দক্ষিণ আমেরিকার দেশ কলম্বিয়ায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে কমপক্ষে ১৮ জন নিহত হয়েছেন। মূলত দেশটির পরস্পর-বিরোধী সশস্ত্র বিদ্রোহী দলগুলোর মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়লে প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটে। দেশটির সরকার জানিয়েছে, রেভ্যুলেশনারি আর্মড ফোর্সেস অব কলম্বিয়া (ফার্ক)-র সাবেক সদস্য এবং মাদক পাচারের সাথে যুক্ত আরেকটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষে প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটে। সোমবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি এবং সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু। এতে বলা হয়েছে, কলম্বিয়ায় পরস্পর-বিরোধী সশস্ত্র বিদ্রোহী দলগুলোর মধ্যে সংঘর্ষে কমপক্ষে ১৮ জন নিহত হয়েছেন। গত শনিবার ইকুয়েডরের সীমান্তবর্তী দক্ষিণ-পশ্চিম কলম্বিয়ায় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে বলে দেশটির সরকারি ন্যায়পালের কার্যালয় জানিয়েছে। এএফপি বলছে, সংঘর্ষে জড়িত বিদ্রোহীরা রেভ্যুলেশনারি আর্মড ফোর্সেস অব কলম্বিয়া (ফার্ক)-র ভিন্নমতাবলম্বী সদস্য এবং তারা ২০১৬ সালে দেশটিতে সরকারের সঙ্গে স্বাক্ষরিত শান্তিচুক্তির বিরোধী। গত শনিবার তারা দেশটির মাদক পাচারের সাথে যুক্ত একটি অপরাধী গোষ্ঠীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায়। এই অপরাধী চক্রটি নিজেদেরকে কমান্ডোস দে লা ফ্রন্টেরা বা বর্ডার কমান্ডো বলে পরিচয় দিয়ে থাকে। বর্ডার কমান্ডো গোষ্ঠীর বেশিরভাগ যোদ্ধা মূলত আগে ফার্কের সঙ্গে ছিল এবং বাকিরা ইকুয়েডর ও ব্রাজিলে কোকেন পাচারে সক্রিয় একটি উগ্রপন্থি আধাসামরিক গোষ্ঠীর সদস্য ছিলেন। বিবদমান এই দুই গ্রুপ অন্তত তিন বছর ধরে পুতুমায়ো সীমান্ত এলাকার কিছু অংশে চোরাচালানের রুট নিয়ন্ত্রণের জন্য লড়াই করছে। গত শনিবার হওয়া উভয়পক্ষের এই লড়াইটি ইকুয়েডরের দক্ষিণ সীমান্ত থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার (৩৭ মাইল) দূরে পুয়ের্তো গুজমান এলাকায় ঘটেছে বলে কম্বোডিয়ার ন্যায়পালের কার্যালয় জানিয়েছে। রাষ্ট্রীয় বাহিনী ও বামপন্থি গেরিলা, ডানপন্থি আধাসামরিক বাহিনী এবং মাদক পাচারকারীদের বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে গত অর্ধ শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে সশস্ত্র সংঘর্ষের শিকার হয়েছে কলম্বিয়া। তবে ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে কলম্বিয়ার বিদ্রোহী গোষ্ঠী রেভ্যুলেশনারি আর্মড ফোর্সেস অব কলম্বিয়ার (ফার্ক) সঙ্গে দেশটির সরকারের একটি শান্তি চুক্তি হয়। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী ফার্ককে ভেঙে দেওয়া হয়। এর মাধ্যমে টানা পাঁচ দশক ধরে চলা একটি রক্তাক্ত অধ্যায়ের সমাপ্তি হয়। কিন্তু ইএলএন, ফার্কের ভিন্নমতাবলম্বী, ডানপন্থি সাবেক বেসামরিক বাহিনীগুলো ও অপরাধী গোষ্ঠীগুলো দেশটিতে এখনও তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের আগে দীর্ঘ ৫২ বছরের এই সশস্ত্র সংঘাতে আনুমানিক ২ লাখ ৬০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। আর সংঘাতের কারণে বাস্তুচ্যুত হয়েছিলেন ৬০ লাখেরও বেশি মানুষ। এদিকে প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেট্রোর সরকার চার বছরের বিরতির পর কলম্বিয়ার সর্বশেষ সক্রিয় বিদ্রোহী সেনাবাহিনী ইএলএন-এর সাথে কারাকাসে সোমবার থেকে শান্তি আলোচনা পুনরায় শুরু করতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে। এএফপি, দ্য হিন্দু।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন