স্টাফ রিপোর্টার : জলবায়ু পরিবর্তন রোধে প্যারিস সম্মেলনের চুক্তি বাস্তবায়ন ও চুক্তির সুবিধাভোগে বাংলাদেশকে দ্রুত প্রস্তুতি সম্পন্ন করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এজন্য দর কষাকষি, ডকুমেন্টেশন, ফান্ড ম্যানেজম্যান্ট, তথ্যবহুল বিজ্ঞানভিত্তিক জ্ঞান অর্জন, অ্যাডাপটেশন ও মিডিটেশন সক্ষমতা বাড়ানো এবং প্রযুক্তিগত জ্ঞান অর্জনের ওপর জোর দেন তারা।
গতকাল বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে বাংলাদেশ পরিবেশ সাংবাদিক ফোরাম ও এশিয়া-প্যাসিফিক পরিবেশ সাংবাদিক ফোরাম আয়োজিত ‘প্যারিস জলবায়ু সম্মেলনের প্রাপ্তি : ভবিষ্যৎ করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় এ মতামত দেয়া হয়। আলোচনায় সম্প্রতি প্যারিসে অনুষ্ঠিত সম্মেলনের সফলতা ও দুর্বলতা চিহ্নিত করা হয়।
বাংলাদেশ পরিবেশ সাংবাদিক ফোরাম ও এশিয়া-প্যাসিফিক পরিবেশ সাংবাদিক ফোরামের সভাপিত কামরুল ইসলামের পরিচালনায় সাবেক বন ও পরিবেশমন্ত্রী এবং জাতীয় সংসদের বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ড. হাছান মাহমুদ, ইউএনইএসসিএপি’র সাবেক বিভাগীয় প্রধান ড. রেজাউল করিম, বিআইডিএস’র প্রফেসরিয়াল ফেলো ড. এম আসাদুজ্জামান, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ইমেরিটাস ও পানি বিশেষজ্ঞ ড. আইনুন নিশাত প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। ড. হাছান মাহমুদ বলেন, প্যারিস সম্মেলনের সবচেয়ে বড় অগ্রগতি হলো, এতদিন পর পৃথিবীর ১৯৬টি রাষ্ট্র জলবায়ু পরিবর্তনে তাদের করণীয় নির্ধারণে একমত হয়ে একটি চুক্তিতে পৌঁছেছে। আর সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হলো এই চুক্তি লঙ্ঘনে কোনো শাস্তির বিধান নেই।
ড. এম আসাদুজ্জামান বলেন, প্যারিস চুক্তি রিভিউর মাধ্যমে আরও ঘষামাজা করার সুযোগ রয়েছে। যা এপ্রিল-মে থেকে শুরু হবে। এ চুক্তিতে বাংলাদেশ এবং স্বল্পোন্নত দেশগুলোর (এলডিসি) জোটের জন্য ভালো কিছু আছে। তবে এক্ষেত্রে বাংলাদেশের কিছু সমস্যাও আছে। বাংলাদেশ না ঘরকা না ঘাটকার মধ্যে আছে। আমরা আসলে এলডিসি দেশ নাকি নিম্ন-মধ্য আয়ের দেশ, এটা নিয়ে সমস্যা আছে। আমরা হয়তো আর ১০-১৫ বছর চুক্তি থেকে সুবিধা পাবো। কিন্তু মধ্য আয়ের দেশ হয়ে গেলে কিছুই পাওয়ার থাকবে না। তাই দ্রুত সুবিধা নিতে আমাদের সবক্ষেত্রে প্রস্তুতি নিতে হবে। দেশের মধ্যে নলেজ বেজড ইনটেগ্রেশন ক্যাপাসিটিও বাড়াতে হবে।
ড. আইনুন নিশাত বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন একটি স্বীকার্য বিষয়। এটা প্রযুক্তি দিয়ে মোকাবেলা করা যায় না। এজন্য রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত প্রয়োজন। এ নিয়েই আলোচনা দরকার। বাংলাদেশের জন্য বলা যায় ২০১৫ সাল গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তবে ২০১৬ সাল আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়নে এ বছরই চারটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। যাতে ১৪৫টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও বিশেষজ্ঞরা অংশ নেবেন।
তিনি বলেন, এ বছরই প্যারিস অ্যাগ্রিমেন্ট বাস্তবায়নে অনেকগুলো শর্ত ও চুক্তি হবে। এসব বৈঠক ও চুক্তি স্বাক্ষরের আগে সবক্ষেত্রেই বাংলাদেশের সক্ষমতা অর্জন করতে হবে।
ড. আইনুন নিশাত জানান, প্যারিসে যে চুক্তি হয়েছে তা অনেক ক্ষেত্রেই আমেরিকাকে খুশি করার জন্য। অন্যভাবে বলা যায়, আমেরিকার সিনেটকে ফাঁকি দিতেই এ চুক্তি করা হয়েছে। এরইমধ্যে এ নিয়ে আমেরিকায় যুদ্ধ শুরু হয়েছে। এই চুক্তি নিয়ে সেখানকার সিনেটে আলোচনারও দাবি উঠেছে। এটা যদি হয়, তাহলে সবই যাবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন