তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, পঞ্চগড়ে বিএনপির গণমিছিলের নিকটস্থলে আব্দুর রশিদের মৃত্যুর কারণ হৃদরোগ, পুলিশের আঘাত নয় এবং এটিকে কর্মীদের সংঘাতের দিকে ঠেলে দেয়াও বিএনপি নেতাদের সমীচীন নয়।
তিনি বলেন, ‘পঞ্চগড়ে শনিবার যে ব্যক্তি মারা গেছেন, তিনি বিএনপি করতেন এবং যে কোনো মৃত্যুই বেদনাদায়ক। সে জন্য আমি তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। তবে তার মৃত্যুটা পুলিশের সাথে সংঘর্ষের কারণে নয়।
তিনি হৃদরোগী ছিলেন, তার বাইপাস সার্জারি হয়েছিল। তিনি বিএনপির মিছিলে এসেছিলেন বটে কিন্তু পুলিশের সাথে ঘটনা শুরু হওয়ার আগেই তিনি একটি মসজিদের সামনে অসুস্থ হয়ে মাটিতে পড়ে যান এবং হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’
আজ সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে এ সম্পর্কিত প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘গতকাল ময়নাতদন্তের রিপোর্ট বেরিয়েছে, তার মৃত্যু হার্ট এটাকেই হয়েছে তা বেরিয়ে এসেছে। তবে বিএনপি তাদের কর্মীদেরকে সবসময় সংঘাতের দিতে ঠেলে দেয়, যা সমীচীন নয়। এই সাংঘর্ষিক রাজনীতি দেশের কোনো কল্যাণ বয়ে আনে না, তাদের দলের জন্যও এ পর্যন্ত কল্যাণ বয়ে আনেনি। এই সাংঘর্ষিক রাজনীতি বিএনপির পরিহার করা উচিত।’
বিএনপি বারবার বলছে এই সরকারের অধিনে নির্বাচনে অংশ নেবে না -এ প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার নির্বাচন আয়োজন করে না। নির্বাচন আয়োজন করে নির্বাচন কমিশন। যখন তফসিল ঘোষণা করা হয়, তখন সরকারের একজন টিএনও, ওসি বদলী করার মতো ক্ষমতা থাকে না। আমরা চাই, দেশে অংশগ্রহণমূলক সুষ্ঠু, সুন্দর নির্বাচনের মাধ্যমে আমাদের গণতন্ত্র শক্তিশালী হোক। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য তারা গণতন্ত্রকে বিশ্বাস করে না। তাদের জন্মটাই তো অগণতান্ত্রিকভাবে। তারা জানে, জনগণের কাছ থেকে তারা অনেক দূরে সরে গেছে। সে জন্য নির্বাচন নিয়ে তাদের এতো ভয়। তবে তাদের এই ভীতি দূর করার দায়িত্ব আওয়ামী লীগের বা সরকারের নয়।’
তিনি বলেন, ‘আমরা তো ২০১৪ সালেও চেয়েছিলাম বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক, তারা অংশ না নিয়ে নির্বাচন প্রতিহত করার পথ বেছে নিয়েছিল এবং পাঁচশ’ ভোট কেন্দ্র জ্বালিয়ে দিয়েছিল। প্রিজাইডিং অফিসারকে পর্যন্ত হত্যা করেছিল, পুলিশ তো আছেই। ২০১৮ সালে তারা নির্বাচনে করবে কি করবে না সেই দ্বিধাদ্বন্দ্বে ছিলো, শেষ মুহূর্তে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে এবং ফলাফল আপনারা জানেন, সর্বসাকুল্যে মহিলা আসনসহ ৭টি আসন।’
সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চাই বিএনপি পূর্ণ শক্তি নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক এবং একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হোক এবং সেই নির্বাচনের মাধ্যমে আগামীর সরকার গঠিত হোক। আমরা ওয়াক-ওভার চাই না, আমরা খেলে জিততে চাই। আমাদের টিম অনেক শক্তিশালী। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, তারা যদি নির্বাচনের মাঠে আসে তাদেরকে আমরা ভালোভাবে পরাজিত করে ২০১৮ সালের মতো ধস নামানো বিজয় অর্জন করতে পারবো।’
আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ প্রশ্নে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘রাজনীতিতে সবসময় চ্যালেঞ্জ থাকে। রাজনীতির মাঠ হচ্ছে উজান ঠেলে, প্রতিবন্ধকতা উপড়ে ফেলে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া। আমাদের সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ আছে, বিএনপির অপরাজনীতি একটা চ্যালেঞ্জ, বিএনপি নানা কুশীলবদের সাথে নিয়ে দেশবিরোধী যে অপতৎপরতা আন্তর্জাতিকভাবে, দেশীয়ভাবে যে অপতৎরতা চালাচ্ছে সেটি একটি চ্যালেঞ্জ। সমস্ত চ্যালেঞ্জকে আমরা মোকাবিলা করে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। তারা কি করতে চায় আমরা জানি এবং সেটি মোকাবিলা করতে কি করতে হবে সেটাও আমরা জানি।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন