ইনকিলাব ডেস্ক : তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় গাড়িবোমা বিস্ফোরণে অন্তত ২৮ জনের প্রাণহানি ও ৬১ জন আহত হয়েছে। স্থানীয় কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে খবরে বলা হয়, তুরস্কের পার্লামেন্ট ভবন ও সেনা সদর দপ্তরের কাছে গত বুধবার রাতে ওই বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। সেনা সদস্যদের বহনকারী একটি বাস যাওয়ার সময় বিস্ফোরকে বোঝাই একটি গাড়িতে বিস্ফোরণ ঘটলে উল্লেখিত হতাহতের ঘটনা ঘটে। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজন বেসামরিক নাগরিক রয়েছেন। তুর্কি সরকারের দেয়া বিবৃতি অনুসারে, একটি বাসে এ বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। বাসটিতে তুর্কি জেনারেল স্টাফের সদস্যরা ছিলেন। বিস্ফোরণের পর তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান আজারবাইজান সফর বাতিল করেন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, আত্মরক্ষায় অধিকার নিশ্চিত করতে তার দেশ তুরস্ক এখন অনেক বেশি দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
সাম্প্রতিক সময়ে তুরস্কে কয়েকটি বড় ধরনের সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে, যার দায় স্বীকার করেছে ইসলামিক স্টেট। গত জানুয়ারিতেই ইস্তাম্বুলে এক জঙ্গি হামলায় অন্তত দশজন নিহত হন, যাদের অধিকাংশই ছিল জার্মানীর পর্যটক। তার আগে গতবছর অক্টোবরে আঙ্কারায় কুর্দিদের শান্তি সমাবেশে জোড়া আত্মঘাতী হামলায় শতাধিক লোকের মৃত্যু হয়। ২০১৫ সালের জুলাইয়ে আক্রান্ত হয় সিরিয়া সীমান্তের কাছে কুর্দি অধ্যুষিত শহর সুরুস। ওই আত্মঘাতী হামলায় ৩০ জন নিহত হন।
তুরস্কের উপ প্রধানমন্ত্রী বেকির বোজদাগ বলেছেন, এটি নিঃসন্দেহে একটি সন্ত্রাসবাদী হামলা। তবে কোনো পক্ষ এখনও ওই ঘটনার দায় স্বীকার করেনি। খবরে বলা হয়, বিস্ফোরণের পর ওই এলাকা থেকে ধোঁয়ার কু-লী উঠতে দেখা যায়। পুরো আঙ্কারা ওই বিস্ফোরণে প্রকম্পিত হয়। বিস্ফোরণের পরপরই ঘটনাস্থলে ছুটে যায় ২০টি অ্যাম্বুলেন্স। আকাশে নিরাপত্তা বাহিনীর হেলিকপ্টারকে টহলে দেখা যায়। খবরে বলা হয়, গত বুধবার সংঘটিত এ বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই উচ্চ মাত্রার ছিল যে, তাতে রাজধানীর বিরাট অংশ কেঁপে ওঠে।
তুরস্কের সংসদ ভবনের কাছে সামরিক বাহিনীর একটি হাউজিং কমপ্লেক্সের কাছে এ বিস্ফোরণ ঘটে। তুরস্কের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও সরকারের মুখপাত্র নুমান কুরতুলমুস জানিয়েছেন, বিস্ফোরণে আহত ৬১ জনকে রাজধানীর ১৪টি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে প্রাথমিকভাবে তিনি বিস্ফোরণে হতাহতদের সঠিক সংখ্যা জানাতে পারেননি। পরে অবশ্য তিনি জানান, বিস্ফোরণে অন্তত ২৮ জন নিহত হয়েছে। এর আগে, তুর্কি স্বাস্থ্যমন্ত্রী মেহমেত মুয়েজিনওগ্লু ২০-২১ জন নিহত হওয়ার কথা বলেছিলেন। তুরস্কের ক্ষমতাসীন জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি বা একেপি’র কর্মকর্তা ওমর সেলিক এ ঘটনাকে সন্ত্রাসী তৎপরতা বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, রাজধানীর ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় বোমা বিস্ফোরণের মাধ্যমে আরেকবার সন্ত্রাসবাদের মুখোশ উন্মোচন হয়েছে। বিস্ফোরণের পর তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেব এরদোগান তার পূর্বঘোষিত আজারবাইজান সফর বাতিল করেছেন। এছাড়া, প্রধানমন্ত্রী আহমেদ দাউদওগ্লুুর ব্রাসেলস সফর করার কথা ছিল- কিন্তু তিনিও সে সফর বাতিল করেছেন। বিবিসি, রয়টার্স।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন