মঙ্গলবার ০৮ অক্টােবর ২০২৪, ২৩ আশ্বিন ১৪৩১, ০৪ রবিউস সানী ১৪৪৬ হজিরী

জাতীয় সংবাদ

সব কিছু পাওয়ার নেশায় মানুষ সব হারায়

জুমার খুৎবা-পূর্ব বয়ান

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১০ ডিসেম্বর, ২০২২, ১২:১২ এএম | আপডেট : ১২:৪৭ এএম, ১০ ডিসেম্বর, ২০২২

মানুষ সম্পদ ও সন্তানের জন্য প্রতিযোগিতা করে। অধিক হারে পাওয়ার জন্য প্রতিযোগিতা করে। ভালো ও মন্দ উভয় পথেই সে চেষ্টা করে। মহান আল্লাহ সূরা তাকাছুরে বলেন, প্রাচুর্যের প্রতিযোগিতা (পার্থিব সম্পদের উপর গর্বিত হওয়া) তোমাদেরকে (পরকাল হতে) ভুলিয়ে রাখে। ০১: সূরা তাকাছুর। এভাবে মানুষ অধিকহারে সব কিছু অর্জন করে এবং তা মানুষের সামনে ফুঁলিয়ে-ফাঁপিয়ে বলতে চায়, প্রকাশ করতে চায়।
এ প্রকাশ করতে চাওয়া নিশ্চয়ই নিজের বড়ত্ব প্রকাশ করা। অন্যকে ছোট করা। যা সরাসরি অহংকার। এ অহংকার পতন ডেকে আনবেই। গতকাল রাজধানীর মহাখালীস্থ মসজিদে গাউছুল আজমে জুমা-পূর্ব বয়ানে খতিব প্রিন্সিপাল মাওলানা খালিদ সাইফুল্লাহ এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, যাদের সামনে বড়ত্ব প্রকাশ করা হয় তারাও এ আধিক্যতার রোগে রোগাক্রান্ত হয়ে ওঠে। জাহালিয়াতের সময় নিজ নিজ ব্যক্তি ও বংশের গৌরব করতে করতে কবর স্থান পর্যন্ত যেতো। তারা কবর হিসাব করত, কার বংশের কতগুলো কবর আছে।
আজকের দিনে এ প্রতিযোগিতা আরো বেড়েছে। সবকিছু নিজের মালিকানায় আনার জন্য প্রয়োজনে সমাজ দেশ ধ্বংস করে দিতেও কুণ্ঠা বোধ করে না। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে দেখা যাচ্ছে সকল পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়ে জনজীবন আজ কঠিন কষ্টের মধ্যে ঠেলে দিয়েছে। গুটি কয়েক মানুষ সিন্ডিকেট করে সাধারণ মানুষের অর্থ-কড়ি হাতিয়ে নিচ্ছে।
শিল্প-কারখানা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নামে-বেনামে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ নিয়ে তা আতœসাধ করছে নানা উপায়ে। কতিপয় ব্যক্তি দেশের বাহিরে সেকেন্ড হোম তৈরি করছে। সন্তান আতœীয়-স্বজনকে বিদেশে পাঠিয়ে দিচ্ছে। অথচ এগুলো দেশ ও দেশের মানুষের সম্পদ।
প্রশ্ন হচ্ছে কী হবে এসকল অবৈধ সম্পদের পাহাড় বানিয়ে। বিশ^নবী বলেছেন, এ সকল সম্পদ তোমার নয়, তোমার সম্পদ হচ্ছে যা খেয়েছো, যা পড়েছো এবং যা দান করেছেÑ সহীহ মুসলিম। এ ছাড়া মানুষ মরে গেলে কোনোভাবেই তার সাথে কিছু যায় না। সকলের একই অবস্থা। সেই মাটি, সেই কাফন, সেই দাফন। অতঃপর কয়েকদিনের মধ্যে দুনিয়া থেকে নাম নিশানা মুছে যাওয়া। অথচ দুনিয়ায় অধিক লোভের কারণে পাহাড় সমান অবৈধ সম্পদের পাপের বোঝা তার আখেরাতকে নিশ্চিত ধ্বংস করে দেবে। সে জাহান্নামের খড়-কুটায় পরিণত হবে। এ জন্য অধিক প্রাপ্তির লোভ সংবরণ করতে হবে, এতেই দুনিয়া ও আখেরাতের পরম শান্তি।

বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মুফতি রুহুল আমিন গতকাল জুমার বয়ানে বলেন, আল্লাহ আমাদেরকে পরীক্ষার জন্য দুনিয়ায় পাঠিয়েছেন। দুনিয়ার এই স্থান পরিবর্তনশীল। যিনি এই দুনিয়া সৃষ্টি করেছেন তিনিই তা পরিবর্তন করবেন। খতিব বলেন, কিয়ামতের ময়দানেই পরীক্ষার ফলাফল পুরষ্কার দেয়া হবে। আল্লাহর পরীক্ষায় যারা উত্তীর্ণ হবেন তাদের ডান হাতে পুরষ্কার দেয়া হবে। আর যারা অকৃতকার্য হবে তাদের আমলনামা বাম হাতে দেয়া হবে। খতিব বলেন, মানুষ মানুষের জন্য। মানুষের সেবা ও কল্যাণের জন্য কাজ করতে হবে।
খতিব বলেন, রাসূল (সা.) বলেন, তুমি তোমার জালেম ভাইকে সহায়তা করো। মজলুমকেও সহায়তা করো। জালেমকে বুঝিয়ে জুলুম করা থেকে বিরত রাখতে হবে। এটাই তাকে সহায়তা করা হবে। খতিব বলেন, মজলুমের বদ দোয়া বড় কঠিন। রাসূল (সা.) বলেন, দুনিয়ার চাকচিক্য দেখে পরকালের কল্যাণ থেকে বিরত থেকো না। আল্লাহ মানুষকে অত্যন্ত ভালোবেসে সৃষ্টি করেছেন। মানুষকে বুঝিয়ে কল্যাণের পথে নিয়ে আসতে হবে। খতিব ছোবহানাল্লাহে ওয়া বিহামদিহি ছোবহানাল্লাহি ওয়া আলিয়্যিম আজিম এবং লাহাওলা ওলা কুয়াতা ইল্লাহ বিল্লাহ বেশি বেশি পড়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন