সিরিয়ায় অচিরেই চতুর্থ অবৈধ স্থল অভিযান চালানোর ঘোষণা দিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগান। তিনি মঙ্গলবার কৃষ্ণসাগর তীরবর্তী আর্টভিন প্রদেশে এক অনুষ্ঠানে দেয়া ভাষণে এ প্রত্যয় জানান। গত মে মাসের পর এই প্রথম এরদোগান সিরিয়ায় হামলা চালানোর এরকম সরাসরি ঘোষণা দিলেন। তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেন, “আমরা গত কয়েক দিন ধরে আমাদের যুদ্ধবিমান, কামান ও ড্রোন দিয়ে সন্ত্রাসীদের ওপর আঘাত হেনে যাচ্ছি।” সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে অবস্থানরত কুর্দি মিলিশিয়াদের বিরুদ্ধে তুর্কি সেনাবাহিনী গত কয়েকদিন ধরে যে বিমান হামলা চালিয়ে আসছে তার প্রতি ইঙ্গিত করে এরদোগান একথা বলেন। প্রেসিডেন্ট এরদোগান এরপর সিরিয়ার অভ্যন্তরে স্থল অভিযান চালানোর ঘোষণা দিয়ে বলেন, “আমরা অচিরেই আমাদের ট্যাংক, গোলন্দাজ ইউনিট ও সেনাদের পাঠিয়ে তাদের মূলোৎপাটন করব।” ২০১৬ সাল থেকে তুর্কি সেনাবাহিনী সিরিয়ার অভ্যন্তরে কুর্দি মিলিশিয়াদের বিরুদ্ধে তিনটি অভিযান চালিয়েছে। মূলত পিপলস প্রোটেকশন ইউনিট বা ওয়াইপিজি’র গেরিলাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর অজুহাতে সিরিয়ায় আগ্রাসন চালায় তুর্কি বাহিনী। আঙ্কারা দাবি করছে, গত কয়েক দশক ধরে কুর্দিদের জন্য একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে সশস্ত্র লড়াইরত কুর্দি বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী পিকেকের সঙ্গে ওয়াইপিজি’র সম্পর্ক রয়েছে। সম্প্রতি তুরস্কের বৃহত্তম শহর ইস্তাম্বুলে এক বোমা হামলায় অন্তত ছয়জন নিহত ও ৮১ জন আহত হয়। ওই হামলার পরপরই সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে বিমান হামলা জোরদার করে তুরস্ক। আঙ্কারা সরকার ওই হামলার জন্য পিকেকে’কে দায়ী করেছে। অপরদিকে, সিরিয়ায় কুর্দিবিরোধী অভিযান চালানোর জন্য তুরস্ক যে পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে তার প্রতি সমর্থন দিয়েছে আমেরিকা। হোয়াইট হাউস বলেছে, তুরস্কের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে। হোয়াইট হাউজের ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের মুখপত্র জন কিরবি সাংবাদিকদের বলেন, তুরস্ক লাগাতারভাবে বিশেষ করে দক্ষিণাঞ্চলে সন্ত্রাসীদের হুমকির মুখে রয়েছে। এ অবস্থায় তুরস্ক এবং তার জনগণকে রক্ষা অধিকার আঙ্কারা সরকারের রয়েছে। একই সঙ্গে তিনি বলেন, সিরিয়ায় এসডিএফ যোদ্ধারা তুর্কি অভিযানে কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। কথিত এসডিএফ যোদ্ধাদেরকে আমেরিকা অস্ত্র ও অর্থ দিয়ে সহযোগিতা করে থাকে। এসডিএফ নামের এ গেরিলা গোষ্ঠীর বিরাট অংশ সিরিয়ার ওয়াইপিজি কুর্দি গেরিলা। এই ওয়াইপিজি কুর্দি গরিলাদেকে তুরস্ক সন্ত্রাসী সংগঠন মনে করে। অন্যদিকে, এসডিএফ গেরিলা গোষ্ঠীর সহযোগিতায় আমেরিকা সিরিয়ার উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে দখলদারিত্ব কায়েম করেছে এবং ওই অঞ্চল থেকে তেলসহ খাদ্যশসহ লুটপাট করে থাকে। গত সপ্তাহে তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরে সন্ত্রাসী বোমা হামলায় অন্তত ছয় জন নিহত ও ২৫ জন আহত হয়েছে। এজন্য তুরস্ক সরকার সিরিয়ার কুর্দিদেরকে দোষারোপ করেছে। এরপর ইরাক ও সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে তুরস্ক বিমান হামলা চালিয়েছে। এখন সেখানে স্থল অভিযান চালাতে চাইছে। আনাদোলু, সিএনএন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন