শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

মাদরাসায় কি জাতীয় সঙ্গীত গায়?

সংবিধান দিবসে মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রীর প্রশ্ন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৫ নভেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালের ৪ নভেম্বর আমাদের সংবিধান দিয়ে গেছেন। তার সংবিধানের মূলনীতি আজকে সেভাবে নেই। সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম ও ধর্মনিরপেক্ষতা পরস্পর সাংঘর্ষিক। অন্যান্য সব জায়গায় সংবিধান আগের জায়গায় ফেরত এসেছে, এই একটি জায়গায় আসেনি। গতকাল শুক্রবার প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে ‘বঙ্গবন্ধুর সংবিধানকে সাম্প্রদায়িকতার কলঙ্ক থেকে মুক্ত করুন’ শীর্ষক আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ৫১তম সংবিধান দিবস উপলক্ষে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি এই সভাটি আয়োজন করে। তিনি বলেন, ছোটবেলা আমরা যে অসাম্প্রদায়িক পরিবেশ দেখেছি এখন সেটা দেখি না। এর কারণ হিসেবে তিনি দীর্ঘ সময় দেশে অসাম্প্রদায়িক শক্তির ক্ষমতায় থাকার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, প্রায় ৩০ বছর জিয়া, এরশাদ ও খালেদা জিয়ার সাম্প্রদায়িক শক্তি দেশ শাসন করেছে। অন্যদিকে অসাম্প্রদায়িক শক্তি আওয়ামী লীগ প্রায় ২২ বছর দেশ শাসন করেছে।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, কোনো মাদরাসায় কি জাতীয় সংগীত গায়? কোনো কেজি স্কুলেও জাতীয় সংগীত গাওয়া হয় না। রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে জয় বাংলা বলা বাধ্যতামূলক। কিন্তু সযত্নে অনেকেই এড়িয়ে যায়। তিনি বলেন, কোনো ‘রাজাকার’ মুক্তিযোদ্ধা হয়নি। কিন্তু রাজাকারের আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে অনেক মুক্তিযোদ্ধাই পক্ষত্যাগ করেছে।
সংবিধানের সাথে সাথে মানুষের মনোজগতকেও পরিবর্তন করতে হবে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, শুধু সংবিধান পরিবর্তন করলেই হবে না, আমাদের চিন্তা চেতনাও কলঙ্কমুক্ত করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি, লেখক ও সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির বলেন, অন্যান্য দেশের তুলনায় আমাদের সংবিধান আধুনিক ও যুগোপযোগী। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর জিয়া ও তার সহযোগীরা সংবিধানকে পাকিস্তানিকরণ করেছে। বঙ্গবন্ধুর আমানত দুই জেনারেল খেয়ানত করেছে। এখন সময় এসেছে মূল সংবিধানে ফেরত যাওয়ার।
ইতিহাসবিদ, গবেষক ও অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন বলেন, জিয়াউর রহমান থেকে খালেদা জিয়া পর্যন্ত যত কাজ হয়েছে সব সংবিধানবিরোধী। এর মধ্যে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ একটি। এরশাদের আমলে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম করে সংবিধানের পুরো চরিত্রই বদলে দেওয়া হয়েছে। সংবিধান প্রশাসনিক ক্ষেত্রে বারবার লঙ্ঘিত হচ্ছে কিন্তু আমরা কোনো ব্যবস্থা নিতে পারি না। তিনি আরো বলেন, সংবিধানের একটি সহজপাঠ দরকার। মানুষ অন্তত তার মৌলিক অধিকার সম্পর্কে জানতে পারবে। এ সময় তিনি বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের ওপর হামলার ঘটনায় আওয়ামী লীগের ভূমিকার সমালোচনা করে বলেন, আমরা বিবৃতি দিয়ে বলেছি এ ধরনের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ সাংবিধানিক প্রক্রিয়াতে বন্ধ করা উচিত। কিন্তু আওয়ামী লীগ বিবৃত দেয়নি। কারণ আওয়ামী লীগের মূল বিষয় হচ্ছে দুর্দিনে যারা সঙ্গে থাকে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গেলে তাদের সঙ্গে নেয় না। সঙ্গে নেয় তাদেরকে যারা দুর্দিনে পাশে থাকে না।
শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী বলেন, সংবিধানে সাম্প্রদায়িকতার কলঙ্ক আছে। স্কুলে ছাত্র-ছাত্রীরা চারু ও কারুকলা পড়তে চায় না। বলে গুনাহ হবে। ধর্মান্ধতা ও সাম্প্রদায়িকতা সমাজে ঢুকে গেছে। আমরা স্যাটেলাইট পাঠিয়েছি কিন্তু মনের দিক থেকে অনেক অনেক নিচে চলে যাচ্ছি।
সমাজকর্মী ও সংসদ সদস্য আরমা দত্ত বলেন, বঙ্গবন্ধুর সংবিধানকে সাম্প্রদায়িকতার কলঙ্ক থেকে মুক্ত করতে হবে। হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান সবাই মিলে মুক্তিযুদ্ধ করেছে। আমরা সকলে চাই এখানে সাম্প্রদায়িকতার বীজ যেন না আসে। এই পবিত্র সংবিধানই আমাদের সবচেয়ে বড় পরিচয়।
আলোচনাসভায় আরো উপস্থিত ছিলেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ও মানবাধিকারকর্মী কাজী রিয়াজুল হক, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মো. মোখলেসুর রহমান বাদল। সভা পরিচালনা করেন শহীদ বুদ্ধিজীবী মুনীর চৌধুরীর সন্তান আসিফ মুনীর। ##

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (11)
মুফতি মেরাজুল হক হামিদি ৫ নভেম্বর, ২০২২, ৮:১৮ এএম says : 0
জি অবশ্যই গাই,,কিন্তু এ ভালবাসা আমাদের অন্তরেও ধারেণ করতে হবে,,,
Total Reply(0)
Sojib Patuwarey Sojib ৫ নভেম্বর, ২০২২, ৮:১৮ এএম says : 0
মাদরাসা নিয়ে এতো মাথা বেথা কেনো
Total Reply(0)
Nurul Islam ৬ নভেম্বর, ২০২২, ১১:৪৮ এএম says : 0
এই দুনিয়ার কোনো ক্ষমতাই চিরস্থায়ী নয় সুতরাং সামনে যে বিপদ আপনার জন্য অপেক্ষা করতেছে তা নিশ্চিত থাকুন
Total Reply(0)
Nurul Islam ৬ নভেম্বর, ২০২২, ১১:৫০ এএম says : 0
এই দুনিয়ার কোনো ক্ষমতাই চিরস্থায়ী নয় সুতরাং সামনে যে বিপদ আপনার জন্য অপেক্ষা করতেছে তা নিশ্চিত থাকুন
Total Reply(0)
Dr. Alamgir ৬ নভেম্বর, ২০২২, ১০:৩৬ এএম says : 0
চেতনা ব্যবসায়ীরা আর খুব বেশিদিন চেতনা বিক্রি করে খেতে পারবেনা বুঝতে পেরেছে, তাই আবোলতাবোল বকছে.. এই আর কী। এখানে লেখায় দেখলাম যে মুরগী কবির কে লেখক বলে রিপোর্ট করা হচ্ছে, তার কোন কোন বই আছে বাজারে? সে কোথায় সাংবাদিক? আজব তো!
Total Reply(0)
Nazrul Islam ৫ নভেম্বর, ২০২২, ৮:১৭ এএম says : 0
শুধু মাদরাসার দোষ খোঁজেন, একটু খোঁজ নিয়ে দেখেনতো দেশের কোন সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতীয় সঙ্গীত গায় কি না?
Total Reply(0)
Radian ৬ নভেম্বর, ২০২২, ৮:৫১ এএম says : 0
জাতীয় সংগীত হোক বা কোরআন তেলোয়াত হোক যদি প্রকৃত চেতনা বুকে ধারণ করা যায়. তাহলে দেশও এত রাহাজানি হানাহানি দুর্নীতির প্রকোপ হত না
Total Reply(0)
ওমর ফারুক ৫ নভেম্বর, ২০২২, ৮:৩৫ এএম says : 0
স্কুলে কুরআন তেলাওয়াত দিয়ে শুরু করেন। তাহলে মাদ্রাসায় জাতীয় সঙ্গীত ও গাওয়া হবে।
Total Reply(0)
এক-পথিক ৫ নভেম্বর, ২০২২, ৮:৫৬ এএম says : 0
দাঁড়ি তো সব পাইক্কা গেছে; কবর যে আপনারে পত্যেকদিন ডাকতাছে, হেই কথা কি ভুইল্লা গেছেন? এখনো আল্লাহ সময় দেছে; আবোল-তাবোল কথা বাদ দিয়া আল্লাহর দেয়া সংবিধান কুরআন-শরীফ থাইক্কা কথা কন; হেইডা মাইন্না ছলেন। আজরাইল (আ:) আইসসা গেলে অন্য কোনো সংবিধানে কাম হইবো না।
Total Reply(0)
Abdullah Asad ৫ নভেম্বর, ২০২২, ৮:১৭ এএম says : 0
জাতীয় সংগীত: আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি, আপনারা শুধু মাত্র জাতীয় সংগীতেই দেশকে ভালোবাসেন, বাস্তবে- অন্তরে তার৷ উল্টো টা।
Total Reply(0)
Radian ৬ নভেম্বর, ২০২২, ৮:৫১ এএম says : 0
জাতীয় সংগীত হোক বা কোরআন তেলোয়াত হোক যদি প্রকৃত চেতনা বুকে ধারণ করা যায়. তাহলে দেশও এত রাহাজানি হানাহানি দুর্নীতির প্রকোপ হত না
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন