লিখিত নোটিশে বলা হয়, মাহাবুবুল ইসলাম ও তার সহযোগী আইনজীবীদের কর্মকান্ডে বার ও বেঞ্চের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে। জেলা আইনজীবী সমিতির গঠনতন্ত্রের দ্বাদশ অধ্যায়ের ২০ এর ‘ক’ অনুচ্ছেদ লঙ্ঘন করেছেন। আইনজীবী মাহাবুবুল ইসলাম বলেন, ঘুষ-দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় তাকে শাস্তি দেয়া হয়েছে। তবে অন্যায় ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে তিনি আন্দোলন অব্যাহত রাখবেন বলেও দৃঢ়তা ব্যক্ত করেন এই আইনজীবী।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন