শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

শ্রমিকদের মধ্যে ছাঁটাই আতঙ্ক

বৈশ্বিক অর্থনীতির মন্দার ঢেউ বাংলাদেশে শিল্পকারখানার মালিকদের দাবি তারা বেশি টাকা দিয়ে গ্যাস-বিদ্যুৎ কিনতে চাইলেও তা পাচ্ছেন না; ফলে বসে বসে শ্রমিকদের বেতন দিতে হচ্ছে; এ অবস্থায় হ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৮ নভেম্বর, ২০২২, ১২:০৫ এএম

করোনার পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বৈশ্বিক অর্থনীতি বিপর্যয়ের মুখে ফেলেছে। বৈশ্বিক অর্থনীতির মন্দার এই ঢেউ বাংলাদেশে আছড়ে পড়ছে। সেই মন্দার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে গ্যাস-বিদ্যুতের সঙ্কট। এমনিতেই ডলার সঙ্কট ও প্রতিটি পণ্যের মূল্য বেড়েছে; তার মধ্যে গ্যাস-বিদ্যুতের ঘাটতি দেশের সব ধরনের শিল্পকারখানার ‘উৎপাদনের চাকা’ টেনে ধরেছে। বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সরবরাহ কমে যাওয়ায় গার্মেন্টস শিল্প, টেক্সটাইল, ওষুধ, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, কৃষি প্রক্রিয়াজাত পাট ও পাটজাত পণ্যের কারখানাগুলোতে উৎপাদন কমে গেছে। দৈনিক কর্মঘণ্টার অর্ধেক সময় শ্রমিকদের বসে রেখে বেতন গুনতে হচ্ছে। এতে ৬০ শতাংশ বস্ত্রকল ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। গার্মেন্টস, বস্ত্র, টেক্সটাইল মিল, নিটিং কারখানাসহ ছোট ছোট কারখানাগুলো সচল রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে। ফলে এসব কারখানায় কর্মরত প্রায় দেড় কোটি শ্রমিক চাকরি হারানোর ভয়ে আতঙ্কিত। অনেক কারখানায় কর্মী কমাতে শ্রমিক ছাঁটাই শুরু হয়েছে। গার্মেস্টসে কাজ করা ৪০ লাখ শ্রমিকের মধ্যে নারী শ্রমিক প্রায় ৩০ লাখ। তাদের মধ্যে চাকরি হারানোর ভয় দেখা দিয়েছে। গতকালও জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের নেতৃত্বে রাজধানীর বিজয়নগরে ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধন শেষে বিজয়নগরে শ্রম অধিদফতরে স্মারকলিপি দেয়া হয়।

রাজধানী ঢাকার পাশের সাভার, ডেমরা, শ্যামপুর, মানিকগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, গাজীপুর, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ, যশোর, খুলনা, চট্টগ্রাম, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহে হাজার হাজার শিল্পকারখানা গড়ে উঠেছে। এসব কারখানায় কাজ করেন প্রায় দেড় কোটি শ্রমিক। পোশাক, টেক্সটাইল, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, কৃষি প্রক্রিয়াজাত, পাট ও পাটজাত ওষুধ, চিনি শিল্প ছাড়াও ছোট-বড় নানা ধরনের শিল্প বিদ্যুৎ ও গ্যাসের অভাবে বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। বিভিন্ন কারখানায় কাজ করা শ্রমিকরা জানান, গ্রাস-বিদ্যুতের অভাবে ২৪ ঘণ্টার বদলে অনেক কারখানায় ১০ ঘণ্টা কোনো কোনো কারখানায় ১২ ঘণ্টা উৎপাদন বন্ধ থাকছে। কিছু কারখানা দিনের বেশির ভাগ সময় জেনারেটর দিকে উৎপাদন চালু রাখলেও ডিজেলের দাম বেশি হওয়ায় উৎপাদনে দ্বিগুণ খরচ হয়ে থাকে। শ্রমিকরা বলছেন, হঠাৎ করে গ্যাস ও বিদ্যুৎ সঙ্কটে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। শিল্পকারখানার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন এভাবে চলতে থাকলে অর্ধেক শ্রমিক ছাঁটাই করে কারখানা টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করা হবে। গতকাল নারায়ণগঞ্জের শিল্পনগরীর ফতুল্লা বিসিক, আদমজী, কাঁচপুর, নরসিংদীর বড়পা, পলাশ ঘুরে দেখা গেছে গ্যাস ও বিদ্যুৎ সঙ্কটে বেশিরভাগ রফতানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানে উৎপাদন কমে গেছে। এর মধ্যেই বন্ধের পথে অনেক টেক্সটাইল মিল, নিটিং কারখানা ও গার্মেন্টস। তৈরি পোশাক শিল্পের নীটওয়্যার খাতের উৎপাদন ৪০ থেকে ৬০ শতাংশ কমে গেছে। সঙ্কট কাটানো না গেলে দেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। তাই গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন রাখতে সরকারের সহযোগিতা চান উদ্যোক্তারা। সম্প্রতি বস্ত্রকল মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি মোহাম্মদ আলী সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, গাজীপুর ও নরসিংদীর শিল্পাঞ্চলে প্রতিদিন গড়ে ১২ ঘণ্টা গ্যাস থাকছে না। গ্যাস-বিদ্যুতের সঙ্কটের কারণে ৬০ শতাংশ বস্ত্রকল ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। দ্রুত সঙ্কট সমাধান করে নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ করা না হলে অনেক শিল্পকারখানা বন্ধ হয়ে যাবে। চাকরি হারাবেন শ্রমিকরা। ব্যাংকও তাদের পুঁজি হারাবে। প্রয়োজনে বেশি দামে গ্যাস-বিদ্যুৎ কিনব।

শিল্পকারখানার মালিকরা বেশি দামে গ্যাস-বিদ্যুৎ কিনতে চাইলেও সরকার সেটাও দিতে পারছে না বলে জানা গেছে। একদিকে বৈশ্বিক সঙ্কট অন্যদিকে রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কিনে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে। শিল্প কারখানায় গ্যাস-বিদ্যুতের সরবরাহ স্বাভাবিক করতে না পারলে উৎপাদন ব্যহত হবে; লাখো শ্রমিক চাকরি হারাবেন। এতে নতুন করে বেকারের তালিকা বেড়ে যাবে।

চট্টগ্রাম ব্যুরোর রফিকুল ইসলাম সেলিম জানান, মন্দার প্রভাবে চট্টগ্রামের বিভিন্ন শিল্প-কারখানায় কৌশলে শ্রমিক ছাঁটাই শুরু হয়ে গেছে। বন্ধ রয়েছে নতুন নিয়োগও। বিশেষ করে ছোট ছোট তৈরি পোশাক কারখানায় শ্রমিকদের ছাঁটাই করা হচ্ছে। এরই মধ্যে এমন অনেক কারখানা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আরো কিছু কারখানা বন্ধের উপক্রম হয়েছে।

এতে বন্দর নগরীরসহ বৃহত্তর চট্টগ্রামের শিল্পাঞ্চলগুলোতে শ্রমিকদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। নজিরবিহীন মূল্যস্ফীতিতে দিশেহারা নিম্ন আয়ের মানুষ। তার উপর কর্মহীন হয়ে পড়া শ্রমিকরা পরিবার-পরিজন নিয়ে গভীর সঙ্কটে পড়েছেন। ব্যাপক হারে শ্রমিক ছাঁটাই শুরু হলে শ্রম অসন্তোষ দেখা দিতে পারে বলেও অনেকে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন। গেল কয়েক মাস ধরে দেশে গ্যাস, বিদ্যুৎসহ তীব্র জ্বালানি সঙ্কট চলছে। এতে কল-কারখানায় উৎপাদনে ধস নামে। এর সাথে যোগ হয়েছে ডলার সঙ্কট।

ডলারের জোগান দিতে না পেরে ব্যাংকগুলো আমদানির জন্য এলসি খোলা কমিয়ে দিয়েছে। এতে কলকারখানায় দেখা দিয়েছে কাঁচামালের সঙ্কট। আবার বিশ্ব অর্থনীতিতেও চলছে মন্দা। এর প্রভাবে বাংলাদেশি পণ্য বিশেষ করে শতভাগ তৈরি পোশাকের অর্ডারও কমে গেছে। নানামুখী সঙ্কটে পড়েছে শ্রমঘন এই তৈরি পোশাক খাত। একদিকে উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে, অন্যদিকে কাঁচামালের সঙ্কটে ইস্পাত, সিমেন্টসহ অন্য কারখানাগুলোতেও উৎপাদনের চাকা থমকে গেছে। অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাবে মার্কেট, বিপণিকেন্দ্র, ছোট ছোট কলকারখানাও কাজ কমে গেছে। এতে অনেক শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি আতঙ্কে আছেন পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। এর মধ্যে অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে।

শিল্পাঞ্চল পুলিশ-৩ এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সোলায়মান পিপিএম বলেন, প্রায় ১৫ থেকে ২০টির মতো ছোট ছোট কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার তথ্য আমাদের কাছে আছে। এসব কারখানা সাব কন্ট্রাক্টে পোশাক তৈরি করত। এমন আরো কিছু কারখানা বন্ধ হওয়ার পথে। বড় কারখানাগুলোতে এখনও শ্রমিক ছাঁটাইয়ের কোনো ঘটনা ঘটেনি জানিয়ে তিনি বলেন, সঙ্কটের কারণে মালিক-শ্রমিক উভয়ে আতঙ্কে আছে। শ্রমিকদের নিয়ে কাজ করেন হাসান মারূফ রুমী। তিনি বলেন, কৌশলে শ্রমিকদের ছাঁটাই করা হচ্ছে। কিছু বেতন ধরিয়ে দিয়ে অনেককে বিদায় করে দেয়া হচ্ছে। আবার কোথাও কোথাও কাজের চাপ বাড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। তবে এসব ক্ষেত্রে শ্রমিকেরা ধৈর্যের সাথে পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে। তবে বিজিএমইএর সহ-সভাপতি রাবিকুল আলম চৌধুরী বলেন, সঙ্কট থাকলেও এখনও বিজিএমইএর সদস্যভুক্ত কোনো কারখানায় শ্রমিক ছাঁটাইয়ের ঘটনা ঘটেনি। যেসব কারখানায় ছাঁটাই হচ্ছে সেসব কারখানা বিজিএমইএর সদস্য নয়। দেশে চলমান জ্বালানি সঙ্কট আর বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার কারণে এই খাত গভীর সঙ্কটে রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, মালিক-শ্রমিক মিলে আমরা এই পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা করছি।

চট্টগ্রামে সরকারি-বেসরকারি তিনটি ইপিজেড ছাড়াও বিভিন্ন শিল্পাঞ্চলে লাখ লাখ শ্রমিক কাজ করেন। ইপিজেডগুলোতে এখনও শ্রমিক ছাঁটাইয়ের মতো কোনো পরিস্থিতি হয়নি বলে জানান কর্মকর্তারা। তবে ইপিজেডের বাইরে শিল্প কারখানার পরিস্থিতি নাজুক। কারখানা মালিকরা বলছেন, কাজ নেই, লোকসান দিয়ে কারখানা চালু রাখা সম্ভব হবে না।

খুলনা ব্যুরো ব্যুরো জানায়, খুলনা-যশোর অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত ৯টি পাটকল লোকসানের দায়ে দু’বছর ধরে বন্ধ রয়েছে। ইজারার মাধ্যমে পাটকলগুলো চালু করার চেষ্টা করছে সরকার। মহামারি করোনা, আন্তর্জাতিক বাজারে হঠাৎ পাটজাত দ্রব্যের চাহিদা কমে যাওয়া, আন্তর্জাতিক ক্রেতা ধরতে ব্যর্থতা এবং সর্বশেষ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বেসরকারি পাটকলগুলোর উৎপাদন মুখ থবড়ে পড়ার উপক্রম হয়েছে। গত ৬ মাসে আন্তর্জাতিক ক্রেতারা অনেকগুলো ক্রয় আদেশ বাতিল করেছেন। নতুন করে আন্তর্জাতিক ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে পাটকলগুলো ‘লে অফের’ দিকে হাঁটছে। ইতিমধ্যে যশোরের নওয়াপাড়ায় আকিজ পাটকলের প্রায় সাড়ে ৬ হাজার কর্মীকে অলিখিতভাবে ছাঁটাই করা হয়েছে। খুলনার সোনালী, এজাক্সসহ কয়েকটি পাটকলের শ্রমিক-কর্মচারীদের ছাঁটাই করার পরও দীর্ঘদিন ধরে তাদের পাওনা পরিশোধ না করায় তারা আন্দোলনে রয়েছে। আইয়ান পাটকল, গোরি পাটকল, ওহাব পাটকলগুলোও ক্রেতা সঙ্কটে পড়েছে। সার্বিকভাবে বেসরকারি পাটশিল্পে চরম দুরবস্থা দেখা দিয়েছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে খুলনা-যশোর শিল্পাঞ্চলের প্রায় এক লাখ শ্রমজীবী মানুষ বেকার হয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বিশ্ববাজারে ক্রেতা না থাকায় যশোরের নওয়াপাড়ার আকিজ জুট মিলের রাতের শিফট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। স্থায়ী এক হাজার শ্রমিক ছাড়া প্রায় সাড়ে ৬ হাজার বদলি শ্রমিককে নিষেধ করে দেয়া হয়েছে। সূত্র জানায়, আকিজ জুট মিল দেশে বেসরকারি খাতে পরিচালিত দেশের অন্যতম বৃহৎ জুট মিল। এ জুট মিলে তিন শিফটে যশোর, খুলনা, সাতক্ষীরা ও নড়াইল জেলার বিভিন্ন উপজেলার ৭ হাজারের অধিক শ্রমিক নিয়মিত কাজ করেন। প্রতিদিন তাদের ২৩টি বাসে কারখানায় আনা-নেয়া করা হয়। গত মঙ্গলবার থেকে আকস্মিকভাবে বাস সার্ভিস বন্ধ করে দিয়েছে মিল কর্তৃপক্ষ। শ্রমিকরা জানায়, সাড়ে ৬ হাজার অস্থায়ী শ্রমিককে কারখানায় আসতে নিষেধ করে দেয়া হয়েছে।

জুট মিলের সিবিএ সভাপতি আব্দুস সালাম জানান, মিলে ছয় হাজার ৩০০ বদলি শ্রমিক রয়েছে। তাদের কাজে আসতে নিষেধ করা হয়েছে। বাকি ৭০০ স্থায়ী কর্মী দিয়ে মিলের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
আকিজ পাটকলের নির্বাহী পরিচালক শেখ আব্দুল হাকিম বলেন, আমরা কোনো কর্মী ছাঁটাই করিনি। মিল সকাল ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত পুনর্গতিতে চালু রয়েছে। শুধু রাতের শিফট বন্ধ রেখেছি। আর ওই শিফটের অধিকাংশ কর্মী ডে শিফটে কাজ করছেন। হয়তো হাজার খানেক কর্মী কাজে আসা বন্ধ দিয়েছে।

এদিকে, খুলনাঞ্চলের সোনালী, এজাক্সসহ বেসরকারি পাটকলগুলো কয়েক বছর ধরে বন্ধ রয়েছে। ২০১৩ সাল থেকে শিল্পাঞ্চলের বেসরকারি জুট মিলগুলো একের পর এক বন্ধ হওয়া শুরু হয়। পাওনার দাবিতে এ সকল পাটকলের শ্রমিক কর্মচারীরা আন্দোলন করে আসছেন।

ফেডারেশনের সভাপতি গোলাম রসুল খান বলেন, মিলগুলোর না খাওয়া নির্যাতিত-নিপীড়িত অসহায় শ্রমিকরা তাদের পাওনার দাবিতে দীর্ঘ ৮ বছর যাবত রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করে আসছে। মিলগুলোর মালিকদের কাছে শ্রমিকদের লাখ লাখ টাকা পাওনা থাকা সত্ত্বেও শ্রমিকরা না খেয়ে অনাহারে-অর্ধাহারে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করছে। এখনও অনেকে অর্থাভাবে বিনা চিকিৎসায় ধুঁকেধুঁকে মৃত্যুর দিকে ধাবিত হচ্ছে। আগামী ১৮ নভেম্বর শুক্রবার বিকাল ৩টায় শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান এমপির বাস ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালনের মধ্যে দিয়ে সমস্যার সমাধান না হলে তাৎক্ষণিকভাবে আমরণ-গণঅনশন, রাজপথ-রেলপথ অবরোধসহ কঠোর কর্মসূচি নিয়ে মাঠ নামা হবে।

যশোরের অভয়নগর উপজেলা সংবাদদাতা নজরুল ইসলাম মল্লিক জানান, যশোরের অভয়নগরে আকিজ জুট মিলের কাজ হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন শ্রমিকরা। কীভাবে তাদের সংসার চলবে ভেবে পারছেন না তারা। চাকরি হােিয় কান্নায় ভেঙে পড়েন উপজেলার পায়রা ইউনিয়নের কুলসুম বেগম। তিনি বলেন, আকিজ জুট মিলে কাজ করে আমার সংসার চলে। কাল থেকে কীভাবে সংসার চালাব ভেবে পাচ্ছি না।

এদিকে গতকাল ঢাকার আগুলিয়ায় রাইজিংটের ফ্যাশন লিমিটেড কারখানা কর্তৃপক্ষের নারী শ্রমিকদের যৌন হয়রানি এবং বেআইনিভাবে চাকরিচ্যুত প্রতিবাদ ও তাদের পুনর্বহালের দাবিতে গার্মেন্টস শ্রমিকরা মানববন্ধন করেছেন। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের নেতৃত্বে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (6)
MD Aman Ullah ১৭ নভেম্বর, ২০২২, ৮:০১ এএম says : 0
খবুই কঠিন অবস্থার দিকে যাচ্ছে পরিস্থীতি। এর প্রভাব সাধারণ মানুৃষের উপরও পরবে। শিল্প কারখানা অচল হতে থাকলে, দেশের অর্থনীতিও আস্তে আস্তে দূর্বল হতে থাকবে।
Total Reply(0)
Ismail Sagar ১৭ নভেম্বর, ২০২২, ৭:৫৮ এএম says : 0
এই দুর্দিনে শ্রমিকদের পাশে দাঁড়াতে না পারলে কিসের শক্তিশালী শিল্পপতি?
Total Reply(0)
Md Ali Azgor ১৭ নভেম্বর, ২০২২, ৭:৫৭ এএম says : 0
শ্রমিকদের মধ্যে ছাঁটাই আতঙ্ক
Total Reply(0)
Mohammad Niamul Alam ১৭ নভেম্বর, ২০২২, ৭:৫৮ এএম says : 0
দেশটার বারোটা বাজাইয়া সারছে সামনে জানি আরও কি বিপদ আছে একমাত্র আল্লাহ অই ভাল জানে,আল্লাহ তোমার রহমতের আশায় আছি
Total Reply(0)
Nadim Ahmed Saimon ১৭ নভেম্বর, ২০২২, ৮:০০ এএম says : 0
সবাইকে একটার পর একটার মুখো মুখি হতে হবে,,, সামনে আরো হবে,, সাধারণ জনগন মরবে,, মধ্যবিওরা মরবে,,!সব উন্নয়ন আর উন্নয়ন,,,।
Total Reply(0)
MD Roman Ahmed ১৭ নভেম্বর, ২০২২, ৮:০০ এএম says : 0
সরকারের কিছু করার নাই, আগেই বলে দিয়েছে,, আর চিল্লাইয়া লাভ নাই,, তারা আছে বি এন,পি কে কি ভাবে নিষ্স করবে, দেশ কোথায় যাচ্ছে এইতা দেখার সময় নাই
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন