আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘বিএনপি নাকি ১০ ডিসেম্বর রাস্তায় বের হবে। ১০ ডিসেম্বর নাকি খালেদা জিয়াকে নিয়ে বিজয় মিছিল করবে। তার মানে লাঠিসোটা নিয়ে নামবে। এর বিরুদ্ধে খেলা হবে। বাড়াবাড়ি করলে ছাড় দেবো না। রোববার (৬ নভেম্বর) জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে এ কথা বলেন তিনি।
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে কাদের বলেন, বেগম জিয়া কীভাবে মুক্ত হয়ে বাসায়। ১৩ বছরে ১৩ মিনিট রাস্তায় দেখিনি। বিক্ষোভের ডাক দিয়ে ঘরে বসে হিন্দি সিনেমা দেখেছেন। আর পুলিশের গতিবিধি লক্ষ্য করেছেন। নিজের দলের নেতার জন্য চোখে পড়ার মতো মিছিল বাংলাদেশের কোথাও দেখিনি। বেগম জিয়াকে শেখ হাসিনা উদরতা দেখিয়ে নির্বাহী আদেশে বাসায় থাকতে দিয়েছেন। বয়স ও স্বাস্থ্য বিবেচনা করে মানবিক কারণে মুক্ত করে বাসায় পাঠিয়েছেন। আপনারা তো তার জন্য কিছুই করতে পারেননি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বাড়াবাড়ির কথা প্রধানমন্ত্রী বলেছেন। বক্তব্য দেন- শেখ হাসিনার নামটা পর্যন্ত শালীনতার সঙ্গে উচ্চারণ করেন না। করেন হাসিনা হাসিনা। আর রাজনীতি করবো না বলে দেশ ছেড়ে ২০০৮ সালে, মুচলেকা দিয়ে লন্ডন গেছেন নেতা। আন্দোলনের! নির্বাচনের! খেলা হবে এমনি বলিনি।
‘খেলা হবে’ স্লোগান নিয়ে জাতীয় পাার্টির ফিরোজ রশীদের সমালোচনার জবাবে কাদের বলেন, ভারতের পশ্চিমবঙ্গে যে নির্বাচন হয়েছে সেখানে মমতা ব্যানার্জি বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে জিতেছেন। সেখানে মূল স্লোগান ছিলো ‘খেলা হবে’। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও দুর্নীতি, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ‘খেলা হবে’ বলে বক্তব্য দিয়েছেন। এটা কোনো হালকা বিষয় নয়। রাজনীতিতে এই পলিটিক্যাল হিউমার আছে। আমি কালকে বাড্ডায় বক্তব্য দিয়েছি। দেড়-দুই লাখ মানুষ সারা মাঠ ‘খেলা হবে’ স্লোগান দিয়েছেন। জনগণ তো এটা অপছন্দ করছেন না। আপনি কেন করছেন? আপনার ভালো লাগে না আপনি বলবেন না। আমি বলবো- এটা একটা পরিটিক্যাল স্লোগান।
তিনি বলেন, পশ্চিমবঙ্গ ও ভারতে এই স্লোগান বেশি হয়েছে। তাতে কি গণতন্ত্র হালকা হয়ে গেছে? জনগণ কি সেটা মনে করে? জনগণ তো সমস্বরে স্লোগান দিচ্ছে। যেহেতু জনগণ বলছে আমি তো সেজন্য বলছি। হালকা কথা। হালকা কৌতুক রাজনীতিতে আছে। গণতান্ত্রিক দেশে আরও বেশি হয়। বাজে ভাষা অশালীন ভাষায় আমরা কিন্তু কথা বলি না।
বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা তো মারামারি করতে বলিনি। বলছি- তাদের দুর্নীতিতে পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কথা। এটা পলিটিক্যাল টার্ম। ভোটচুরির জন্য এক কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার। ওয়ান ইলেভেন কি এমনিতেই এসেছে? দলীয় লোক দিয়ে আজিজ মার্কা নির্বাচন করতে গেছে। মনে আছে! এগুলি বলি।
তিনি বলেন, ২১ আগস্টের মাস্টারমাইন্ড মুফতি হান্নান জবানবন্দিতে জানিয়েছিলেন, হাওয়া ভবনের সিগনাল পেয়ে তারা গ্রেনেড হামলা শুরু করেছিল। এগুলো ভুলে গেছেন? হারুনুর রশীদ সাহেব (বিএনপির এমপি), শেখ হাসিনাকে টার্গেট করে হত্যার ষড়যন্ত্র করেছেন। মাস্টারমাইন্ড তারেক জিয়া। এসব কথা বললে আপনাদের গায়ে লাগে কেন? জ্বালা করে কেন? বুকে বড় জ্বালা! অন্তর জ্বালা।
বৈশ্বিক মহামারিকে পুঁজি করে বিএনপি অপরাজনীতি করতে চায়- এমন দাবি করে সড়ক পরিবহন মন্ত্রী বলেন, সারা দুনিয়ায় দুর্ভোগ। এদেশের প্রধানমন্ত্রী রাতে ঘুমান না। সারারাত জেগে থাকেন। সাধারণ মানুষ কষ্ট করছেন, দুর্ভোগে আছেন দেখে তারও কষ্ট হয়। সারা দুনিয়ায় মানুষ দুর্ভোগে আছে। এরজন্য আমরা দায়ী! রাশিয়া- ইউক্রেন যুদ্ধ। তারপর নিষেধাজ্ঞা। আর আমাদের অবস্থা আজকে বেহাল। আমরা গরিব দেশগুলোই সাফার করছি। পৃথিবীর অন্য দেশে এজন্য কেউ সরকারকে দায়ী করছে না। সরকারের পতন দাবী করছে না।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন