রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আন্তর্জাতিক সংবাদ

যুক্তরাষ্ট্র শুধু পদ্ধতিগতই নয় আদর্শ সঙ্কটেও ভুগছে

পশ্চিমারা মানবজাতির সমস্ত সম্পদের স্বত্ব চায়

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩০ অক্টোবর, ২০২২, ১২:০০ এএম

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন যে, বিশ্বব্যাপী পশ্চিমা আধিপত্যের যুগ এখন অতীতের বিষয় হয়ে উঠছে এবং বর্তমান দশকটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তির পর বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়। বৃহস্পতিবার ভালদাইয়ের আন্তর্জাতিক আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন। তিনি আরো বলেন, ‘পশ্চিম মানব জাতির সমস্ত সম্পদের স্বত্ব চায় এবং যে নিয়ম-ভিত্তিক শৃৃঙ্খলার প্রস্তাব করে, সেটি তাকেই নিয়ম বহির্ভূতভাবে চলার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য। পশ্চিমারা একা মানবজাতিকে শাসন করতে অক্ষম, কিন্তু মরিয়া হয়ে তা করার চেষ্টা করছে এবং বিশ্বের অধিকাংশ জাতি তা আর সহ্য করতে চায় না।’

পুতিন বলেন, ‘আধুনিক উদারতাবাদ কল্পনাতীতভাবে বদলে গেছে, অযৌক্তিকতায় পরিবর্তিত হয়েছে, যেখানে বিকল্প দৃষ্টিভঙ্গিগুলোকে অবমূল্যায়ন করা হচ্ছে। এবং যেকোনো সমালোচনাকে ক্রেমলিনের ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখা হচ্ছে। তারা যা বলছে, তা প্রলাপ মাত্র। বিশ্বের নব্য-উদারতার মডেল ‘আ লা আমেরিকা’ শুধু পদ্ধতিগতই নয়, আদর্শ সঙ্কটেও ভুগছে। ছড়ি ঘোরানো ছাড়া বিশ্বকে দেওয়ার মতো তাদের কিছুই নেই।’ তিনি বলেন যে, ‘পশ্চিমারা তাদের খেলায় বিশ্বজুড়ে তাদের শক্তির ঘেরাটোপ তৈরি করেছে, কিন্তু এই খেলাটি নিঃসন্দেহে বিপজ্জনক, রক্তরঞ্জিত এবং নোংরা। এটি দেশগুলি এবং জনগণের সার্বভৌমত্ব, তাদের পরিচয় এবং স্বতন্ত্রতাকে অগ্রাহ্য করে; এটি অন্যান্য রাষ্ট্রের স্বার্থ উপেক্ষা করে।’

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট আরো বলেন যে, পশ্চিমাদের মতো রাশিয়ানরা অন্য কারো বাড়ির উঠানে ঘাঁটি গাড়তে চায় না। পাশ্চাত্যের অদম্যতার বিশ্বাস বিপজ্জনক, কারণ তারা যা বলে, যাদেরকে তারা পছন্দ করে না, তাদের ধ্বংস করে দেয়ার জন্য, তাদের বাতিল করে দেওয়া জন্য সবচেয়ে অদম্য আকাঙ্কা থেকে এক পা দূরে। কিন্তু ইতিহাস সবকিছু ঠিক করে দেবে এবং তাদের বাতিল করে দেবে, যারা নিজেদের মর্জি মতো বিশ্ব সংস্কৃতিকে সাজানোর নেতা বলে মনে করে।’ তিনি বলেন, ‘রাশিয়া নিজেকে পশ্চিমের শত্রু মনে করেনি এবং মনে করে না, এবং সে সমঝোতার সাথে থাকার প্রস্তাব দিয়েছিল, কিন্তু প্রত্যাখ্যানের মুখোমুখি হয়েছে।’ পুতিন বলেন, কমপক্ষে দুটি ভিন্ন পশ্চিম রয়েছে: একটি ঐতিহ্যবাহী; অত্যন্ত সমৃদ্ধ সংস্কৃতির এবং অন্যটি আক্রমণাত্মক ও নব্য-ঔপনিবেশিক, যার নির্দেশে রাশিয়া কখনই মিটমাট করবে না। পশ্চিমারা রাশিয়াকে ভূ-রাজনৈতিক মানচিত্র থেকে মুছে ফেলতে পারেনি এবং পারবেও না’।

ভøাদিমির পুতিন বলেছেন যে, বিশ্বের নতুন, স্বাধীন আন্তর্জাতিক আর্থিক প্ল্যাটফর্মের প্রয়োজন, যাতে আন্তর্জাতিক রিজার্ভ হিসাবে পশ্চিমাদের দ্বারা অস্বীকৃত মুদ্রাগুলির প্রতিস্থাপন করা যায়। প্রথমে, (পশ্চিম) ডলার এবং ইউরো অঞ্চলে মুদ্রাস্ফীতির মাধ্যমে সেগুলির অবমূল্যায়ন করেছে, এবং তারপর এটি সম্পূর্ণভাবে ছেয়ে গেছে এবং আমাদের স্বর্ণ এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ পকেটে পুরে নিয়েছে। তিনি বলেন, ‘ইউরোপের জন্য বহুমুখিতা একটি বাস্তব ও কার্যকরভাবে তার রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সক্ষমতা পুনরুদ্ধার করার একমাত্র সুযোগ, যা আজ গুরুতরভাবে সীমিত’। এছাড়া, পুতিন বলেন, ‘যতদিন পরমাণু অস্ত্র থাকবে, ততক্ষণ পর্যন্ত এটির ব্যবহৃত হওয়ার সম্ভাবনাও থাকবে। পরিস্থিতি, যেখানে রাশিয়া তার পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে, সবই তার মতবাদে লেখা আছে। মস্কো কখনই পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার সম্পর্কে আগ বাড়িয়ে কথা বলেনি, এটি কেবল ইঙ্গিত দিয়ে পশ্চিমা নেতাদের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।’ সূত্র: তাস।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (4)
Alam Gir ২৯ অক্টোবর, ২০২২, ৭:৪১ এএম says : 0
এরকম পুতিন প্রতিটা দেশে দেশে দরকার।
Total Reply(0)
Mrsaiful Islam Raju ২৯ অক্টোবর, ২০২২, ৭:৪১ এএম says : 0
কথা বড়ই সত্যি বলেছেন পুতিন
Total Reply(0)
MD Momitul Islam ২৯ অক্টোবর, ২০২২, ৭:৪১ এএম says : 0
পশ্চিমারা আজ পুরো মানবজাতির সম্পদের উপর দাঁড়িয়ে? আবার সেই মানবজাতির রক্ত নিয়ে তারা হলি খেলায় মত্ত হয়ে রয়েছে?
Total Reply(0)
Nasir Uddin ২৯ অক্টোবর, ২০২২, ৭:৪০ এএম says : 0
ইউক্রেন যুদ্ধে পুতিন যদি হেরে যায় তাহলে আগামী ৫০ বছর আমেরিকার জন্য ছড়ি ঘুরানো আরো সহজ হবে। রাশিয়া কি খুব বেশি কিছু চেয়েছিল?? তারা শুধু চেয়েছিল ইউক্রেনকে যেন ন্যাটো জোটে না নেওয়া হয়, কারণ সেটা হলে রাশিয়া চারিদিক থেকে ন্যাটো দ্বারা ঘেরাও হয়ে যাবে। এই সামান্যতম নিরাপত্তাটুকু কি রাশিয়ার অধিকার ছিল না? কিন্তু পশ্চিমা গুপ্তচর জেলনস্কি সেটার বিরোধিতা করলেন। করবেন সেটা অবধারিতই ছিল কারণ যে গুপ্তচরকে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খরচ করে প্রেসিডেন্ট বানিয়েছে সে তো কিছু হলেও প্রতিদান দিবে। ফলাফল ইউক্রেনের জনগণ ভোগ করছে।
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন