শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

২৮ নভেম্বর থেকে নৌযান ধর্মঘট

ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশ বাঁধা দিতেই এই ঘোষণা : দাবি শ্রমিক দলের নেতাদের

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৪ নভেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

নৌযান শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ২০ হাজার টাকা ও কর্মক্ষেত্রে মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণ ১২ লাখ টাকা নির্ধারণ করে গেজেট প্রকাশসহ সাত দফা দাবিতে ২৭ নভেম্বর দিনগত রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে সারাদেশে লাগাতর ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে নৌযান শ্রমিকরা। আগামী ১০ ডিসেম্বর রাজধানীতে বিএনপির ডাকা মহাসমাবেশ বাঁধা দিতে এ নৌযান ধর্মঘটের ডাক হয়েছে বলে দাবি করেছে শ্রমিক দলের নেতারা। এদিকে বিএনপির শ্রমিক দলের নেতা সুমন ভুইয়া বলেন, বর্তমান সরকারে ১৩ বছরে নৌযান শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ২০ হাজার টাকা ও কর্মক্ষেত্রে মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণ ১২ লাখ টাকা নির্ধারণ করে গেজেট প্রকাশসহ সাত দফা বাস্তবায়ন এবং শ্রমিকদের জন্য কিছুই করতে পারেনি।

হঠাৎ করে সরকারী দলের নেতারা এ ঘোষণা দিয়েছে। তারা চায় আগামী ১০ ডিসেম্বর বিএমপির মহাসমাবেশ হবে। সেটা বন্ধে এ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। গতকাল রোববার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে সাধারণ নৌ-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ব্যানারে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এসময় উপস্থিত বিভিন্ন নৌযান শ্রমিক সংগঠনের নেতারা কর্মসূচির প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করে বলেন, যাত্রীবাহী লঞ্চ ও পণ্যবাহী জাহাজসহ সব ধরনের নৌযান এ ধর্মঘটের আওতায় থাকবে।

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ জাহাজী শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সবুজ সিকদার বলেন, প্রতি পাঁচ বছর পর নতুন মজুরি কাঠামো ঘোষণার বিধান থাকলে সর্বশেষ মজুরি কাঠামোর মেয়াদ গত বছরের ৩০ জুন শেষ হয়েছে। কিন্তু নৌযান মালিকদের সংগঠনগুলো বিষয়টি আমলে নিচ্ছে না। এছাড়া এ ১৬ মাসে নৌ মন্ত্রণালয় ও শ্রম অধিদপ্তরসহ সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে বহুবার দেন-দরবার করেও ফল পাওয়া যায়নি। এক প্রশ্নের জবাবে সবুজ সিকদার বলেন, গত সাত বছরে কয়েক দফা দ্রব্যমূল্য বেড়েছে। মজুরি-ভাতা বৃদ্ধি না হওয়ায় নৌযান শ্রমিকরা পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর দিন কাটাচ্ছে। এখন তাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। তাই সাধারণ শ্রমিকরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি দিতে বাধ্য হচ্ছে। তবে ২৭ নভেম্বরের মধ্যে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং শ্রম অধিদপ্তর মজুরি বৃদ্ধির গেজেট প্রকাশ করলে লাগাতর নৌ-শ্রমিক ধর্মঘটের কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হবে।

সাত দফা দাবি গুলো হচ্ছে, নৌপথে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, ডাকাতি, নৌ চ্যানেলে জাল ফেলে নৌযান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা ও বিভিন্ন স্থানে বিআইডব্লিউটিএর বারদিং ইজারার নামে চলন্ত জাহাজ থেকে চাঁদাবাজি-শ্রমিক নির্যাতন বন্ধ, চট্টগ্রাম চরপাড়া ঘাটের ইজারা বাতিল, নাব্যতাহীন নৌপথ ড্রেজিং এবং বয়া-বিকনবাতি ও মার্কা স্থাপন করে নৌ চলাচল সঠিক রাখ এবং অবৈধভাবে বালুমহাল ইজারা বন্ধ। ন্যূনতম মজুরি ২০ হাজার টাকা ও কর্মক্ষেত্রে মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণ ১২ লাখ টাকা নির্ধারণ করে গেজেট প্রকাশ। প্রত্যেক শ্রমিককে নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র ও সার্ভিস বুক প্রদান, স্বেচ্ছায় চাকরি ছাড়লে ছাড়পত্র প্রদান। চট্টগ্রাম বন্দরসহ সব নৌবন্দরে লাইটার জাহাজসহ অন্যান্য নৌযান রাখার জন্য পোতাশ্রয় নির্মাণ, ঘাট ইজারাদার ও বিআইডব্লিউটিসির ছাড়পত্র দেখার নামে বিভিন্ন স্থানে মালিকদের দালাল কর্তৃক শ্রমিক হয়রানি-নির্যাতন বন্ধ। উপকুলীয় জাহাজ চলাচলের চুক্তি ও বাংলাদেশ-ভারত নৌ প্রোটোকলের নিয়ম অনুযায়ী ভারতগামী জাহাজের শ্রমিকদের ল্যান্ডিং পাস, পোর্টভিসা, নিত্যপণ্য ক্রয়ের সুবিধা ও অসুস্থ শ্রমিকদের চিকিৎসার ব্যবস্থা। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পাইপলাইনে জ্বালানি তেল সরবরাহের কার্যক্রম পুনরায় বিবেচনা করে ট্যাংকার জাহাজগুলো নিরাপদে চলাচলের সুযোগ নিশ্চিত, নৌযানের ফিটনেস পরীক্ষা এবং ইনল্যান্ড মাস্টার, ড্রাইভার, সুকানী ও গ্রীজারদের যোগ্যতা নির্ধারণী পরীক্ষায় নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের অনিয়ম ও দালালদের দৌরাত্ব্য বন্ধ, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, খুলনা ও বরিশালে পরীক্ষা কেন্দ্র ও নৌ আদালত স্থাপন। যাত্রবাহী লঞ্চশ্রমিকদের গেজেট অনুযায়ী বেতন দেওয়া, বিভিন্ন ঘাট ও পন্টুনে নৌ পরিবহন অধিদপ্তর ও বিআইডব্লিউটিএর পরিদর্শক এবং মালিকদের হয়রানী ও শ্রমিকদের নামে মিথ্যা মামলা বন্ধ।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য রাখেন, নৌ-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সদস্য সচিব মো. মনিরুল ইসলাম মাস্টার। সংগঠনের আহ্বায়ক মো. মহিউদ্দিন ড্রাইভারের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বেপারী, বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়নের চট্টগ্রাম শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. হাবিবুর রহমান মাস্টার, নৌ-শ্রমিক নেতা আনিসুর রহমান ও এনায়েত হোসেন লিটন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (5)
শওকত আকবর ১৪ নভেম্বর, ২০২২, ৭:৪০ এএম says : 0
দেশের গনতান্ত্রিক আন্দলনে শ্রমিকশ্রেনী পাশে ছিলন।রাজপথ রেলপথ নৌপথ পাটকল টেক্সটাইল সহ সকল শিল্প প্রতিষ্ঠান স্বৈরাচার বিরোধী আন্দলনে সামিল ছিলেন।আজ কেন উল্টোপথে।আমার ভোটর অধিকার কই?সমাবেশ হলেই পরিবহন ধর্মঘট কিসের আলামত।
Total Reply(0)
Kbd Arafat Adnan Rahman ১৪ নভেম্বর, ২০২২, ৮:১৫ এএম says : 0
কি অবস্থারে ভাই বি এন পি তো এখন আর হরতাল ডাকে না, তবে এইসব হরতাল ডাকে কে যদি সরকারের মদদপুষ্ট না হয়,তবে তাদের সাথে আলোচনা করুক। আর ছাত্রলীগের নতুন কমিটি না দেওয়ার ঘোষণা থাকা সত্ত্বেও ঢাকায় বি এন পি সমাবেশের ৬ দিন আগে সম্মেলন আহবান করে দেশের ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতা কর্মীদেরও ঢাকায় আনা হচ্ছে। এটার মানে কি দাঁড়ায়
Total Reply(0)
Kashem Fakir ১৪ নভেম্বর, ২০২২, ৮:১৫ এএম says : 0
তার মানে ১২ দিন বন্ধ থাকবে???????????? দেশ এমনি অচল হয়ে যাবে।
Total Reply(0)
মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন ১৪ নভেম্বর, ২০২২, ৮:১৫ এএম says : 0
১০ তারিখ সন্ধ্যা পর্যন্ত চলবে ???? বিএনপির চালাকী আর কাজ হবে না, ২-৪ দিন আগে থেকে সমাবেশস্থলে চলে যাওয়া আর হবে না,, দেশ এগিয়ে যাচ্ছে
Total Reply(0)
N Islam ১৪ নভেম্বর, ২০২২, ৮:৫৪ এএম says : 0
ওইদিন যদি সারাদেশে প্রতিটি জেলা/উপজেলায় গণসমাবেশের ডাক দেয়া হয়, তাহলে মনে হয়, সারাদেশেই সরকারী হরতাল হবে ।
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন