তথ্য প্রযুক্তির উন্নতির এ যুগে এখন পর্যন্ত ব্যাংক হচ্ছে আমানতের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান। এখনো মানুষ ব্যাংকে টাকা, সোনা জমা রাখা নিরাপদ মনে করেন। এমনকি যারা নানা দুর্নীতির মাধ্যমে দেশ থেকে বিদেশে টাকা পাচার করেছেন তারাও সে অর্থ নিরাপত্তার জন্য সুইস ব্যাংকসহ বিভিন্ন ব্যাংকে জমা রাখেন। তাছাড়া ব্যাংকে টাকা জমা রাখার সুবিধাও রয়েছে। বিজ্ঞানের বদৌলতে এখন শুধু চেক দিয়েই নয়, নানা ধরনের কার্ড ব্যবহার করেও দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে টাকা এবং বিদেশে ডলার-পাউন্ড উত্তোলন করা যায়। ফলে মানুষের মধ্যে ব্যাংকে টাকা রাখার প্রবণতা বেড়ে যাওয়ায় দেশে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে অসংখ্য ব্যাংক প্রতিষ্ঠা হয়েছে। কিন্তু মানুষের (গ্রাহক) বিশ্বাসে হঠাৎ করে যেন ছন্দপতন ঘটে গেছে। ইসলামী ব্যাংক, বেসিক ব্যাংকসহ কয়েকটি ব্যাংকের শত শত কোটি টাকার ঋণ জালিয়াতির খবর প্রকাশ পাওয়ায় ব্যাংকে টাকা জমা রাখা নিয়ে মানুষের মধ্যে আস্থাহীনতার সৃষ্টি হয়েছে।
কয়েকদিন আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে গুজব ছড়িয়ে পড়ে ‘দেশের ব্যাংক দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে। সময় থাকতে টাকা উত্তোলন করুন’। ইউটিউবে এ নিয়ে নেতিবাচক নানা বক্তব্য প্রচার করা হয়। মানুষ প্রথমে কয়েকটি ব্যাংক দেউলিয়া হচ্ছে খবরকে ‘গুজব’ মনে করলেও সরকারের দায়িত্বশীলদের বক্তব্যে সেই ভীতির ডালপালা ছড়িয়ে পড়ে। বন্ধু-বান্ধব, পরিচিতজন এবং আত্মীয়-স্বজন একে অন্যকে ব্যাংক থেকে টাকা দ্রুত তুলে নেয়ার পরামর্শ দেন। ‘ব্যাংক দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে’ এবং ‘ব্যাংক এলসি বন্ধ করেছে’ খবর যখন গণমাধ্যমে গুরুত্ব সহকারে প্রকাশ করা হয় তখন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদারের ‘জানুয়ারি থেকে ব্যাংকে রিজার্ভ সঙ্কট থাকবে না’, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের ‘ব্যাংকের অবস্থা কোথায় খারাপ লিখিত দিয়ে যান, আমরা খতিয়ে দেখব’ পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের ‘দেশের একটা ব্যাংকও দেউলিয়া হয়নি, ভবিষ্যতেও কোনো ব্যাংক দেউলিয়া হবে না বলে আমি বিশ্বাস করি’ বক্তব্য মানুষের সন্দেহ আরো বাড়িয়ে দেয়। ব্যাংকের গ্রাহকদের আশঙ্কা ব্যাংকিং সেক্টরের পরিস্থিতি খারাপ না হলে মন্ত্রী ও গভর্নর এমন বক্তব্য দেবেন কেন? ব্যাংকিং সেক্টরের প্রতি মানুষের আস্থাহীনতা এমন পর্যায়ে চলে গেছে যে, প্রধানমন্ত্রীকে পর্যন্ত এ নিয়ে কথা বলতে হচ্ছে। তাকে বলতে হচ্ছে ‘অনেকেই রিজার্ভ নিয়ে কথা বলেন। রিজার্ভের কোনো সমস্যা নেই। অনেকে বলেন, ব্যাংকে টাকা নাই। ব্যাংক থেকে টাকা তোলেন। ব্যাংক থেকে টাকা তুলে ঘরে রাখলে তো চোরে নিয়ে যাবে। চোরের জন্য সুযোগ করে দেয়া। কারণ ব্যাংকে টাকা নেই কথাটি ঠিক না। আমি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে মিটিং করেছি। আমাদের এ বিষয়ে কোনো সমস্যা নেই। প্রত্যেকটি ব্যাংকে যথেষ্ট টাকা আছে।’
জানতে চাইলে ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, আতঙ্ক হওয়ার মূলে হলো বিভিন্ন ব্যাংকে যে অপকর্মগুলো হচ্ছে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটতরাজ হচ্ছে; সে জন্য আতঙ্কটা ছড়িয়ে পড়েছে। এই আতঙ্ক থেকে বের হতে হলে ব্যাংকে সুশাসন ফিরিয়ে আনতে হবে। বর্তমানে দেউলিয়া হওয়ার মতো অবস্থায় কোনো ব্যাংক আছে কি না জানতে চাইলে এই অর্থনীতিবিদ বলেন, অনেকগুলো ব্যাংকই এখন দেউলিয়া। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঘোষিত ১০টি দুর্বল ব্যাংকের সবই দেউলিয়া, ৩ থেকে ৪টা বাদে। মানুষজন চিন্তিত হবে না কেন? এ মুহূর্তে সাধারণ মানুষের করণীয় কি জানতে চাইলে তিনি বলেন, দুই নাম্বারি ব্যাংকগুলো থেকে বেরিয়ে এসে ভালো ব্যাংকে যুক্ত থাকা। অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) সাবেক চেয়ারম্যান ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান ইনকিলাবকে বলেন, বিভিন্ন মাধ্যম থেকে নানা কথাবার্তা বলা হচ্ছে। কেউ বলছে, ব্যাংক দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে। টাকা দিতে পারছে না। এসব কারণে ব্যাংক খাতে একটি আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। আসলে ব্যাংকে আমানতকারীদের টাকা নিরাপদে আছে, এ নিয়ে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই।
বাংলাদেশ ব্যাংকে রিজার্ভ কমে যাওয়া নিয়ে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশের পর সরকারের দায়িত্বশীল কয়েকজন মন্ত্রী ও দায়িত্বশীল ব্যক্তি স্ববিরোধী বক্তব্য দেন। এ নিয়ে শুরু হয় গুজব। এর আগে কয়েকটি ব্যাংক ডলার সিন্ডিকেট করে দেশে ডলারের সঙ্কট সৃষ্টি করে। হু হু করে বেড়ে যায় ডলারের দাম। এক সময় ব্যাংকগুলো এলসি খোলা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়। এমনকি উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির সুযোগ পাওয়া শিক্ষার্থীদের নতুন ফাইল খোলা বন্ধ করে দেয় ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংক, বিভিন্ন ব্যাংক, দায়িত্বশীল মন্ত্রী এবং সংশ্লিষ্টদের কথাবার্তায় ব্যাংকে টাকা নেই গুজব ছড়িয়ে পড়ে। এর মধ্যে কয়েকজন গ্রাহককে টাকা তুলতে ব্যাংকের একাধিক শাখায় যেতে হয়। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) প্রতিনিধিরা ঢাকায় এসে রিজার্ভের বিষয়ে জানতে চাইলে তাদের দুই ধরনের হিসাব দেয়া হয়। এসব কারণে মানুষের মধ্যে ব্যাংক থেকে টাকা উঠিয়ে নেয়ার হিড়িক পড়ে যায়। বাধ্য হয়েই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে একাধিকবার ব্যাংকে টাকার সঙ্কট নেই, রিজার্ভ প্রচুর রয়েছে মানুষের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই এমন বক্তব্য দিতে হবে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর অর্থনীতিবিদ ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, সঙ্কটের সময় একটি মহল সুযোগ বুঝে নানা গুজব ছড়ায়। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক একটি ভুল করেছে। তারা প্রকাশ করেছে যে, ১০টি ব্যাংকের অবস্থা খারাপ। এটা প্রকাশ করার দরকার ছিল না। এটা প্রকাশ পাওয়ার পরই সাধারণ মানুষ ভয় পেয়ে গেছে। এটা সাধারণত ব্যাংকগুলোই জানে। কিছু ব্যাংক দুর্বল থাকতেই পারে। তাদের হাতে কী পরিমাণ অর্থ আছে, ক্রেডিট রেটিং কী সেগুলো ব্যাংক জানবে, বাংলাদেশ ব্যাংক জানবে। জনসমক্ষে বলা হবে কেন? লোকজন বোঝে না তারল্য কী। কিন্তু লোকজন মনে করেছে, না জানি কী হয়ে গেছে। অলরেডি আইএমএফ আসছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাচ্ছে। ব্যাংক নতুন ঋণ দিচ্ছে না। এমনিতেই এই কয়টি ঘটনায় আস্থায় কিছুটা চির ধরেছে। তার মধ্যে আবার রাষ্ট্রায়ত্ত ছয়টি ব্যাংকের বিষয়ে বলা হচ্ছে, তাদের ঋণখেলাপি অনেক বেশি। লোকজন হয়তো কিছু টাকা তুলে ফেলেছে। কেউ কেউ হয়তো সঞ্চয় ভেঙেছে।
ডলার সঙ্কট কেটে যাবে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে গত বৃহস্পতিবার অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) আয়োজিত এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন বিষয়ক জাতীয় সেমিনারে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার বলেছেন, দেশের রফতানি ও রেমিট্যান্সের পরিমাণ আমদানির তুলনায় বেশি হওয়ায় ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে কোনো বৈদেশিক মুদ্রার সঙ্কট থাকবে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি তদন্তে দেখা গেছে, চলতি বছরের শুরু থেকে দেশে অস্বাভাবিক আমদানির পরিমাণ ৮ বিলিয়ন ডলারের বেশি বেড়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখার পর আমদানিকৃত পণ্য যাচাই-বাছাইয়ের পর ৫ বিলিয়ন ডলারের আমদানি কমেছে, যা স্বাভাবিক। তদন্তে আমরা দেখেছি, কিছু পণ্য ২০ থেকে ২০০ শতাংশ ওভার ইনভয়েসিং দিয়ে আমদানি করা হয়েছে। এ ধরনের ঘটনা যাচাইয়ের কারণে আমদানির পরিমাণ কমে গেছে।
গত মঙ্গলবার সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ইসলামী ব্যাংকসহ কয়েকটি ব্যাংকের ঋণ জালিয়াতি প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ব্যাংকের অবস্থা কোথায় খারাপ লিখিত দেন, খতিয়ে দেখব।
গতকাল বুধবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে এক আলোচনায় পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, দেশের একটা ব্যাংকও দেউলিয়া হয়নি, ভবিষ্যতেও কোনো ব্যাংক দেউলিয়া হবে না। কিছুদিন আগে একটা গুজব ছড়ানো হয়েছিল, ব্যাংকে টাকা পাওয়া যাচ্ছে না। আমি বহু লোককে জিজ্ঞেস করেছি, কেউ ব্যাংকে গিয়ে টাকা পাননি এমন কাউকে পাইনি। এটা সঠিক নয়, কেউ কেউ রাজনৈতিক সঙ্কীর্ণতা থেকে এমনটা প্রচার করছে। আমাদের দেশে টানাপড়েন রয়েছে, এটা লুকানোর বিষয় নয়। সেই চাপ আমাদের এখানেও চলে আসে। বিশ্বে মূল্যস্ফীতি কমছে, আমাদের এখানেও খাদ্যদ্রব্য এবং তেলের দাম কমছে। সেই সাথে মূল্যস্ফীতিও নিচের দিকে নামছে। ভবিষ্যতে আরো কমবে।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. মো. আইনুল ইসলাম বলেন, দেউলিয়া বলতে যা বোঝায়, তা আসলে বাংলাদেশের ইতিহাসে নেই। সম্ভাবনাও নেই। তবে একটু চাপ আছে। যে কারণে একটি ব্যাংক দেউলিয়া হয়, সেই কারণগুলো বাংলাদেশে নেই। এখানে কারেন্সির অভাব নেই। পর্যাপ্ত কারেন্সি আছে, তবে সার্কুলেশন নেই। টাকা যদি মানুষজন বাসায় রাখে তাহলে এটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার মধ্যে পড়ে না। বাংলাদেশে ১৯৯১ সালে একবার একটি ব্যাংক দেউলিয়া হয়েছিল। পরে সরকার এটাকে মার্জ করেছে। ওখানে যারা আমানতকারী আছেন, তারা ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ টাকা ফেরত পেয়েছেন। আর বাংলাদেশ ব্যাংক কিন্তু এ ব্যাপারে দায়িত্বশীল। আমি যদি ব্যাংকে ১০ লাখ টাকা রাখি এবং মনে হয় ব্যাংক দেউলিয়া হয়ে গেছে, তাহলে আমি প্রাথমিক পর্যায়ে ১ লাখ টাকা পাব। বাকি যে ৯ লাখ টাকা সেটা বাংলাদেশ ব্যাংক হিসাব করবে। তারপর ৩ মাস, ৬ মাস কিংবা ১ বছর পরে বাকি টাকাটা দেবে। এটা হচ্ছে দেউলিয়াত্বের প্রক্রিয়া। কিন্তু বাংলাদেশে এ ধরনের পরিস্থিতি আসেনি। আমার কাছে মনে হয় না ব্যাংক দেউলিয়া হবে। আতঙ্কের কারণে কিছু মানুষজন আমানতের টাকা তুলে রাখছেন, এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। আমানতকারীদের বোঝাতে হবে, ব্যাংকে টাকা আছে। মানুষজন যে সন্দেহ করছে বাস্তবে ব্যাংকে গিয়ে যাতে একই চিত্র না দেখে; এ বিষয় নিয়ে কাজ করতে হবে।
ইসলামী ব্যাংক নিয়ে হাইকোর্ট : ভুয়া ঠিকানা ও কাগুজে কোম্পানি খুলে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড (আইবিবিএল) থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা তুলে নেয়া ও এস আলম গ্রুপের ৩০ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেয়ার ঘটনায় রিট করার পরামর্শ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন নজরে আনলে গতকাল বুধবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ পরামর্শ দেন। আদালতে বিষয়টি নজরে আনেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।
তিনি এ সময় আদালতের কাছে আদেশ প্রার্থনা করলে হাইকোর্ট বলেন, প্রতিবেদনগুলো সংযুক্ত করে রিট আবেদন আকারে কোর্টে আসুন। এ সময় আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক ও দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান উপস্থিত ছিলেন। পরে আইনজীবী শিশির মনির বলেন, আমরা আজই আদালতে রিট করব।
এর আগে গত ২৭ নভেম্বর গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ইসলামী ব্যাংক নিয়ে উঠে আসা দুর্নীতির বিষয়ে তদন্ত চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে চিঠি দেয়া হয়। ব্যাংকটির ৫ জন গ্রাহকের পক্ষে ওই চিঠি পাঠানো হয়। তারা হলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির, মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াদুদ ও আব্দুল্লাহ সাদিক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এলএলবি, এলএলএম বিভাগের শিক্ষার্থী শাইখুল ইসলাম ইমরান ও যায়েদ বিন আমজাদ।
চিঠিতে বলা হয়, ‘নিবেদন এই যে আমরা নিম্নস্বাক্ষরকারীগণ ইসলামী ব্যাংক, বাংলাদেশ লিমিটেডের নিয়মিত গ্রাহক। ইসলামী ব্যাংকের বিভিন্ন শাখায় আমাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। আমরা সাধ্যমতো ইসলামী ব্যাংকের সঙ্গে লেনদেন করে থাকি। বিগত ২৪ সেপ্টেম্বর দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকার অনুসন্ধানী রিপোর্টে উঠে এসেছে যে, ইসলামী ব্যাংক থেকে নভেম্বর মাসের ১ থেকে ১৭ তারিখ পর্যন্ত ২ হাজার ৪৬০ কোটি টাকা অসাধু চক্র তুলে নিয়েছে। এই রিপোর্টে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান সংক্রান্তে বিস্তারিত বর্ণনা দেয়া হয়েছে। ব্যাংকের আমানতকারী হিসেবে আমরা উদ্বিগ্ন। স্বীকৃতমতে, বর্তমানে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সঙ্কট মোকাবিলা করছে। এমতাবস্থায়, এ ধরনের সন্দেহজনক আর্থিক লেনদেনে আমরা সংক্ষুব্ধ।’
‘অতএব, উপরিউক্ত বিষয়টি আমলে নিয়ে গভীরভাবে খতিয়ে দেখার জন্য বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি। একই সাথে তদন্ত সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কার্যকর আইনগত দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করার অনুরোধ করছি। আশা করি, উক্ত বিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করে আমাদের কৃতার্থ করবেন।’
চিঠিতে গত ২৪ নভেম্বর ‘ইসলামী ব্যাংকে ভয়ঙ্কর নভেম্বর’ শিরোনামে প্রকাশিত দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকার প্রতিবেদন সংযুক্ত করা হয়। এদিকে মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) নিউ এজ পত্রিকায় এস আলম গ্রুপ একাই ইসলামী ব্যাংক থেকে ৩০ হাজার কোটি ঋণ নিয়েছেÑ এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এই প্রতিবেদনটিও আদালতের নজরে আনা হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন