সোনালি আঁশ পাট কাটার পর কৃষক এখন আর অতীতের মতো পরবর্তী চাষের জন্য অপেক্ষায় থাকেন না। আধুনিক পদ্ধতিতে জমিতে নতুন করে চাষ ছাড়াই ফলানো হচ্ছে মিষ্টি কুমড়া, খিরা, পালংশাক, লাউ, মুলা ও শিমসহ শীতকালীন সবজি।
এমন আধুনিক চাষাবাদে ব্যস্ত সময় পার করছেন মাগুরা সদরের নালিয়ার ডাঙ্গি গ্রামের কৃষকরা। তারা পাট কাটার পর জমিতে পুনরায় চাষ দেননি। পাট কাটার পর প্রায় ৫০০ বিঘা জমিতে নানা ধরনের সবজি চাষ করেছেন। আর এই চাষাবাদের সাথে জড়িত প্রায় ২৫০ জন কৃষক।
পাট কাটার পর জমিতে এভাবে সবজি চাষ করে এখানকার কৃষকরা দেখেছেন স্বচ্ছলতার মুখ। পাশাপাশি তারা ঘুরে দাঁড়িয়েছেন অর্থনৈতিকভাবে। তাদের নিজের এবং পরিবারের আর্থিক কষ্ট অনেকটাই কেটেছে। পরিবারের সদস্যদের মুখে ফুটেছে প্রশান্তির হাসি।
প্রায় ২৫০ জন কৃষকের মধ্যে মাগুরা সদর উপজেলার নালিয়ার ডাঙ্গি গ্রামের আউয়াল খানের ছেলে শারীরিক প্রতিবন্ধী আক্কাস খান এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। প্রতিবন্ধী হয়েও তিনি নিজের গ্রামে কৃষিক্ষেত্রে ঘটিয়েছে এক যুগান্তকারী বিপ্লব। তার প্রচেষ্টায় যোগ করেছে নতুন একমাত্র। শারীরিক ভাবে অসুস্থ হওয়ার পরও জীবন চলার পথে তিনি থেমে যাননি। শুধু আক্কাস নিজে নন; এই বিপ্লবে গোটা গ্রামেরই চিত্রই পাল্টে গেছে।
ইনকিলাবের সাথে আলাপকালে আক্কাস খান জানান, জমিতে কোন চাষ ছাড়াই মিষ্টি কুমড়া, লাউ ও খিরা চাষ করেছি। মাটিতে জো আসার অপেক্ষা করা লাগেনি। পাট কাটার পরপরই জমিতে চারা রোপণ করেছি। এভাবে চাষ করতে হলে আগে থেকেই বাড়িতে পলি ব্যাগের মধ্যে সবজির চারা তৈরি করতে হয়।
তিনি আরো জানান, সেচ ও জৈব সারসহ অন্যান্য খরচ মিলিয়ে প্রতি বিঘা জমিতে তিন থেকে চার হাজার টাকা লেগেছে। কমপক্ষে প্রতি বিঘা জমি থেকে ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকার সবজি বিক্রি করা যবে বলে তার আশা। চলতি বছর ১৫ বিঘা জমিতে শীতকালীন সবজি চাষ করেছেন।
অপর কৃষক আইয়ুব আলী মন্ডল জানান, অতীতে পাট কাটার পর জমি পতিত পড়ে থাকত। বর্তমানে আক্কাসের কথা মতো বিনা চাষে খিরা চাষ করে বেশ ভালো ফলন পেয়েছি। অর্থনৈতিক ভাবে বেশ লাভবান হয়েছি। আগামীতে এভাবে আরো বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করার আশা রয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন