এইচএসসির বাংলা প্রশ্নপত্রের একটি প্রশ্নে সাম্প্রদায়িক উসকানি নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন নেটিজেনরা। এ ঘটনায় জড়িত কর্মকর্তাদের শাস্তি দাবি করেছেন তারা।
এদিকে, এইচএসসির প্রশ্নপত্রে সাম্প্রদায়িক উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ তদন্ত করার কথা জানিয়েছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার। সাম্প্রদায়িকতার অভিযোগের ব্যাপারে শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান বলেছেন, কীভাবে এবং কারা এই প্রশ্ন করেছে তা তদন্ত করা হচ্ছে।
শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি ঢাকায় একটি অনুষ্ঠান শেষে বলেন, বাংলাদেশ একটি ধর্মনিরপেক্ষ দেশ। পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে যদি এমন কিছু থাকে যা সাম্প্রদায়িকতাকে উস্কে দিতে পারে, তা দুর্ভাগ্যজনক এবং অগ্রহণযোগ্য। দীপু মনি বলেন, যারা প্রশ্ন সেট করেছে এবং মডারেট করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গত রোববার বাংলা প্রথম পত্র পরীক্ষা দিয়ে সারা দেশে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হয়েছে। তাতে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের প্রশ্নপত্রের সৃজনশীল অংশে একটি প্রশ্নে সাম্প্রদায়িক উস্কানির অভিযোগ ওঠে।
প্রশ্নপত্রের ১১ নম্বর প্রশ্নে সনাতন ধর্মের দুই ভাইয়ের জমি নিয়ে বিরোধের বিষয় তুলে ধরা হয়।
প্রশ্নে দেখানো হয়, নেপাল ও গোপাল নামের দুই ভাইয়ের জমি নিয়ে বিরোধের জেরে ছোট ভাই নেপাল তার বড় ভাইকে শায়েস্তা করতে আব্দুল নামের একজনের কাছে একাংশ জমি বিক্রি করে দেন। আব্দুল সেই জমিতে বাড়ি করে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন এবং কোরবানির ঈদে সেখানে গরু কোরবানি দেন। এতে জমি বিক্রেতা ভাইয়ের মন ভেঙে যায়, তিনি জমি-জমা সব ফেলে সপরিবারে ভারতে চলে যান।
এনিয়ে এক প্রতিক্রিয়ায় জৈষ্ঠ্য সাংবাদিক, কলামিস্ট ও গবেষক মেহেদী হাসান পলাশ লিখেছেন, ‘‘এটি এবছরের এইচএসসি পরীক্ষার বাংলা প্রথম পত্রের একটি প্রশ্ন। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা বোর্ড গুলোর কার্যক্রমের দিকে তাকালে এ ধরনের প্রশ্ন অস্বাভাবিক মনে হয় না! তবে জাতিকে আমরা কি বার্তা দিচ্ছি এ ধরনের প্রশ্নের মাধ্যমে সেটা ভেবে দেখা প্রয়োজন?’’
মোহাম্মাদ মোস্তফা ভুইয়া লিখেছেন, ‘‘যারা দায়িত্বে আছে তারা আসলে কি চান? যে বিষয়গুলি সামনে টেনে আনলে ধর্মীয় অনুভুতির একটা ভাবনাও এসে যায়, সেই বিষয়গুলিকে সামনে না এনে বিতর্কহীন প্রশ্ন করতে কি আমাদের শিক্ষকগণ অক্ষম? আমি বিশ্বাস করি আমাদের শিক্ষকগণ অনেক মেধাবী এবং যোগ্য, কাজেই আসুন সবাইকে নিয়ে সুন্দর ভাবে বাচি। অবান্তর বিষয়গুলিকে সামনে না আনি।’’
জিকো ইয়াসির আরাফাত লিখেছেন, ‘‘শিক্ষা নিয়ে অনেক বেশি হেলামি হয়ে গেসে, একটা জেনারেশন পাশ করে বলদ হয়ে বের হচ্ছে, এতো ছুটি স্কুল গুলোতে পরা তো স্কুল এ শেষ করতেই পারেনা, বাসায় গাদা গাদা পরা দিয়ে দেয় আর স্কুল শুধু প্রাতিষ্ঠানিক পরীক্ষাগার হিসেবে পরীক্ষা নেয়, আর সার্টিফিকেট প্রদান করে। বাচ্চারা কি শিখল, শিক্ষা টা আসলেও কি যুগ উপযোগী কিনা কেও চিনটা করে?’’
ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বশির আহমেদ লিখেছেন, ‘‘এই প্রশ্ন কিভাবে মডারেটর এর কাছে অস্বাভাবিক মনে হচ্ছেনা, স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে সাম্প্রদায়িক বিষ বাস্প ছড়ানোর উদ্দেশ্য ছিল।
একটি ধর্মের প্রতি বিদ্রুপ ছড়ানো এবং তাদের নিচু দেখানোর মানসিকতা ছিল এই প্রশ্নে। শিক্ষককে হতে হবে সব কিছুর উর্ধে কিন্তু সংকোচিত মন মানসিকতা থাকলে ছাত্ররা কি শিখব।’’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন