আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দোয়া করবেন। আপনারা নির্বাচিত করেছেন আবার। এই এতবার আমার মনে হয় একটা পার্টির দায়িত্বে থাকা ঠিক না। তারপরেও যেহেতু এখন সারা বিশ্বব্যাপী একটা দুঃসময় বিশ্বব্যাপী দুঃসময়ের জন্যই আমি হয়তো মানা করিনি, কিন্তু আমার বয়স হয়েছে, এটা মনে রাখতে হবে।
আওয়ামী লীগের নবনির্বাচিত কমিটি গঠনের পরে গতকাল রোববার গণভবনে নেতাকর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন। শেখ হাসিনা বলেন, সংগঠনটা যেন ঠিক থাকে, চলতে থাকে সেই ব্যবস্থাটা করতে হবে আপনাদের। যাই হোক, আপনারা এসেছেন কষ্ট করে। আপনারা কষ্ট করে এসেছেন গণভবনে, এই ভবন আপনাদেরই ভবন। এটার নাম আব্বা দিয়েছেন গণভবন, কারণ এটা জনগণেরই ভবন। শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ এ দেশের জনগণের জন্য কাজ করে এবং আওয়ামী লীগের প্রচেষ্টায় বাংলাদেশের মানুষের আজকে ভাগ্য ফিরে এসেছে। প্রথমবার সরকার যখন গঠন করি, আমাদের সিদ্ধান্ত ছিল কেউ কুঁড়ে ঘরে থাকবে না। কুঁড়ে ঘরে কেউ ছিল না, একটা টিনের ঘর দিতে পারলেও আমরা দিয়েছিলাম। আর এখন আমরা আধাপাকা ঘর তৈরি করে দিচ্ছি। নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, দয়া করে আপনারা আপনাদের এলাকায় খোঁজ নেবেন। রাজনৈতিক নেতা হিসেবে এটা আপনাদের দায়িত্ব। আপনার এলাকায় কোনো ভূমিহীন পরিবার বাদ পড়ল কি না।
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী কত কষ্ট করবে! সেই ৪৯ সালে প্রতিষ্ঠিার পর থেকে বারবার তাদের ওপর আঘাত এসেছে। একটা বাড়ির বাবা যদি জেলে যায়, সে পরিবারের যে কী কষ্ট হয়, আমরা নিজেরা তো ভুক্তভোগী, আমরা তো জানি। আমরা আজকে ১৪ বছর ক্ষমতায় আছি। অন্তত আমাদের নেতাকর্মীরা সারা জীবন এত কষ্ট; জেল-জুলুম অত্যাচার,এই বিএনপি-জামায়াতের হাতে মার, একের পর এক খালি আঘাতই আসছে। কাজেই আমাদের সেসব নেতাকর্মীরা, তাদের পরিবার-পরিজন যেন ভালো থাকে। আর সেই সঙ্গে বাংলার আপামর জনগোষ্ঠী। যারা দারিদ্র্যের কষাঘাতে জর্জরিত ছিল, একবেলা খাবার জুটত না, কোনো থাকার জায়গা ছিল না, রোগে চিকিৎসা ছিল না, আমরা তাদের জন্য কাজ করে যাচ্ছি।
নতুন সদস্যদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমরা কিন্তু বই ছাপিয়ে দিই সদস্য সংগ্রহ করার। এই কাজটা আমাদের প্রত্যেকটা জেলা-উপজেলা-ইউনিয়ন-ওয়ার্ড পর্যায় পর্যন্ত সবাইকে সম্পন্ন করতে হবে এবং মুড়ি বইগুলো ফেরত দিতে হবে। এর পরে আমরা আবার নতুনভাবে টিম করে দেবে ৮টা বিভাগের জন্য। প্রতি জেলা-উপজেলায় আমরা আওয়ামী লীগের অফিস করে দিতে চাই। প্রত্যেকে যে পারবেন নিজেরা করবেন। আর যার যতটুকু সহযোগিতা লাগবে আমরা কেন্দ্র থেকে দরকার হলে করব কিন্তু একটা অফিস থাকা দরকার। এখন ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি। সারা বাংলাদেশেই এখন অনলাইনে যোগাযোগ করার সুযোগ আছে। আমাদের আওয়ামী লীগ পিছিয়ে থাকবে কেন! যদিও পিছিয়ে নেই, এখন হচ্ছে। একটা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে চাই। যেন জেলা-উপজেলার সঙ্গে কেন্দ্রে যোগাযোগটা থাকে।
শেখ হাসিনা বলেন, কেউ যদি খুব স্বাধীনচেতা হয় তাহলে অনেকেই তাদের পছন্দ করে না। অনেক বড় বড় দেশ, আমাদের স্বাধীনতার বিরোধীরা কখনো এটা পছন্দ করবে না। কিন্তু আমাদের জনগণকে যদি আমরা ঠিক রাখতে পারি; বাংলাদেশের উন্নয়ন, বাংলাদেশের মানুষের উন্নতি এটা কেউ আটকাতে পারবে না। যেটা জাতির পিতা বলে গিয়েছিলেন কেউ দাবায় রাখতে পারবা না, সেটা পারবে না। কাজেই এটা আপনারা সবাই সব সময় মাথায় রেখেই সংগঠনটির ওপর বেশি গুরুত্ব দেবেন এবং সংগঠনকে শক্তিশালী করবেন এটাই আমার অনুরোধ।
তিনি করোনা মহামারী, রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ, নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধজ্ঞার কারণে যে কোন অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি এড়াতে উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষে দেশের প্রতি ইঞ্চি আবাদী জমি ব্যাবহারের ওপর আবারো গুরুত্বারোপ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এসব কারণে অর্থনৈতিক মন্দা বিশ্বকে গ্রাস করছে। অনেক ধনী দেশ ইতোমধ্যে নিজেদের মন্দাক্রান্ত বলে ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশকে অবশ্যই সে ফাঁদে পড়া যাবে না। বরং আমরা যদি অতিরিক্ত খাদ্য উৎপাদন করতে পারি তাহলে নিজেদের প্রয়োজন মিটিয়েও বিভিন্ন দেশে তা রপ্তানী করতে পারি। শেখ হাসিনা বলেন, অনেক দেশ ইতোমধ্যে বাংলাদেশ থেকে খাদ্য আমদানির ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। আমাদের বিশেষ করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সেভাবেই কাজ করতে হবে।
##
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন