রাজশাহী ব্যুরো : পুলিশের দুর্বল ধারার কারণে রাজশাহীতে দুই কিশোর নির্যাতনের ঘটনায় আরো তিন আসামী গতকাল বুধবার সকালে জামিনে মুক্তি পেয়ে হাসতে হাসতে আদালত চত্বর থেকে বেরিয়ে যায়। এর আগে গত মঙ্গলবার দু’জনের জামিন হয়। এনিয়ে ১৩ আসামীর মধ্যে ৫ জনের জামিন হলো। আসামীদের গ্রেফতারের বদলে আদালতে এসে জামিন নেয়ার সুযোগ করে দেয়ার দৃশ্য দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন নির্যাতনের শিকার জাহিদ হোসেনের বাবা ইমরান।
কাঁদতে কাঁদতে জাহিদের বাবা ইমরান সাংবাদিকদের বলেন, পুলিশ বেঈমানি করে দুর্বল ধারায় মামলা রেকর্ড করেছে। তাই আসামীরা সহজে জামিন পাচ্ছে। এতে হতাশ হয়ে পড়েছি, ছেলেকে নির্যাতনের ঘটনায় জড়িতদের বিচার হওয়া নিয়ে শঙ্ক দেখা দিয়েছে। ছেলেকে নির্মমভাবে নির্যাতনের ঘটনার বিচারে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে জাহিদের বাবা বলেন, আমি এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি। আমার ছেলেকে নির্যাতনের ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে অনুরোধ করছি। আসামীরা জামিনে মুক্তি পাওয়ায় নির্যাতিত দুই শিশুর পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। আসামীরা ভুক্তভোগী পরিবারের লোকজনকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন কিশোর জাহিদের বাবা ইমরান। বাদী পক্ষের আইনজীবী দিল সিতারা চুনী অভিযোগ করে বলেন, ‘পুলিশ যে ধারা এই মামলায় চালাচ্ছে তা জামিনযোগ্য। পুলিশের এই দুর্বল ধারার কারণে একের পর এক আসামী জামিন পেয়ে যাচ্ছে’। বাদী পক্ষের অপর আইনজীবী ছিলেন পিপি রাশেদ উন নবী আহসান।
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার পবা’র চৌবাড়িয়া গ্রামে ধরে নিয়ে দুই কিশোর জাহিদ হোসেন ও ইমন আলীকে নির্যাতন করা হয়। ধারণ করা হয় ভিডিও চিত্র। তারা দু’জনই বাগসারা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। এ ঘটনায় ১৩ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। এই মামলায় একজন সেনা ও একজন র্যাব সদস্য আসামি, যারা এই নির্যাতনে নেতৃত্ব দিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে সকালে শিশু নির্যাতনের প্রতিবাদ ও দোষীদের শাস্তির দাবিতে সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে মানববন্ধন ও পথসভা করেছে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা লফস। বক্তারা অবিলম্বে নির্যাতনকারীদের গ্রেফতারের আহবান জানান ও তারা সহজে আইনের ফাঁক-ফোকর দিয়ে সহজে বেরিয়ে যেতে না পারে এ ব্যাপারে সজাগ থাকার আহবান জানান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন