রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ০৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

বঙ্গবন্ধু রেলসেতু : কাজের অগ্রগতি ৪৭ শতাংশ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১১ নভেম্বর, ২০২২, ১২:০৩ এএম

ঢাকা ও উত্তরবঙ্গের ২২টি জেলার সঙ্গে
ট্রেন চলাচল সহজ করবে
রেল যোগাযোগে বিপ্লব আনবে বঙ্গবন্ধু রেল সেতু। পুরো দেশকে রেল নেটওয়ার্কের আওতায় আনতে মহাপরিকল্পনা অংশ হিসেবেই নির্মাণ হচ্ছে এটি। বড় আকারে রেলপথ সংযোগের আওতায় আসতে যাচ্ছে উত্তরবঙ্গ। আন্তর্জাতিক রুট হিসেবে ভারতের সঙ্গে রেল সংযোগ স্থাপনেও গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখবে বঙ্গবন্ধু রেল সেতু। নির্মাণাধীন এই সেতুকে সাধারণ ট্রেন ছাড়াও দ্রæতগতির হাইস্পিড ট্রেন চালানোর উপযুক্ত করে নির্মাণ করা হচ্ছে। ফলে সেতুতে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২৫০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চালানো যাবে। তবে শুরুতে সাধারণত ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচল করবে। বঙ্গবন্ধু বহুমুখী সেতু ব্যবহার করে বর্তমানে ৪৮টি ট্রেন চলাচল করছে। ২০২৪ সালে যখন বঙ্গবন্ধু রেলসেতু উদ্বোধন হলে উত্তরবঙ্গে উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল করবে। এতে উত্তরবঙ্গ থেকে সহজে পণ্য পরিবহন করা যাবে রাজধানীতে। বর্তমানে বঙ্গবন্ধু সেতু ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় পারাপারের সময় গতি কমিয়ে দেয়া হচ্ছে।
জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে সেতুর নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। বঙ্গবন্ধু সেতুর ৩০০ মিটার উজানে ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সেতুটির ব্যয় ধরা হয় ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি টাকা। জাপান ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে প্রকল্পটির বাস্তবায়ন করছে জাইকা। সিরাজগঞ্জ ও টাঙ্গাইল অংশে নদীর দুইপাড়ে দুইটি প্যাকেজে দেশি-বিদেশি কর্মী-প্রকৌশলীর তত্ত¡াবধানে সেতুটির নির্মাণ কাজ চলছে। এর আগে ২০২১ সালের মার্চে সেতুর পিলার নির্মাণে পাইলিংয়ের কাজ শুরু হয়। ১৯৯৮ সালে বঙ্গবন্ধু সেতু চালু হওয়ার পরই ঢাকার সঙ্গে সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগ স্থাপন হয়। তবে ২০০৮ সালে সেতুটিতে ফাটল দেখা দেয়ায় কমিয়ে দেয়া হয় ট্রেনের গতিসীমা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রমত্তা যমুনা নদীর ওপরে বঙ্গবন্ধু রেল সেতু নির্মাণ হচ্ছে। সেই উদ্যোগের একটি অংশ উত্তরের জনপদের রেলসংযোগ সংস্কার ও নতুন রেলপথ সংযোজন। যমুনা নদীতে দেশের বৃহত্তম বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে সেতুর নির্মাণ এগিয়ে চলেছে। এরই মধ্যে সেতুর ৪৭ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ঢাকা ও উত্তরবঙ্গের ২২টি জেলার সঙ্গে ট্রেন চলাচল সহজ করবে এই সেতু। এ সময়ে অর্থ ব্যয় হয়েছে ৬ হাজার ১৪৬ কোটি টাকা, যা মোট বরাদ্দের ৩৬ শতাংশ। এ প্রকল্পের ডিপিপি সংশোধন করায় সেতুর নির্মাণ ব্যয় বাড়াতে হয়েছে। বিস্তারিত নকশা প্রণয়নের পর প্রকল্পের ব্যয় ৭ হাজার ৪৭ কোটি টাকা বেড়ে ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৬ লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছে। সেতুর ৫০টি পিলারের মধ্যে ৩৪টির কাজ এগিয়েছে। ১২টির সুপার স্ট্রাকচারের কাজ চলছে। তবে ১৬টির কাজ ধরা হয়নি।
বঙ্গবন্ধু সেতুর সমান্তরাল ডুয়েল গেজ ডাবল ট্র্যাকসহ প্রায় ৪ দশমিক ৮০ কিলোমিটার এই রেলসেতুর দুইপাশে ০ দশমিক ০৫ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট, ৭ দশমিক ৬৬৭ কিলোমিটার রেলওয়ে অ্যাপ্রোচ অ্যামব্যাংকমেন্ট এবং লুপ ও সাইডিংসহ মোট ৩০ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণ করা হবে। বঙ্গবন্ধু রেলসেতুতে পাশাপাশি তিনটি স্টেশন বিল্ডিং, তিনটি প্লাটফর্ম ও শেড, তিনটি লেভেল ক্রসিং গেট ও ৬টি কালভার্ট নির্মাণ করা হচ্ছে। রেল সেতুর পূর্ব পাশে লুপ লাইনসহ প্রায় সাড়ে ১৩ কিলোমিটার, তেরটি কালভার্ট ও দুটি সংযোগ স্টেশন নির্মাণ করা হচ্ছে। ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাপান সফরকালে সে দেশের সরকার এ প্রকল্পে অর্থায়নে সম্মত হয়। ২০১৭ সালের মার্চে পরামর্শক নিয়োগ করা হয়। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে বিস্তারিত নকশা প্রণয়ন শেষ হয়। ২০২৪ সালের আগস্ট মাসের মধ্যে এ প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করা যাবে বলে আশাবাদী সংশ্লিষ্টরা।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক আল ফাত্তাহ মো. মাসউদুর রহমান বলেন, এ সময় প্রকল্পে কোনো চ্যালেঞ্জ নেই। সবকাজ সঠিকভাবেই সম্পন্ন হচ্ছে। এ প্রকল্পে জাইকা জাপানি মুদ্রা ইয়ানের মাধ্যমে অর্থায়ন করছে। সেজন্য চলমান ডলারের কোনো সঙ্কট এ প্রকল্পে প্রভাব ফেলবে না। আর এখনই ব্যয় বাড়ারও সম্ভাবনা নেই। প্রকল্পে ১০০০ হাজার শ্রমিক কাজ করছে, যার মধ্যে ৩০০ জন বিদেশি। ###

 

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন