শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

পুরুষের ব্যক্তিগত উন্নতিতেও বড় বাধা বাল্যবিবাহ -গওহর রিজভী

প্রকাশের সময় : ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ বিষয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ‘বাল্যবিবাহ নারীর ক্ষমতায়নে বড় বাধা’ বাক্যটি বেশি বেশি উচ্চারিত হলেও প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী এর সঙ্গে যোগ করলেন, পুরুষের ব্যক্তিগত উন্নতিতেও বড় বাধা বাল্যবিবাহ।
গতকাল মহাখালীস্থ বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিল (বিএমআরসি) মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশে বাল্যবিবাহ’ শীর্ষক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা আরও বলেন, অপরিণত বয়সে বিয়ের ফলে নারী যেমনি শারীরিক, মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন, পুরুষও হন। পুরুষ যদি বাল্যবিবাহের শিকার না হন, তিনি পড়ালেখার সুযোগ পাবেন, পুলিশ অফিসারও তো হতে পারেন, সর্বোপরি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে সুখী সংসার গড়ার সুযোগ পাবেন। একজন নারীর ক্ষেত্রেও তা-ই। দ্রুত বিয়ে হলে এসব কীভাবে সম্ভব?
বিএমআরসির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মাহমুদ হাসানের সভাপতিত্বে ও পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেনÑ মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি, বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডার রাষ্ট্রদূত বেনওয়া পিয়ের লাঘামে। মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেনÑ সংসদ সদস্য প্রফেসর ডা. হাবিব এ মিল্লাত।
মুক্ত আলোচনায় অংশ নেনÑ চারজন নারী সংসদ সদস্য। তারা হলেনÑ শিরিন আখতার, ফজিলাতুন্নেসা বাপ্পী, আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী, নূরজাহান বেগম মুক্তা। সংসদ সদস্য ডা. এনামুর রহমান, পীর ফজলুর রহমানের পাশাপাশি পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি রেবেকা সুলতানা, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা, জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল, জাতিসংঘ শিশু তহবিলসহ বিভিন্ন দাতা সংস্থা, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন।
সংসদ সদস্যদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে গওহর রিজভী বলেন, সংসদ সদস্যদের মনে করতে হবেÑ আপনাদের এলাকায় যারা বাল্যবিবাহের ঝুঁকিতে কিংবা যারা বাল্যবিবাহের শিকার হতে যাচ্ছে, তারা আপনাদেরই সন্তান। গ্রামের মানুষকে আপনারাই সচেতন করতে পারবেন। সংসদে যতো নারী সদস্য আছেন সবাইকেই তিনি যার যার এলাকায় বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে সক্রিয় ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান তিনি। গওহর রিজভী মনে করেনÑ বাল্যবিবাহের শিকার যারা, প্রকারান্তরে তারা যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছেন।
মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, শুধুমাত্র বাল্যবিবাহ বন্ধ করলেই নিজেদের সফল দাবি করা যাবে না। একইসঙ্গে দেখতে হবেÑ কী কারণে সংশ্লিষ্ট পরিবার মনস্থির করলেন তার সন্তানকে বাল্যবিবাহ দেয়ার, সেই কারণ সমাধান করতে হবে। অনেকে আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে বাল্যবিবাহের কথা ভাবেন। তাকে সচ্ছল করতে হবে। সরকার সেই ব্যবস্থা করেছে, এসব কাজে লাগাতে হবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, অনেক অভিভাবক মনে করেনÑ সন্তানকে দ্রুত, অর্থাৎ বাল্যবিবাহ করিয়ে ঝামেলা দূর করবেন। কিন্তু এতে ঝামেলা বাড়ে। সেই সন্তান থেকে সুস্থ্য প্রজš§ জš§ নেয় না। শারীরিক, মানসিক, সাংসারিকভাবে তারা সফল হতে পারেন না। কমপক্ষে ১৮ বছর বয়সেই মেয়েদের বিয়ের বয়স চূড়ান্ত করা হবে বলে উল্লেখ করেন প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, অভিভাবকরা সন্তানের হাতে তুলে দিচ্ছেন মোবাইল। কিন্তু সন্তান মোবাইল দিয়ে কী করছে, কার সঙ্গে কথা বলছে, এর মাধ্যমে কোনো অন্যায়ে জড়াচ্ছে কি-না, সেটা নজরদারি করে না। এ অবস্থায় মোবাইল দিয়ে লাভ কী। এটা তো সন্তানের জন্য ক্ষতিই ডেকে আনছে। সংসদ সদস্য নূরজাহান বেগম মুক্তা বলেন, শুধু আইন দিয়েই যদি বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ করা যেত, তবে আরো আগেই সফলতা আসতো। আইনের পাশাপাশি দরকার মানসিকতার পরিবর্তন, সচেতনতা। বাল্যবিবাহ নারীর ক্ষমতায়নে বড় বাধা বলেও মত দেন তিনি।
একটি পরিসংখ্যানের উদ্ধৃতি দিয়ে এই সংসদ সদস্য বলেন, বাল্যবিবাহের শিকার ৫০ ভাগ নারী আত্মহত্যার শিকার। বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে আইন আছে, ৭৬ শতাংশ অভিভাবক এটা জেনেশুনেও বাল্যবিবাহে লিপ্ত হন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন